চক্রটি গত ১০ দিনে চারটি মোরটসাইকেল চুরি করেছে বলে পুলিশের ভাষ্য।
Published : 07 Jun 2024, 10:08 PM
একজন অপহরণের মামলায়, আরেকজন মোটরসাইকেল চুরির মামলায় ছিলেন কারাগারে; সেখানেই দুজনের সখ্য থেকে জামিনে বের হয়ে গড়ে তোলেন মোটরসাইকেল চুরির চক্র।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় করা মোটরসাইকেল চুরির এক মামলায় তদন্তে নেমে চক্রটির সন্ধান মেলে, যারা গত ১০ দিনেই চারটি মোরটসাইকেল চুরি করেছে বলে পুলিশের ভাষ্য।
চট্টগ্রাম শহর, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার ওই চক্রের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে কোতোয়ালি থানার এসআই মোশারফ হোসেন জানান।
তারা হলেন- আবিদ হোসেন শ্রাবণ (২০), আজিজুর রহমান (২৪), মো. রাফি (৩১), আব্দুল্লাহ আল আবেদ ওরফে তুহিন (২৪), শাহাদাত হোসেন ওরফে খোকা (২৪) ও জমির হোসেন (২০)।
অভিযানে চারটি মোটরসাইকেল উদ্ধারের কথা জানিয়ে এসআই মোশারফ বলেন, “চক্রের হোতা শ্রাবণ। তিনিই মূলত মোটরসাইকেল চোর। মোটরসাইকেলগুলো তিনি আজিজ ও রাফিকে হস্তান্তর করেন। এজন্য তাকে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখা হয়।”
পুলিশ জানায়, শ্রাবণ নগরীর কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ার, বহদ্দারহাট, বন্দর ও আনোয়ারা উপজেলা থেকে গত ১০ দিনে চারটি মোটর সাইকেল চুরি করেন। সম্প্রতি কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ারের পার্কিং থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরির সূত্র ধরে শ্রাবণকে শনাক্ত করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর সিরাজউদ্দৌল্লাহ রোড থেকে একটি মোটরসাইকেলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসআই মোশারফ বলেন, শ্রাবণের দেওয়া তথ্যে পুলিশ কাজীর দেউড়ি এলাকা থেকে আজিজ ও রাফিকে আটক করে। এরপর রাউজানের নজু মিয়া হাট থেকে তুহিন ও খোকাকে আটকের পর রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মুরাদ নগর থেকে জমিরকে আটক ও তিনটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
শ্রাবণকে ‘পেশাদার চোর’ অ্যাখ্যা দিয়ে মোশারফ বলেন, “গত বছরের শেষ দিকে তিনি মোটরসাইকেল চুরির মামলায় এবং আজিজ অপহরণ মামলায় কারাগারে গিয়েছিলেন। সেখানে দুজনের মধ্যে সখ্য হয়।
“আজিজ কারাগারে থাকার সময় শ্রাবণকে আশ্বস্ত করেন, জেল থেকে বের হলে তিনি তার জামিনের ব্যবস্থা করবেন। দুই মাস আগে আজিজ জামিনে ছাড়া পেলে গত মাসের শেষ দিকে শ্রাবণেও ছাড়িয়ে নেন। জামিনের পর আজিজ ১০ হাজার টাকা শ্রাবণকে হাত খরচ দিয়ে চোরাই মোটরসাইকেল তাকে দেওয়ার কথা বলেন।”
এসআই মোশারফ বলেন, গত ১০ দিনে শ্রাবণ চারটি মোটরসাইকেল চুরি করে আজিজ ও তার বন্ধু রাফিকে দেন। মডেল ভেদে শ্রাবণের সঙ্গে আজিজ ও রাফির দাম নির্ধারণ হত ১৩ থেকে ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে তারা শ্রাবণকে ৮/১০ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা জামিনের খরচ বাবদ কেটে রাখতেন।
“মোটরসাইকেল আজিজ ও রাফিকে দেওয়ার পর সেটি তুহিনের মাধ্যমে চলে যেত রাউজান উপজেলায় খোকার কাছে। খোকা মোটরসাইকেল প্রতি ১০ হাজার টাকা লাভ রেখে রাঙ্গুনিয়ায় মুরাদ নামে আরেকজনের কাছে পাঠান।”
পুলিশ বলছে, মুরাদ মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন, চেসিস নম্বর মুছে পুরনো বলে সাধারণ লোকজনের কাছে বিক্রি করেন। গ্রেপ্তার ছয়জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলার পর শুক্রবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।