সিআরবির বাইরে হাসপাতাল করতে চট্টগ্রামের জনপ্রতিনিধিদের চিঠি

রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে দেখা করে চট্টগ্রামের নেতারা এ সংক্রান্ত চিঠি দেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2022, 03:52 PM
Updated : 16 August 2022, 03:52 PM

সিআরবি ছাড়া রেলের অন্য কোনো জমিতে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে রেলমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা।

মঙ্গলবার রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে দেখা করে চট্টগ্রামের নেতারা একটি চিঠি দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন একটি অনুরোধপত্র দিয়েছেন। আমরা সবাই তাতে সম্মত হয়ে সাক্ষর করে সেটি দিয়েছি হাসপাতালটি স্থান পরিবর্তনের জন্য।

“চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের এটাই ছিল দাবি। আমাদের দলের নেতৃবৃন্দও এই আন্দোলনের সাথে ছিলেন। আমরা এটার সাথে একমত। সাধারণ মানুষের দাবিটা আমরা কনভে করেছি।”

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকালে ফেইসবুকে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন।

তিনি লেখেন, “চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ঐতিহাসিক সিআরবি এলাকায় পিপিপি’র আওতায় হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পটি রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি কর্তৃক সীতাকুণ্ডের কুমিরায় স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়ায় রেলপথমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে চট্টগ্রামের সকল এমপিদের স্বাক্ষরযুক্ত একটি অভিনন্দনপত্র রেলভবনে জমা দেন।”

চিঠিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন ও সর্বস্তরের মানুষের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সিআরবি পরিবর্তে রেলের অন্য জায়গায় হাসপাতালটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নে রেলমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান নেতারা।

চিঠিতে সিআরবির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শতবর্ষী বৃক্ষরাজি এবং সেখানে ১১ জন শহীদের সমাধি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, সিডিএ প্রণীত ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে এটিকে কালচারাল হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে ৮টি নির্দেশনার উল্লেখ রয়েছে।

এসব নির্দেশনা অনুসারে সিআরবিতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাবে না। শুধু পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পাখির অভয়ারণ্য, জাদুঘর, প্রজাপ্রতি উদ্যান প্রতিষ্ঠা করা যাবে। সব কিছু মিলিয়ে সিআরবি এখন চট্টগ্রামের সব মানুষের আবেগ ও ভালোবাসার জায়গায় পরিণত হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করে চলমান আন্দোলনের মধ্যে বিকল্প স্থান নিয়ে চলতি বছরের মে মাসে আলোচনা হয় রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে।

পূর্ব রেলের সদর দপ্তর সিআরবির পরিবর্তে হাসপাতালটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরায় রেলওয়ের বন্ধ হয়ে যাওয়া যক্ষ্মা হাসপাতাল এলাকায় হতে পারে বলেও বৈঠকে মত আসে।

চট্টগ্রাম নগরীর ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিতি ঐতিহ্যবাহী সিআরবিতে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য ২০২০ সালের ১৮ মার্চ ইউনাইটেড গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে রেলওয়ে।

গত বছরের শুরুতে নির্ধারিত জমির সামনে প্রকল্পের একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়। জুলাই মাসে প্রকল্প এলাকার জমি হাসপাতাল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়।

এ প্রকল্পের পরিকল্পনা ও সহযোগী সংস্থা বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষ (পিপিপি)। কার্যনির্বাহী সংস্থা বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং বাস্তবায়ন ও পরিচালনা করবে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম হাসপাতাল লিমিটেড।