ওজোপাডিকোর অনিয়মের ‘মূলে সিবিএ’

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে (ওজোপাডিকো) অনিয়ম, দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির জন্য সিবিএর ‘দৌরাত্ম্য’কে দায়ী করা হয়েছে গণশুনানিতে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2017, 12:54 PM
Updated : 3 Oct 2017, 03:11 PM

সঠিক গ্রাহক সেবা ও সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে চাইলে কয়েক বছরের জন্য সিবিএর এই ধারা বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন ভোক্তা সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম।

মঙ্গলবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিইআরসিতে ওজোপাডিকোর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে গণশুনানিতে কর্মচারী ইউনিয়ন বা সিবিএর প্রসঙ্গটি আসে।

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা শহর ও ২০টি উপজেলা শহরে বিদ্যুৎ বিতরণে ওজোপাডিকো গঠিত হয় ২০০৫ সালের নভেম্বরে। কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় খুলনায়, গ্রাহক সংখ্যা ৯ লাখ ২৬ হাজার।

ভোক্তাদের পক্ষে শুনানিতে শামসুল আলম বলেন, সিবিএর ‘নেতিবাচক কাজে’ ওজোপাডিকোসহ অধিকাংশ বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিতে অচলাবস্থা চলছে।

“সিবিএ নেতাদর ৫০ শতাংশই দাপ্তরিক কোনো কাজ করেন না। তারা অন্য অদক্ষ লোক দিয়ে নিজের কাজ করানোর চেষ্টা করেন। তাদের মাধ্যমেই দুর্নীতিগুলো করান। কাজে গতিশীলতা আনতে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হলে সেখানে বাধা দেন। নিজেদের লোক নিয়োগ করাতে কর্মকর্তাদের বাধ্য করেন। বিদ্যুৎ অফিসে সাধারণ গ্রাহকের প্রবেশে বাধা দেন।”

সিবিএ নেতাদের কাছে বিদ্যুতের প্রকৌশলীরাও ‘জিম্মি হয়ে থাকে’ বলে দাবি করেন তিনি।

এসব অভিযোগ সঠিক কি না- জানতে চাইলে গণশুনানিতে ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন বলেন, “অনেকাংশেই সঠিক। তবে এর ৯০ শতাংশ সমস্যা কেটে গেছে।”

তখন ক্যাব প্রতিনিধি বলেন, “আপনার দৃষ্টি সীমিত, অথবা আপনি ভীত। সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। দয়া করে কমিশনের সঙ্গে আলাপ করে কিছুদিনের জন্য সিবিএ বন্ধ রাখুন। অন্যথায় সেখানে গ্রাহক সেবা কখনই নিশ্চিত করা যাবে না। উন্নয়ন কাজগুলো আগানো যাবে না।”

গণশুনানিতে জ্বালানি বিষয়ক সাময়িকী পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জির উপদেষ্টা সম্পাদক সালেক সুফিও বলেন, ট্রেড ইউনিয়নের জন্য অনেক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি সেই সঙ্গে বলেন, “ওজোপাডিকোর ১১ সদস্যের পরিচালনা বোর্ডে তিনজনই মন্ত্রণালয়ের। তারা ঢাকায় থাকেন, আর কর্মস্থল দক্ষিণবঙ্গে। এভাবেই সরকারি সেবা ব্যাহত হচ্ছে।”

প্রতি ইউনিটের দাম ১১ পয়সা বাড়াতে সুপারিশ

গণশুনানিতে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম ৩৮ পয়সা বা ১০ দশমিক ৩৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে আসে ওজোপাডিকো।

সেই প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ইউনিট প্রতি ১১ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।

ওজোপাডিকো জনবল বাবদ খরচ বেড়ে যাওয়াকে মৃল্য বৃদ্ধির মূল কারণ হিসাবে দেখিয়েছে।

গণশুনানিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে খরচ কমানোর উপায় বের করার পরামর্শ দেন।

মিটার, বিশেষ করে প্রি-পেইড মিটার নিয়ে গ্রাহক হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে তা বন্ধ করতে স্থানীয় পর্যায়ে গণশুনানি আয়োজনের সুপারিশ করেন তিনি।