বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুন ধরে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
Published : 15 Apr 2024, 09:52 PM
চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি বাজারের টেকপাড়া বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি সেখানে যান।
মেয়র রেজাউল বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের কথা জানার সাথে সাথে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে উদ্ধার কার্যক্রম তরান্বিত করতে সমন্বয় করছি৷
“অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে তিন হাজার টাকার নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে৷ পুরুষদের লুঙ্গি ও নারীদের শাড়ি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সোমবার রাত এবং মঙ্গলবার দুপুর ও রাতের খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে৷ ক্ষতিগ্রস্ত ঘর পুননির্মাণে টিন দেয়া হবে৷"
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তিনজন কাউন্সিলরের তত্ত্বাবধানে পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিষ্কার করতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
এসময় কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, পুলক খাস্তগীর ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর বেগম লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী, নগর সংস্থার প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমিসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন৷
বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুন
সোমবার বেলা ১টার দিকে নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার এলাকায় মেরিনার্স সড়কের পাশে টেকপাড়া ও এয়াকুব নগর বস্তিতে আগুন লাগে।
আগুন লাগার পরপর দূর থেকে ওই এলাকায় কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছিল।
বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। চারটি স্টেশনের নয়টি ইউনিট নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
কর্ণফুলী নদীর অদূরে মরিয়ম বিবি খাল ঘেষে টেকপাড়া জেলে বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানায়।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।
“বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরোপুরি নির্বাপণ হয় বেলা ৪টার দিকে। আগুনে কেউ আহত হয়নি।"
আগুনে বস্তির ৮০টি টিনশেড ও কাঁচা ঘর, একটি চারতলা ভবনের ৭টি বাসা, একটি অস্থায়ী মন্দির ও একটি দোকান পুড়ে গেছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা।
এর আগে বিকেলে স্থানীয় ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগুন লাগার খবর পেয়ে সাথে সাথে ছুটে এসেছি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এটা টেকপাড়া বস্তি এবং এয়াকুব নগরের পিছনের অংশ জুড়ে কিছু ঘর আছে। সেগুলোতেও আগুন লেগেছে।
“এখানে প্রায় দুইশ পরিবারের বসবাস। কারো ঘর পুড়েছে, কারো আসবাবপত্র, কারো স্বর্ণালংকার, কারো বইপত্র পুড়ে গেছে। কম-বেশি সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তালিকা করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করব।"
টেকপাড়া জেলে বস্তির বাসিন্দা রাধা রানী দাস দুপুরে আগুন লাগার পর এক কাপড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান।
রাধা রানী দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এক ঘরে দুই পরিবারের মোট ছয়জন থাকি। আগুন লাগার পর লোকজন চিৎকার করে বলছে, আগুন লাগছে।
"এটুক শুনে এক কাপড়ে প্রাণ বাঁচাতে ঘর থেকে বের হয়ে গেছি। আমাদের সব পুড়ে গেছে। কিছু অবশিষ্ট নেই।"