অর্থদণ্ডের টাকা আদায়ের পর তা শিশুটির বাবাকে দিতে বলা হয়েছে।
Published : 05 Oct 2023, 11:30 PM
চট্টগ্রামে এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। ওই মামলার দুই ধারাতেই তাদের এ সাজা দেওয়া হয়েছে। বুধবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত মো. জীবন (২৫) ও ইমন হাসান (২৬) কারাগারে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তারা নগরীর বহদ্দারহাট লোহা কলোনির বাসিন্দা। এদের মধ্যে জীবন নগরীর বাদুরতলার নঈমী মার্কেটে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং তার বন্ধু ইমন মাছ কাটার কাজ করতেন।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আরিফুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (৩) ধারা অনুসারে দুই আসামিকেই আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে মোট ছয় লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
“পাশাপাশি ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের দুজনকেই আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে মোট আরও ছয় লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ডের টাকা আসামিদের কাছ থেকে আদায়ের পর তা শিশুটির বাবাকে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে আদেশে।”
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুন দুপুরে কিছু কেনাকাটার জন্য নগরীর বাদুরতলা এলাকার শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটির জাকির হোসেনের বাড়ির ভাড়া বাসা থেকে বের হয় মো. সোলাইমানের ৯ বছর বয়সী মেয়ে সালমা আক্তার। সালমা বহদ্দারহাটের একটি মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। বহদ্দারহাটের লোহা কলোনিতে প্রতিবেশী হওয়ায় জীবন শিশু সালমাকে চিনত।
এজাহারে অভিযো করা হয়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে ঘটনার দিন জীবন আগে থেকে তার বন্ধু ইমন হোসেনকে ডেকে আনে। পরে শিশু সালমাকে খেলনা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেয় জীবন। তারপর নঈমী মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিয়ে গিয়ে সালমাকে ধর্ষণ করে তারা দুজন। সালমা ধর্ষণের বিষয়ে তার বাবাকে বলে দেবে বলায় জীবন তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধরে এবং ইমন সালমার মুখ চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করে ওই ভবনে একটি কাঠের বাক্সের লুকিয়ে রাখে।
মেয়ের খোঁজ না পেয়ে ১৩ জুন পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন সালমার বাবা মো. সোলাইমান। সালমার সন্ধানে এলাকায় মাইকিং করা হয়। পরে সিসি ক্যামরার ফুটেজে সালমাকে নঈমী মার্কেটের পাশের একটি ভবনে প্রবেশ করতে দেখে পুলিশ। ২০১৭ সালের ১৪ জুন গভীর রাতে পুলিশ নঈমী মার্কেট থেকে সালমার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরে জীবন ও ইমনকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ তাদের দু’জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। রাষ্ট্রপক্ষের ১৫ জন এবং আসামি পক্ষে তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বুধবার এই রায় দেন।
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে: সেটির ফেইসবুক লিংক