টিআইবি বলছে, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে রাজস্ব নিরূপণের যথার্থতা নিরীক্ষার সুযোগ না রাখার ফলে “পুরো সরকারি রাজস্ব নিরূপণ ও আদায় সংক্রান্ত বিষয় জবাবদিহির বাইরে থেকে যাবে।"
Published : 24 Mar 2025, 05:54 PM
পাবলিক অডিট বিল-২০২৪ খসড়ায় ‘রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়ের নিরীক্ষা’ এবং সিএজি কার্যালয়ের ‘প্রাধান্য ও কার্যকরতা’ নিশ্চিতের বিধান অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি।
টিআইবির পক্ষ থেকে এ সুপারিশমালা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবেচনার জন্য পাঠানোর কথা বলা হয়েছে সংস্থার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
সেখানে বলা হয়, টিআইবির সুপারিশ মূলত- জাতীয় রাজস্ব ও প্রাপ্তির নিরীক্ষার এখতিয়ার, নিরীক্ষাধীন সকল প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর দায় ও জবাবদিহি, সিএজির নিজস্ব জনবল নিয়োগের এখতিয়ার এবং বিধি প্রণয়নের বিষয়ে।
“অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান, একটি দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মধ্যে আবদ্ধ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়” পাবলিক অডিট বিল-২০২৪ এর খসড়া চূড়ান্ত করার উদ্যোগের সমালোচনা করে ‘জনস্বার্থে’ সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিলটি উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছিল টিআইবি।
এরপর খসড়া অধ্যাদেশটি টিআইবির হাতে আসে এবং তার ওপর টিআইবি পাঁচটি সুপারিশ করছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
সরকারের প্রাপ্য সকল রাজস্ব ও প্রাপ্তি আইন, বিধি ও পদ্ধতি অনুযায়ী যথাযথভাবে নিরূপণ ও আদায় এবং সঠিকভাবে জমা ও হিসাবভুক্ত হয়েছে কি-না, তা যাতে মহাহিসাব নিরীক্ষক অডিট করতে পারেন, সেজন্য একটি বিধান যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে টিআইবির সুপারিশে।
তাছাড়া নিরীক্ষাধীন প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা যাতে দায়বদ্ধ থাকেন, তা নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়েছে।
মহা হিসাব নিরীক্ষক গঠিত স্বতন্ত্র তদারকি কমিটিতে সংশ্লিষ্ট খাতের নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছে টিআইবি।
সুপারিশে বলা হয়েছে, এই স্বতন্ত্র তদারকি কমিটি জাতীয় সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিকে প্রতিবেদন দেবে এবং তা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
টিআইবি এমন বিধান চায়, যাতে মহা হিসাব নিরীক্ষক তার কার্যালয়ের সকল জনবল নিয়োগ দিতে পারেন এবং এ অফিস নিজস্ব মানবসম্পদ নীতিমালা অনুসারে পরিচালিত হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে রাজস্ব নিরূপণের যথার্থতা নিরীক্ষার সুযোগ না রাখার ফলে “পুরো সরকারি রাজস্ব নিরূপণ ও আদায় সংক্রান্ত বিষয় জবাবদিহির বাইরে থেকে যাবে।"
উচ্চ আদালতের সংশ্লিষ্ট রায়, সংশ্লিষ্ট আইন ও আন্তর্জাতিক চর্চার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, "বাংলাদেশে কর ফাঁকির অন্যতম উপায় কর কর্মকর্তাদের একাংশের সঙ্গে অসাধু করদাতাদের যোগসাজসের মাধ্যমে প্রতারণামূলক রাজস্ব নিরূপণ, যার অসংখ্য দৃষ্টান্ত বিভিন্ন সময়ে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রকাশিত হয়েছে। যা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে, বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাতের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির অন্যতম কারণ যোগসাজসের করফাঁকি।
"এ থেকে উত্তরণের জন্য রাজস্ব নিরুপণ নিরীক্ষাভুক্ত করা অপরিহার্য। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো প্রকার অনৈতিক চাহিদা বা চাপের প্রতি নতি স্বীকার না করে এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।"