মেয়র বলেন, বাস্তবে সিডিএর প্রকল্পের কোনো সুফল এসেছে বলে নগরবাসী মনে করে না।
Published : 28 Aug 2023, 07:54 PM
জলাবদ্ধতায় নগরবাসী আর কষ্ট পেতে চায় না মন্তব্য করে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ পরিষদের ৩১তম সাধারণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাধারণ সভায় কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর নগরীতে চলতি মাসে বারবার জলাবদ্ধতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চলতি মাসের শুরুতে টানা চারদিন এবং সবশেষ রোববার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ছিল জলাবদ্ধ। রোববার বিকালে নগরীর হালিশহর রঙ্গীপাড়া এলাকায় একটি বড় নালায় পড়ে দুই বছরের শিশু ইয়াসিন আরাফাত নিখোঁজ হয়। সোমবার তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
সোমবারের সাধারণ সভায় মেয়র রেজাউল বলেন, “জলাবদ্ধতা হলেই নগরবাসী মেয়র ও কাউন্সিলরদের দায় দেন। কারণ আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়ায় মানুষ আমাদের চেনে। অথচ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের দায়িত্বে নেই।
“জলাবদ্ধতা নিয়ে আমরা একাধিক সমন্বয় সভা করেছি। সভায় সিডিএর যখন যে প্রতিনিধি আসেন, দ্রুততম সময়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। তবে বাস্তবে সিডিএর প্রকল্পের কোনো সুফল এসেছে বলে নগরবাসী মনে করে না।”
মেয়র বলেন, “কাউকে দোষারোপ করি না, শুধু সিডিএকে বলতে চাই নগরবাসী আর কষ্ট পেতে চায় না। আপনারা জনগণের মতামতকে মূল্যায়ন করে, জনপ্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শক্রমে দ্রুততম সময়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সম্পন্ন করুন।”
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে টানা অতি ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারে নগরীর বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেলে তখন পরস্পরের প্রতি দোষারোপের আঙ্গুল তুলেছিল সিডিএ ও সিটি করপোরেশন। পরে এক সমন্বয় সভা করে একযোগে কাজের ঘোষণাও দেন মেয়র।
এরপর সোমবার আবারও জলাবদ্ধতা ইস্যুতে সরব হলেন মেয়র রেজাউল।
সোমবারের সভায় মেয়র রেজাউল কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বলেন, “কাউন্সিলররা স্ব-স্ব এলাকায় চলমান প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকৌশল বিভাগ থেকে সংগ্রহ করে ঠিকাদাররা কাজ ঠিকমতো করছে কিনা তা যাচাই করবেন।
“শীতকাল আসছে, মশার প্রাদুর্ভাব বাড়বে। মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম ওয়ার্ড পর্যায়ে মনিটরিং করবেন। এছাড়া যেসব ওয়ার্ডে পাহাড় আছে সেসব ওয়ার্ডে পাহাড়ের পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের পাহাড়ধ্স থেকে বাঁচাতে কাউন্সিলরদের ভূমিকা রাখতে হবে।”
পরিচ্ছন্ন বিভাগের কোনো কর্মীর অবহেলার প্রমাণ পেলে কাউন্সিলররা জানালে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “ড্রেনগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা একটি টিম গঠন করা হবে।”
মেয়র রেজাউল বলেন, “কর্ণফুলী টানেল, নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগান্তকারী আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পসহ চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কারণে চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
“তবে আমাদের সামনে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া জনসংখ্যা আর জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে ঘিরে বাংলাদেশের ভাগ্যবদলের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তা বাস্তবায়নে সবগুলো সরকারি সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে।”
সভায় সিসিসির প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, পুলিশের সাথে পরামর্শক্রমে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহ চিহ্নিত করে নীতিমালা প্রণয়ন করে দ্রুততম সময়ে পে-পার্কিং চালু করার প্রস্তুতি চলছে।
সভায় সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, কাউন্সিলর, বিভিন্ন বিভাগ ও শাখা প্রধান এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।