তথ্য-প্রযুক্তি খাতের ফ্রিল্যান্সাররা আগামী বছরের শুরতেই রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
Published : 26 Oct 2019, 10:28 PM
তিনি বলেছেন, “সরকার আইটি ফ্রিল্যান্সারদের রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ কাজটি এখন প্রায় শেষের দিকে। আগামী বছরের জানুয়ারিতেই শুরু হবে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার কাজ।রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে তাদের আর কোথাও বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।”
শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে ‘দ্য রোল অব মিডিয়া ইন প্রমোটিং এসএমই ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন সালমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক যুবক ফ্রিল্যান্স বা আউটসোর্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। কিন্তু স্বীকৃতি না থাকায় সমাজে তাদের মর্যাদা দেওয়া হয় না।
“বিয়ের বাজার থেকে শুরু করে শিশুকে স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে নানা বিপত্তিতে পড়েন তারা। রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে তাদের আর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।
“রেজিস্ট্রেশন কার্ড থাকলেই তার টাকা উঠাতে ব্যাংক কোনো প্রশ্ন করবে না। এ সনদ দিয়েই তারা অন্যান্য কাজ সহজেই করতে পারবেন।”
ইআরএফ এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন-বিসিক এ কর্মশালার আয়োজন করে।
সালমান এফ রহমান বলেন, “বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পাওয়ায় আমি আইসিটি প্রতিমন্ত্রীসহ বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করলাম। এরপর আমরা ফ্রিল্যান্সারদের একটি ডেটাবেজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এ ডেটাবেজের কাজ শেষ পর্যায়ে। এ কাজ শেষ হলেই প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হবে।”
আরেক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “অন্য একজন একদিন আমাকে বলল, আমি ফ্রিল্যান্স করে অনেক টাকা আয় করি। কিন্তু বিয়ের কথা বলতে গেলে মেয়ের বাবা জানতে চায়, আমি কী করি। বাসায় বসে অনলাইনে কাজ করি বললে মেয়ের বাবা বিষয়টা বুঝতে পারে না। তাই তার মেয়েকে বিয়ে দিতে চায় না। ওই যুবক ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি চান।
“তখনই আমরা তাদের জন্য একটা কিছু করার উদ্যোগ নিলাম।”
সালমান এফ রহমান বলেন, “ডেটাবেজ শুরুর আগে আমাদের ধারণা ছিল, দেশে হয়ত দুই-এক লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে দেখলাম ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ছয় লাখেরও বেশি। এবং এরা প্রতি বছর প্রচুর বিদেশি মুদ্রা দেশে আনছে।”
তিনি বলেন, দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের (এসএমই) বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে অনুকূল পরিবেশ জরুরি। আর এই পরিবেশ তৈরি করতেই কাজ করছে সরকার।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান।
ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে শিল্প সচিব আব্দুল হালিম, বিসিকের চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফার্স্ট সেক্রেটারি ম্যানফ্রেড ফ্রেনহোলজ এবং ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।