কাটছাঁট হচ্ছে এডিপি

বরাবরের মতোই কাটছাঁট হচ্ছে এডিপিতে, এবার ঘোষিত অঙ্ক থেকে তা ৬ শতাংশ কমতে যাচ্ছে।

জাফর আহমেদ নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2017, 04:52 PM
Updated : 27 Feb 2017, 04:52 PM

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

বরাবর শেষ পর্যন্ত এডিপিতে কাটছাঁট হলেও এবার শতভাগ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

কিন্তু সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি নিজেই জানান, এডিপির শতভাগ অর্জিত হবে না।

এজন্য অর্থবছরের শুরুতে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা চালিয়ে বিদেশিদের হত্যা করাকে কারণ দেখান মন্ত্রী।

মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের আগেই এডিপি ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকায় সংশোধনের প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

গত বৃহস্পতিবার মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের এক বর্ধিত সভায় এ প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ওই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের ওই কর্মকর্তা বলেন, সংশোধিত এডিপিতে স্থানীয় মুদ্রার জোগান ধরা হচ্ছে ৭১ হাজার ২০০ কোটি টাকা, বৈদেশিক মুদ্রার জোগান ধরা হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

মুল এডিপিতে স্থানীয় মুদ্রার জোগান ধরা হয়েছিল ৭০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, বৈদেশিক মুদ্রার জোগান ধরা হয়েছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা।

সংশোধনী প্রস্তাবে স্থানীয় মুদ্রা এক হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে; আর বৈদেশিক মুদ্রার জোগানে ৭ হাজার কোটি টাকা কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মুস্তফা কামাল বলেন, গুলশান হামলার পর কয়েক মাস বিদেশিরা না থাকায় মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কয়েক মাস বন্ধ থাকার কারণে বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যয় কম হয়েছে।

সংশোধিত প্রস্তাবে সর্বোচ্চ প্রায় ২৫ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বা ২৪ ভাগ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিবহণ খাতের জন্য।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতের জন্য।

শিক্ষা খাতের জন্য করা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বা ১২ শতাংশ। বিদ্যুৎখাতের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ১২ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা।

পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

কৃষি খাতে প্রায় ৫ হাজার ১৮১ কোটি টাকা এবং স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে ৪ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা।

এবারের সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দসহ মোট প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৪১৫টি। এরমধ্যে ১ হাজার ২৫৫টি বিনিয়োগ, ১৫৪টি কারিগরি এবং জাপানি ঋণ মওকুফ তহবিলের জন্য ৬টি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে মুল এডিপির প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। এ ব্যয় মোট বরাদ্দের ৩২ শতাংশের কিছু বেশি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের এ বাস্তবায়ন গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ পয়েন্ট বেশি।