“আমি যেহেতু একটি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাই আমি তদন্ত করলে তা বিতর্কিত হতে পারে।”
Published : 22 Dec 2024, 01:05 AM
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতা ঘটনা তদন্তে গঠিত আইনজীবী সমিতির কমিটির চার সদস্য সরে দাঁড়ানোর পর এবার আহ্বায়কও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।
যুক্তি হিসেবে আহ্বায়ক আবদুস ছাত্তার বলেন, "ওই ঘটনার একাধিক মামলা পুলিশ তদন্ত করছে। আমি যেহেতু একটি দলে সম্পৃক্ত, তাই আমি তদন্ত করলে তা বিতর্কিত হতে পারে।
"সব বিবেচনায়, এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমি চিঠিতে মতামত দিয়েছি।"
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "১০ ডিসেম্বর চিঠি পাওয়ার পর সদস্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করি কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা করে কর্মপন্থা ঠিক করার জন্য।
“কিন্তু একদিন পরই তিন সদস্য পদত্যাগ করেন। এরপর সদস্য সচিবও পদত্যাগ করেন। তখন আমি বিষয়টি পর্যালোচনা করলাম। তারপর সমিতিকে চিঠি দিয়ে কিছু বিষয় উল্লেখ প্রস্তাব দিয়েছি।"
২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করেন তার অনুসারীরা।
আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।
ওই দিনের ঘটনা তদন্তে গত ৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় দিন সময় দেওয়া হয়।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিএনপিপন্থি আইনজীবী আবদুস ছাত্তারকে। সদস্য সচিব করা হয় আরেক বিএনপিপন্থি আইনজীবী ও সমিতির বর্তমান কমিটির এজিএস কাশেম কামালকে।
কমিটির সদস্য ছিলেন আইনজীবী জাফর ইকবাল, মো. মাঈনুদ্দিন সোহেল ও মো. ইবনু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির এক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কমিটি গঠনের বিষয়টি ১১ ডিসেম্বর জানতে পারি। হাতে সময় ছিল মাত্র ৩ দিন। এছাড়া ওই ঘটনায় ছয়টি মামলা পুলিশ তদন্ত করছে।
“সেখানে আমরা কোনো প্রতিবেদন দিলে তা সাংঘর্ষিক হতে পারে। এছাড়া পুলিশের তদন্ত চলমান থাকায় এই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের কোনো আইনি মূল্য নেই। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা পদত্যাগ করেছি।"
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "তদন্ত কমিটির চারজন ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। এরপর আহ্বায়ক অব্যাহতি চেয়েছেন।
"আহ্বায়ক চিঠিতে বলেছেন, যেহেতু আলিফ হত্যা জাতীয় ইস্যু, তাই তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রস্তাব করেছেন।"
সমিতির ২৬ ডিসেম্বরের কার্যকরী কমিটির সভায় তদন্ত কমিটির সদস্যদের পদত্যাগ ও আহ্বায়কের অব্যাহতি চাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে মন্তব্য করে নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, "সেখানে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হতে পারে।
“যেহেতু এটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, তাই একজন সাবেক বিচারপতি বা জেলা জজ মর্যাদার কাউকে দিয়ে এ তদন্ত কমিশন হতে পারে।"