মহামারীতে সময়মতো কর না দিলেও দণ্ড নেই

মহামারী, যুদ্ধ বা দুর্যোগের কারণে সময়মতো আয়কর দিতে না পারলে করদাতাকে জরিমানা ও সুদ আরোপের মতো শাস্তি পেতে হবে না; রাজস্বহানির জন্য আয়কর কর্তৃপক্ষকেও দায় নিতে হবে না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2020, 11:40 AM
Updated : 7 May 2020, 11:44 AM

এমন বিধান রেখে তৈরি আয়কর অধ্যাদেশের সংশোধনীর খসড়া বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্যামেরার মাধ্যমে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ওই ব্রিফিংয়ে অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের সরবরাহ করে।

ঢাকার বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে আয়কর মেলায় করদাতাদের ভিড়। ফাইল ছবি

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনে নতুন একটি ধারা (১৮৪জি) যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সময় গণনার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদনক্রমে সবাইকে একটা অব্যাহতি দিতে হবে। যদি এটা না দিত তবে জরিমানা এবং সুদারোপের বিধান ছিল, এজন্য আইনটা আনা হয়েছে।

“বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষিত হওয়ায় গত ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত আয়কর বিভাগের সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে ইতোমধ্যে করদাতারা এবং আয়কর কর্তৃপক্ষও ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের কতিপয় ধারার বিধান অনুযায়ী কার্যক্রম পরিপালন ও গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

“এই ব্যর্থতার কারণে করদাতাদের উপর জরিমানা ও সুদ আরোপের এবং আয়কর কর্তৃপক্ষের ক্ষেত্রে সময় অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে রাজস্বহানির দায় আরোপের আইনগত সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।”

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই জরিমানা ও সুদ এবং দায় আরোপের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষের কোনো ধরনের ব্যক্তিগত সংশ্লেষ বা অবহেলা না থাকায় শুধু উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এই ধরনের আইনগত দায় সৃষ্টি হওয়ায় তা মওকুফের জন্য করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন ‘এপিডেমিক’, ‘পেনডেমিক’, ‘ওয়ার অ্যান্ড এনি আদার অ্যাক্ট অব গড’ উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-তে একটি নতুন ধারা ১৮৪জি সংযোজন করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

“আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর যেসব ধারার বিধান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিপালন করতে হবে সেসব ধারার বিধান পূরণে ওই সময় পরিগণনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ধারা অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মহামারিজনিত বা অন্য কোনো নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত সময় বাদ দিতে বা প্রমার্জন করতে বা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পরিপালনের জন্য সময় বর্ধিত করতে পারবে।”

বর্তমানে সংসদ চালু না থাকায় আইন মন্ত্রণালয় ‘আয়কর (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০ এর খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে অধ্যাদেশ আকারে জারি করবে। সংসদ বসার প্রথম দিনই এটি সেখানে উপস্থাপিত হবে।