কৃষকদের ৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার সুপারিশ সিপিডির

ধানের কম দামে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে ৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2019, 11:49 AM
Updated : 11 June 2019, 11:49 AM

কার্ডধারী প্রতি কৃষকের অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা করে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে তারা।

এটা করা না হলে কৃষকরা এবার যে ক্ষতির মুখে পড়েছে তা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে বলে মনে করছে বেসরকারি সংস্থাটি।

এবার বোরো মওসুমে বাজারে ধানের দাম রয়েছে ৫০০-৬০০ টাকা, যেখানে ধান কাটার জন্য একজন শ্রমিককে মজুরি দিতে হচ্ছে তার চেয়ে বেশি। ধানের দাম নিয়ে ক্ষোভ থেকে পাকা ধানের মাঠে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে কোথাও কোথাও।

মঙ্গলবার সিরডাপ মিলনায়তনে সিপিডি আয়োজিত ‘জাতীয় অর্থনীতির পর্যালোচনা ও আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গ’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষকের এই অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তাদের ভর্তুকি দেওয়ার ওই প্রস্তাব করা হয়।

কৃষকদের প্রতি সাম্প্রতিককালে ‘অন্যায় আচরণ’ করা হয়েছে মন্তব্য করে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “শিল্প ও কৃষির ভেতরে যে বাণিজ্য শর্ত থাকে, সে শর্ত কৃষকের বিপরীতে গেছে। অর্থাৎ গ্রামীণ অর্থনীতি থেকে উদ্বৃত্ত শহরে চলে গেছে, আর শহর থেকে এটি বিদেশে চলে যাচ্ছে। উদ্বৃত্ত সঞ্চালনের এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের কৃষকের পক্ষে আগামী দিনে টিকে থাকা খুবই জটিল হবে।”

এবার ধান-চালের দাম নিয়ে কৃষকের সমস্যাটি স্পষ্ট হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার সময়মতো চাল আমদানি বন্ধ করেনি, ঠিকমতো সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রাও দেয়নি।

“রপ্তানির বিষয়টি যদি উঠে থাকে তাহলে সময়মতো তা হয়নি, আমদানি শুল্ক অনেক দেরি করে আরোপ করা হয়েছে। এক ধরনের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার এমন প্রকট চিত্র কোনো খাতে এমনভাবে নেই, যতখানি কৃষকের সাথে করা হয়েছে এ বছর।”

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কার্ডধারী এক কোটি ৮০ লাখ কৃষক আছে তাদের কাছে ৫ হাজার টাকা করে ফ্লাট রেটে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। এর অর্থের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে দশ হাজার কোটি টাকার নীচে, ৯ হাজার ১০০ কোটি।

“এটার ফলে যা হয় ২২ মণ ধানের ভর্তুকি আসে গড়ে, ছোট বড় নির্বিশেষে দিতে বলেছি। এ ৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা অর্থনৈতিকভাবে যুক্তিযুক্ত ও সাম্যভিত্তিক হবে বলে মনে করি। যখন কোন রপ্তানি শিল্পের পক্ষ থেকে ঢালাওভাবে ৫ শতাংশ প্রনোদনা চায় তার পরিমাণ আসে ১৫ হাজার কোটি বা ২০ হাজার কোটি টাকা চায় সেখানে কৃষককে ৯ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কোনো সমস্যা দেখি না। এবার যদি কৃষককে ভর্তুকি না দেয় এক ধরনের সমর্থন না দেওয়া হয় আগামী দিনে কৃষিক্ষেত্রে সমস্যা হবে।”