“পুরনো সিন্ডিকেটের বদলে আমরা নতুন সিন্ডিকেট চাই না,” বলেন তিনি।
Published : 05 Oct 2024, 10:30 PM
রাষ্ট্রের ‘প্রতিটি অঙ্গই’ কোনো না কোনভাবে ‘দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেছেন, “সামগ্রিকভাবে আমরা যে সমস্যার মোকাবেলা করছি তার আয়তন, তার ব্যাপ্তি ব্যাপক ও গভীর। তাই প্রতিটি মানুষের পরিবর্তনে অংশগ্রহণ থাকতে হবে।…প্রথম কথা হল, পুরনো সিন্ডিকেটের বদলে আমরা নতুন সিন্ডিকেট চাই না। এটা তো হতে পারে না যে, আমরা রাজনীতির বদল করলাম না, শুধু রাজার বদল করে ফেললাম। এটা তো হতে পারে না।
“যেহেতু যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের যে পরিবর্তনের চিন্তা, এই যে রাষ্ট্রের সংস্কারের চিন্তা…এটা হল সেটাই যে, আমরা এক অত্যাচারীর বদলে আরেক অত্যাচারী দিয়ে আমরা এটার বিকল্প হিসেবে দেখছি না।”
শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানির অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
দেবপ্রিয় বলেন, “দ্বিতীয় আরেকটা জিনিস বের হয়েছে, আপনারা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইন প্রণয়ন করার কথা তারা যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইনের সুরক্ষা দেওয়ার কথা, তারা যুক্ত হয়ে গেছে।
“যারা আইনকে প্রয়োগ করার কথা, তারা যুক্ত হয়ে গেছে এবং আইনকে যথাযথ জবাবদিহিতা ও নাগরিক সুবিধার ভেতরে রাখার জন্য যারা, তারাও যুক্ত হয়ে গেছেন। এমনকি যারা উর্দি পরেন, তারাও যুক্ত হয়ে গেছেন। এটা দিয়ে বুঝা যায় সামগ্রিকভাবে আমরা যে সমস্যার মোকাবিলা করছি তার আয়তন, তার ব্যাপ্তি কত ব্যাপক এবং গভীর।”
তিনি বলেন, “তাহলে প্রতিটি মানুষের এটা পরিবর্তনের জন্য অংশগ্রহণ থাকবে। কেউ আমাদের জন্য করে দিয়ে যাবে, এটা হবে না। আমাদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে আমাদের নাগরিক অধিকারকে আমাদের উসুল করে নিতে হবে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কর্মপরিধি নির্ধারণ করে কাজ করছে।
আলোচনায় ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মু. সিকান্দার খান, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক সদস্য জাফর আলম, প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বক্তব্য দেন।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অর্থনীতিবিদ এ কে এনামুল হক, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্ম শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।