সচিবালয়ে বুধবার চীনের পানিসম্পদমন্ত্রীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “গঙ্গা ব্যারেজ নিয়ে কোনো দ্বিমত নাই। গতকাল (মঙ্গলবার) প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু স্পষ্ট করে বলেছেন। গঙ্গা প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন নেই, ব্যারেজ প্রজেক্ট হবে… প্রশ্ন হচ্ছে নকশার, কোথায় হবে? কীভাবে হবে?
“সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অন্য অপশন কী কী আছে তা খুঁজতে হাই পাওয়ার টেকনিক্যাল কমিটি করা হবে।… পুনঃপরীক্ষা করব, অন্য কী কী উপায় আছে যাতে ভারত থেকে যে পানি পাচ্ছি সেটার সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারি।”
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমাদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় গঙ্গা ব্যারেজ নামে যে ব্যারেজের সমীক্ষা ও যে ডিজাইনটা তৈরি করেছে সেটা সম্পূর্ণ ভুল। এটা আমি নাকচ করে দিয়েছি। কারণ এটা আমাদর জন্য আরও আত্মঘাতী হবে, ওই তিস্তা ব্যারেজের মত আত্মঘাতী হবে।”
পদ্মায় বাঁধ দিয়ে গঙ্গা অববাহিকার পানি সংরক্ষণ করে তা কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবহারের লক্ষ্যে ১৯৬২-৬৩ সালে প্রথমবারের মত গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের বিষয়ে জরিপ হয়।
এরপর দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার সময়ে গঙ্গার পানিবণ্টনে ভারতের সঙ্গে চুক্তির পর ব্যারেজ নির্মাণের আলোচনা আবার জোর পায়।
ওই ব্যারেজের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ২০০৫ সালে কাজ শুরুর পর ২০১৩ সালে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়। পরের বছর ভারতকে ওই প্রকল্পের সারসংক্ষেপও হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু সেই নকশা ‘পছন্দ হয়নি’ বলে মঙ্গলবার জানান প্রধানমন্ত্রী।
গঙ্গা ব্যারেজের নকশার ভুল নিয়ে এক প্রশ্নে পানিসম্পদমন্ত্রী বলেন, “না, এখানে কথা হচ্ছে… ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে আজ অনেক কথা উঠছে, সেই জিনিসগুলো যাতে আমাদের ক্ষেত্রে না হয়, পরে যেন কোনো রকম সমস্যায় না পড়ি, সেজন্য আমরা অন্যান্য অল্টারনেটিভস চাচ্ছি।”
“একটার পর একটা বাঁধ হয়েছে, প্রকল্প হয়েছে। এগুলোর কনসেপ্টগুলো বদলাচ্ছে, পাল্টাচ্ছে। সুতারাং আমরা মনে করি- উই শুড বি ওপেন, যাতে আমরা পরে কোনো সমস্যায় না পড়ি… সেজন্য অন্য কী অপশন আছে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি।”
পাংশার প্রকল্প বন্ধ কি না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “প্রস্তাবিত যে প্রোজেক্ট আছে, সেটা ডেফিনেটলি আপাতত বন্ধ, এটা পরিত্যক্ত বলতে পারেন।”