চট্টগ্রামে জেএমবি কমান্ডার এরশাদের ২০ বছর সাজা

মামলার অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2023, 07:45 AM
Updated : 9 May 2023, 07:45 AM

আট বছর আগের বিস্ফোরক আইনের এক মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) নেতা এরশাদ হোসাইনকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।  

চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্তি মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁঞা মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলার অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেন তিনি। 

দণ্ডিত এরশাদ হোসাইন ওরফে মামুন দিনাজপুর জেলার সরকারপাড়া গ্রামের মো. রিয়াজুল ইসলামের ছেলে। তিনি জেএমবির চট্টগ্রাম জেলার কমান্ডার ছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য। 

আর খালাস পাওয়া তিনজন হলেন- গাইবান্ধা জেলার তুলশীপাড়ার আক্তার হোসেন সরকারের ছেলে বুলবুল আহমেদ সরকার ওরফে ফুয়াদ, ঝিনাইদহ জেলার কোট চাঁদপুরের মমিনুল ইসলামের ছেলে মো. সুজন এবং চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী থানার ইছানগর এলাকার আব্দুল গণির ছেলে মাহাবুবুর রহমান ওরফে খোকন। 

রায় ঘোষণার সময় বিচারক শরীফুল আলম ভুঁঞা সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণে বলেন, "অভিযোগ ছিল ১ জনের বিরুদ্ধে যে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হয়। জেএমবি সদস্যদের অবস্থানের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।  

"আসামি এরশাদ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। ধৃত আসামির জবানবন্দি সত্য ও স্বেচ্ছায় বলে প্রমাণিত। জবানবন্দি ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিস্ফোরক আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এবং যেহেতু জেএমবি নিষিদ্ধ ও জনজীবনের জন্য হুমকি, তাই তাকে ২০ বছর সশ্রম এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ১ বছরের সাজা দেওয়া হল।" 

অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয়নি, তাদের কাছ থেকে কোনো বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি এবং ঘটনাস্থলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাই বুলবুল, মাহবু্ব ও সুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়ার কথা জানান বিচারক।  

এর আগে গত ১১ এপ্রিল যুক্তি-তর্ক শুনানি শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার তারিখ রাখে আদালত। সেদিন যুক্তি-তর্ক শুনানিতে নিজেদের নিদোর্ষ দাবি করেছিল আসামিরা।  

মামলার নথির বরাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. নোমান চৌধুরী জানান, ২০১৫ সালের ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানার মীর আউলিয়ার মাজার সড়কের এনআর স্টিল মিলের সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ।  

ওই বাসা থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, বইসহ এরশাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযানের সময়ে অন্য আসামিরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় আকবর শাহ থানায় এসআই শহিদুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন।  

২০১৫ সালের শেষের দিকে নগরের কর্ণফুলী থানায় এক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বুলবুলসহ অন্য তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের আকবর শাহ থানার এই বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।  

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আকবর শাহ থানার এসআই মোহাম্মদ সোলায়মান ২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল চারজনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে আদালত তাদের বিচার শুরুর আদেশ দেয়।