ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নিয়ে ৭ দিনের মেলা

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অর্থায়নে সৃষ্ট ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া সরাসরি নিজেরাই বিক্রির উদ্দেশ্যে অংশ নিচ্ছে ঢাকায় আয়োজিত এক মেলায়। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 11:54 AM
Updated : 11 Nov 2019, 11:54 AM

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ মেলার উদ্বোধন করবেন।

পিকেএসএফের ঋণ সুবিধা প্রসঙ্গে খলীকুজ্জমান বলেন, “দেশের দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের দারিদ্র্যসীমার ওপরে তুলতে আগে পিকেএসএফ শুধুমাত্র ৩ বছর মেয়াদের ঋণ বিতরণ করতো। কিস্তির মাধ্যমে আবার সেই ঋণ আদায় করা হতো।

“ওই ঋণে গ্রহীতার কোনো লাভ হলো কি না তার হিসাব ছিল না। দেখা গেছে, ঋণ গ্রহীতা ওই তিন বছর পর আবারও আস্তে আস্তে পিছিয়ে পড়ে।“

তিনি বলেন, “এখন আমরা সেই দরিদ্র মানুষগুলোকে শুধুমাত্র ঋণ না দিয়ে বহুমাত্রিক সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে দারিদ্র্য সীমার উপরে টেনে তুলতে উপযুক্ত ঋণ দিচ্ছি।”

একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তার উপযুক্ত একটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে ঋণ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

যাতে প্রাপ্ত অর্থে ওই ব্যক্তি কিছু উৎপাদন করতে পারেন। আর এসব ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দশ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে পিকেএসএফ।

পিকেএসএফ চেয়ারম্যান বলেন, “প্রতিবন্ধী, দলিত, মুচি, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, বেদে এবং হাওড় অঞ্চলসহ ১৬টি দরিদ্র প্রবণ গোষ্ঠীকে টার্গেট করে আমাদের এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা ছোট ছোট প্রায় ১৫ লাখ উদ্যোক্তা সৃষ্টি করেছি।

এসব উদ্যোক্তারা এখন গরু-ছাগল পালন করছেন। আবার কেউ তাঁত বা বেনারসিসহ নানা রকমের কাপড় বুনে থাকেন। অনেকে আবার নানা রকম ফলের উৎপাদন করে বাজারজাত করছেন বলে জানায় পিকেএসএফ।

খলীকুজ্জমান বলেন, “হতদরিদ্র মানুষগুলো এখন নিজস্ব পণ্য উৎপাদন করার সুযোগ পেয়ে তারা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছে যে ‘আমরাও পারি’।

“এই আত্মবিশ্বাস তাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আমরা এই কর্মসূচি শুরু করেছিলাম।”

তিনি বলেন, এসব উদ্যোক্তাদের পণ্য কোনো রকম মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই ন্যায্য মূল্যে বিক্রি ও প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

সাত দিনব্যাপী এ মেলায় অংশ নিচ্ছে ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ১৯০টি স্টল। দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন বিনা টিকেটে সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে মেলার প্রদর্শনী ও বিক্রয়।

এসব উদ্যোক্তাদের পণ্যের মানোন্নয়ন করে ভবিষ্যতে রপ্তানির জন্যও পিকেএসএফ কাজ শুরু করবে বলেও জানান খলীকুজ্জমান।

সংবাদ সম্মেলনে পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেন, মেলার সেমিনার পর্বে দারিদ্র্য বিমোচন ও উদ্যোক্তাদের পণ্য বাজারজাতকরণ প্রসঙ্গে পাওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে কাজ করবে পিকেএসএফ।