২ ডিসেম্বর সরকারের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে ১৬ লাখ ৯১ হাজার ৬১০ জন করদাতা রিটার্ন জমা দিয়ে এ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেছেন। ৩ লাখ ১৫ হাজার ১০৫ জন পরে রিটার্ন জমা দেবেন বলে সংশ্লিষ্ট কর অফিসের কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন।
যারা সময় চেয়ে আবেদন করেছেন তাদেরও রিটার্ন দাখিলকারী করদাতা হিসেবে বিবেচনা করে এনবিআর।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এনবিআরের সদস্য (কর প্রশাসন) জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, “যারা ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা দেননি অথবা সময় চেয়ে আবেদন করেননি তারা এখন জারিমানা দিয়ে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। আমরা আশা করছি, এবার জরিমানা দিয়ে রিটার্ন জমার পরিমাণ ২ লাখের বেশি হবে।”
সবমিলিয়ে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ২২ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান এই কর কর্মকর্তা।।
এবার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে ব্যক্তি করদাতাদের কাছ থেকে আয়কর আদায় হয়েছে ৫ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে আদায়ের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা।
এ হিসাবে এক বছরে আয়কর আদায় বেড়েছে ২৭ শতাংশ। আর রিটার্ন দাখিল বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
১৬ লাখ ই-টিআইএনধারী করের বাইরে!
তবে টিআইএনধারীর (কর শণাক্ত নম্বর) সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে সে হারে রিটার্ন জমা দেওয়া করদাতার সংখ্যা বাড়েনি।
গত বছর এই সময়ে দেশে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ ২৩ হাজার ৩০১ জন। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ লাখের উপরে। অর্থাৎ এক বছরে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৯ লাখ।
গত করবছরে সবমিলিয়ে ১৮ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জন টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল করেছিলেন।
জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “করদাতার সংখ্যা বাড়ায় আমরা খুশি। তবে বিপুল সংখ্যক টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল না করায় আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। টিআইএনধারীদের মধ্যে যারা রিটার্ন জমা দেননি বা সময় চেয়ে আবেদন করেন নি, তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করব আমরা।”
“আগামী মার্চের মধ্যে এই অনুসন্ধান শেষ করব। আশা করছি রিটার্ন জমা না দেওয়াদের মধ্য থেকে আরও সাত-আট লাখ ব্যক্তিকে করের আওতায় আনতে পারব।”
রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা গুণতে হবে
ই-টিআইএন থাকা সত্ত্বেও আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানা গুণতে হবে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণ না দেখাতে পারলে পূর্ববর্তী কর বছরে নির্ধারণ হওয়া আয়করের ১০ শতাংশ জরিমানা গুণতে হবে। তবে এটি এক হাজার টাকার কম হতে পারবে না।এর সঙ্গে প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা হিসাব করতে হবে। এ দুটির যোগফল ও ১০ শতাংশের মধ্যে যেটি বেশি, তা হবে ব্যক্তির জরিমানা।
এবার আয়কর মেলায় সবমিলিয়ে আড়াই হাজার কোটি টাকার কর আদায় হয়েছে। রিটার্ন জমা পড়েছে প্রায় পাঁচ লাখ। কর সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন ১৬ লাখের বেশি মানুষ।
এবারের মেলায় গতবারের মেলার চেয়ে করের পরিমাণ বেড়েছে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। রিটার্ন জমা বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। আর সেবার গ্রহনের পরিমাণ বেড়েছে ৪ শতাংশ।
১৩ থেকে ১৯ নভেম্বর সারা দেশে সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়।