‘ঋণ হস্তান্তর ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বাড়াবে’

হস্তান্তরিত ঋণ ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বাড়াবে বলে অধিকাংশ ব্যাংকার মনে করেন বলে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2017, 05:38 PM
Updated : 23 Nov 2017, 05:56 PM

বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম)  ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হস্তান্তরিত ঋণ ইতোমধ্যে ব্যাংক খাতে ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে ৪০ শতাংশ ব্যাংকার মনে করে। আর ৫০ শতাংশ ব্যাংকার মনে করেন হস্তান্তরিত ঋণ নিকট ভবিষ্যতে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘লোন টেকওভার ইন বাংলাদেশ: ইজ ইট এ হেলদি  প্রাকটিস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

এতে বলা হয়, এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের গ্রাহকের ঋণ ক্রয় বা টেক ওভার (ঋণ হস্তান্তরের) করছে। গত জুন পর্যন্ত চার হাজার ৩৩৯ কোটি টাকার ঋণ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটছে। একে কেন্দ্র করে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে।

“অনেকাংশে গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়ে পড়ছে।”

ঋণ হস্তান্তরের উপর গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা। চার সদস্যের গবেষক দলে আরও ছিলেন বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক মো. মহব্বত হোসেন, প্রভাষক তোফায়েল আহমেদ ও রাহাত বানু।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬০ শতাংশ ব্যাংকার বলেছেন, পরিচালনা পর্ষদের অযৌক্তিক চাপে ঋণ হস্তান্তরে ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। ঋণ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়া হয় বলে ৫ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন।

প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর বিআইবিএমের চেয়ার অধ্যাপক খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, “রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তরা এখন ব্যাংকিং খাতে ঢুকে পড়েছে।  একটি ব্যাংকে গত তিন বছরে তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন নয় মাস যাবৎ কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

“দুই থেকে  চার লাখ টাকা দিলে এমডি পাওয়া যাবে কিন্তু ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্য লোক পাবেন না।”

সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত ইসলাম বলেন, ঋণ হস্তান্তরের অনেক খারাপ দৃষ্টান্ত আছে। কিছু গ্রাহক ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য সরকারি ব্যাংককে টার্গেট করে। তারা বিভিন্ন কায়দা-কানুন করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা আর পরিশোধ করেন না।

“ঋণ হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে তা ব্যাংক খাতের জন্য ক্ষতিকর। এটি বন্ধ করতে হবে। ঋণ হস্তান্তরে যে গ্রাহকের ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা ১০ কোটি টাকা তাকে ২০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে।”