বন্দর নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন থেকে নিউমার্কেট মোড় পর্যন্ত এলাকার ফুটপাত পুনর্দখল ঠেকাতে ফের অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)।
রোববার সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের নিজস্ব স্ট্রাইকিং ফোর্স এই অভিযানে অংশ নেয়।
চট্টগ্রাম মহানগরীর ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি অভিযান শুরু করে সিটি করপোরেশন।
অভিযানের চারদিনের মাথায় ১২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় দখল ঠেকাতে অভিযানে গেলে পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় হকাররা। এসময় পুলিশ ও করপোরেশনের কর্মীসহ ১৫ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় প্রতিষ্ঠানটির বেশকিছু যানবাহন।
ওই ঘটনায় সিটি করপোরেশন হকার নেতাদের আসামি করে মামলাও করে। এরপর কিছুদিন ফুটপাত পুরো দখলমুক্ত ছিল।
তারপর গত সপ্তাহে আবারও নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাত ও সড়কে হকাররা ভাসমান দোকান বসাতে শুরু করে।
বুধবারের অভিযান সম্পর্কে সিসিসির বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজন জানান, “পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে নিউমার্কেট মোড় পর্যন্ত পুনর্দখল ঠেকাতে অভিযানে চালিয়ে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করা হকারদের সরিয়ে দিয়েছি আমরা।
“ফুটপাত দখল করে বসানো দোকানের অস্থায়ী চৌকি, টুল ইত্যাদি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে এবং দখলকারী কিছু ব্যক্তির মালামালও জব্দ করেছি। সিটি করপোরেশনের লক্ষ্য হচ্ছে, ফুটপাত-সড়ক আমরা দখল হতে দেব না। পুরো শহরের সব ফুটপাত-সড়কই আমাদের কার্যক্রমের আওতায় আসবে।”
ফুটপাত ও সড়ক পুনর্দখল ঠেকাতে মনিটরিং চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
বুধবারের অভিযানে অংশ নেন সিসিসির প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমি, তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম, চৈতী সর্ববিদ্যা এবং শাহরীন ফেরদৌসী।
অভিযানে ২০০ পুলিশ, ১৬ জন র্যাব এবং সিসিসির স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৪০ জন সদস্য এবং সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি অভিযান শুরুর পর থেকে এর বিরোধীতা করে আসছে হকার সংগঠনের নেতারা।
হকারদের পাঁচটি সংগঠনের নেতারা ফেব্রুয়ারিতে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে উচ্ছেদের আগে তাদের পুনর্বাসনের দাবি জানায়। তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানান মাহতাব।
এরপর নগরীর বিএনপির শীর্ষ নেতারা বিবৃতি দিয়ে হকার পুনর্বাসনের দাবি জানায়।
এদিকে দখলমুক্ত হওয়া নিউ মার্কেট ও আশেপাশের এলাকায় নালা পরিষ্কার, ফুটপাত সংস্কার, ফুটপাতে টাইলস বসানো ও সড়কের পাশে খালি জায়গায় বড় আকারের গাছের টব নির্মাণের কাজ শুরু করেছে নগর সংস্থা।
ইতোমধ্যে একাধিকবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নিজের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
সবশেষ ৪ মার্চ আগ্রাবাদ বাণিজ্য এলাকা ও আশেপাশের পুরো এলাকার ফুটপাত ও সড়ক তার নির্দেশে দখলমুক্ত করা হয়।
ইতিমধ্যে চলতি সপ্তাহে নগরীর আগ্রাবাদ, রেল স্টেশন ও বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় হকারদের জন্য তিনটি পৃথক হলিডে মার্কেট চালুর ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র। সেখানে সড়ক ও ফুটপাত থেকে উচ্ছেদ করা হকারদের পুনর্বাসন করা হবে বলে জানান তিনি।
পুরনো খবর