সোমবার জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস বিল, ২০১৮’ পাস হয়েছে।
বিলটির ওপর বিরোধীদলীয় সাংসদদের দেওয়া একাধিক সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কন্ঠভোটে নিষ্পত্তি করা হয়।
জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব দিয়ে জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, “এর নাম ওয়ান স্টপ সার্ভিসের পরিবর্তে ‘ওয়ান স্টপ ঘুষ’ রাখতে ভাল হত। ২৭টি স্থানে ঘুষ দিতে হবে। ঘুষের মহোৎসব চালু হবে।”
বিলটি পাসের বিরোধীতা করে তিনি বলেন, “বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি অফিসগুলোতে প্রতিনিয়ত ঘুষ লেনদেন হচ্ছে।”
একই ঘটনা এখানেও ঘটার আশঙ্কা করেন তিনি।
এর আগে, বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন সংসদ কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
গত বছরের ৮ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটির খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন পায়।
এরপর ১১ সেপ্টেম্বর সংসদে বিলটি উত্থাপণ করার পরে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
আইনে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বিনিয়োগকারীদের প্রস্তাবিত কোনো প্রকল্প বা উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো সুবিধা, প্রণোদনা, লাইসেন্স, অনুমতি, ছাড়পত্র বা পারমিট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করতে একজন মন্ত্রীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে বিলে। সরকার প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিতকরণ কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করতে পারবে। কমিটির কার্যপরিধিও প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত হবে।
বিলে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন অর্পিত দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো আবেদন নিষ্পত্তি করতে না পারলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে।’
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ‘কেন্দ্রীয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
২৭ ধরনের সেবা এক জায়গা থেকেই যাতে পাওয়া যায়, সে সুযোগ রাখা হয়েছে আইনে।
ফলে কোনো বিনিয়োগকারীকে প্রাথমিক অনুমোদন ও অন্যান্য অনুষ্ঠানিকতার জন্য আর বিভিন্ন অফিসে ঘুরতে হবে না। যে কোনো জায়গায় বসে অনলাইনেই স্বল্পতম সময়ে সেবা পাওয়া যাবে এবং নতুন ব্যবসা শুরুর জটিলতা অনেকাংশে লাঘব হবে। বিনিয়োগকারীদের কোন সেবা কত দিনের মধ্যে দিতে হবে তা বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে।