চট্টগ্রামে ট্রেন সূচিতে গড়বড় তৃতীয় দিনে

স্টেশন মাস্টার আশা করছেন, বুধবার থেকে নির্ধারিত সময়েই চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে ট্রেনগুলো।

কুমিল্লায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পড়ার জেরে চট্টগ্রাম থেকে রেলের সূচি বিপর্যয় তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে।

রোববার রাতে তূর্ণা এক্সপ্রেস আড়াই ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ার পর সোমবার ঈদ যাত্রার প্রথমদিন সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস দেড় ঘণ্টা এবং ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস ৪৫ মিনিট দেরিতে চট্টগ্রাম ছাড়ে।

আর ঢাকামুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ছয় ঘণ্টা দেরিতে সোমবার রাত ১১টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। বিজয় ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি মঙ্গলবার সকালেও দেরিতে ছেড়েছে।

রোববার সন্ধ্যায় কুমিল্লার হাসানপুরে ওই দুর্ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত সাতটি ট্রেন বিলম্বিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস রোববার সন্ধ্যায় কুমিল্লার হাসানপুর স্টেশনে একটি মালবাহী ট্রেনকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। তাতে ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে যায়। আহত হন অন্তত পঞ্চাশ যাত্রী।

ওই দুর্ঘটনার কারণে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঢাকা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও চাঁদপুরের ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।

এরপর দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কোচ মেরামতের জন্য সোম ও মঙ্গলবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রা বন্ধ থাকবে বলে জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয়। বুধবার থেকে আবার এই রুটে ট্রেনটি যথারীতি চলাচল করার কথা।

কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে সোনার বাংলার যাত্রা বাতিল করা হয়নি। হাসানপুরের দুর্ঘটনায় ট্রেনটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নতুন ১৬টি বগি নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সোনার বাংলা নামেই ট্রেন চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

সোমবার বিকেল ৫টায় ট্রেনটি ছাড়ার কথা থাকলেও দফায় দফায় যাত্রা পেছানো হয়, তাতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। শেষ পর্যন্ত ট্রেনটি ছেড়ে যায় রাত ১১টা ১০ মিনিটে।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার জাফর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা সম্পূর্ণ নতুন ট্রেন। ১৬টি নতুন বগিতে যাত্রী নিয়ে ট্রেন ছেড়ে গেছে। দেরি হলেও বেশিরভাগ যাত্রীই সোনার বাংলায় ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। আশা করি আজ সঠিক সময়ে ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাবে।”

তবে সোমবারের মত মঙ্গলবার সকালেও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে দেরিতে ছেড়েছে বিজয় এক্সপ্রেস ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস।

পাহাড়িকা এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ২০ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর ৯টায় এ ট্রেন যাত্রী নিয়ে স্টেশন ছাড়ে।

আর ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস সকাল ৯টার পরিবর্তে স্টেশন ছাড়ে সকাল সাড়ে ১০টায়। তীব্র গরমে এ দুই ট্রেনের অপেক্ষমান যাত্রীদের হাঁসফাঁস করতে দেখা যায়।

জানতে চাইলে স্টেশনের মাস্টার জাফর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি দূরপাল্লার। সেটি বিলম্বে এসেছে। আসার পর ডক ইয়ার্ডে নিয়ে চেক করতে কিছু সময় লেগেছে। পাহাড়িকাও দেরিতে এসেছে।

“রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে এ দুটো ট্রেনে একটু সমস্যা হচ্ছে। আশা করি বুধবার থেকে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যেতে পারবে। অন্য ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে।”

চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন গন্তব্যে দিনে ১৫টি আন্তঃনগর ট্রেন ছেড়ে যায়।