রোববার বিকালে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘এনজিও এবং উন্নয়ন’ শীর্ষক ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “এনজিওগুলোর সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক এখনও অস্বস্তিকর সহ-অবস্থানের মতো। তবে আমি মনে করি এটাকে স্বস্তিকর সহাবস্থানে নিয়ে যাওয়া উচিত।”
দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জন্ম নিয়ন্ত্রণ, মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বাড়ানোয় এনজিওগুলো ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন অর্থনীতির এই অধ্যাপক।
এনজিওগুলো গরিব মানুষের জন্য কাজ করেছে মন্তব্য করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “এক সময় নারীরা মোটরসাইকেলে চড়তে পারত না, স্কুল-কলেজে যেতে পারত না, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে অনীহা ছিল। ব্র্যাকসহ বিভিন্ন এনজিও’র কাজের কারণে এসব ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন এসেছে।
ক্রমশ এনজিওগুলোর বিদেশি সহায়তা কমছে জানিয়ে সভার বক্তারা বলেন, এই সময়ে সরকারের সঙ্গে সংস্থাগুলোর সহযোগিতা আরও গভীর হওয়ার দরকার।
বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে উন্নীতের যে লক্ষ্য নিয়েছে তা অর্জনে সহায়তার লক্ষ্যে এনজিওগুলোর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা দরকার বলেও অভিমত দেন তারা।
অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলোর একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, “ইচ্ছা করলে প্রধানমন্ত্রী এসডিজি বাস্তবায়নের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে।”
‘ব্র্যাক ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মূল উপস্থাপনায় ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল বায়েস বলেন, “প্রায় ১৮ লাখ পরিবার ব্র্যাকের সহায়তায় অতি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। আর তাদের ৯০ শতাংশেরই স্থায়ী উন্নয়ন ঘটেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা এ পর্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৩০ লাখ মানুষের জন্য নিরাপদ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছি, দেশব্যাপী ৫ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপনে প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং ৩ কোটি খানায় স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা সরবরাহ করেছি।”
বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ ঋণগ্রহীতাকে ব্র্যাক ক্ষুদ্রঋণ দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অতি দারিদ্র্য বিমোচন, প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিমান বৃদ্ধি, যুবকদের জন্য কর্মপ্রশিক্ষণ ও নারীর ক্ষমতায়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচিগুলোকে ঢেলে সাজাচ্ছে ব্র্যাক।”
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ডা. মুহাম্মাদ মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস আর ওসমানি।