হলি আর্টিজানের খাঁড়া এডিপিতে

এবার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন শতভাগ হবে না স্বীকার করে সেজন্য হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকে কারণ দেখিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2017, 01:49 PM
Updated : 27 Feb 2017, 04:52 PM

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

বরাবরই শেষ সময়ে এডিপি কাটছাঁট করা হয়। তবে মন্ত্রী মুস্তফা কামাল এবার শতভাগ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়ে এলেও সোমবার তা থেকে পিছু হটার কথা জানান।

নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে বিদেশিদের উপর হামলার পর প্রায় সব বিদেশি চলে গিয়েছিল। এরপর সরকার নানা উদ্যোগ নিয়ে তাদের ফিরিয়ে আনলেও বেশ কয়েক মাস কাজ বন্ধ থাকায় মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়ে।

“এর ফলে এবার শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।”

পাশাপাশি গুলশান হামলার পর প্রত্যেক বড় প্রকল্পের নিরাপত্তা বাড়ানোয় খরচও বেড়ে গেছে বলে জানান তিনি।

ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এডিপি বাস্তবায়ন শেষ পর্যন্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় বেশি হবে বলে মনে করেন মুস্তফা কামাল।

গত জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৩২ শতাংশের কিছু বেশি, যা তার আগের অর্থবছর ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (ফাইল ছবি)

মুস্তফা কামাল বলেন, কয়েক মাস বিদেশিরা না থাকায় মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কয়েক মাস বন্ধ থাকার কারণে বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যয় কম হয়েছে।

“পাইপলাইনের অর্থ ব্যয়ের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে বিদেশিরা,” বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরের শুরুতে পাইপলাইনের আকার ছিল ২১৮৭ কোটি ডলার।

“তা চলতি অর্থবছর শেষে নিশ্চিতভাবে অনেক বেড়ে যাবে। কারণ এবারও বৈদেশিক সহায়তার বিপুল অর্থ অব্যয়িত থেকে যাবে। ফলে বাড়বে পাইপলাইনের আকার,” বলেন মন্ত্রী।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে প্রতি বছর বিদেশিদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় বেড়েছে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ১৪৬৭ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায় হয়েছে। যেখানে ২০০৮-০৯ অর্থবছরেও প্রতিশ্রুতি ছিল মাত্র ২২৬ কোটি ডলার।

প্রতিশ্রুত বৈদেশিক সহায়তার ছাড়ও বেড়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে এক বছরে মাত্র ১৭৯ কোটি ডলার ছাড় হয়েছিল, সেখানে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৫৩ কোটি ডলার।

মুস্তফা কামাল বলেন, “পাইপলাইন বড় হলেও বিদেশিদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় কমানো যাবে না। কারণ ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের ২৪ হাজার ও ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে।

“ভবিষ্যতে সরাসরি বিদেশিদের বিনিয়োগের মাধ্যমেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চাই। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য খাতেও বিনিয়োগের গতি বাড়াতে হবে।”