চট্টগ্রামে রাতে ফের আ. লীগ- বিএনপি সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম নগরীর নূর মোহাম্মদ সড়কে আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুরের পর বিক্ষোভ মিছিল এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2021, 08:54 PM
Updated : 20 Jan 2021, 08:56 PM

বুধবার রাত ১০টার পর নগরীর নূর মোহাম্মদ সড়কে এসব ঘটনা ঘটে।

ওই সড়কে পুরাতন বিমান অফিসের পাশে নাসিমন ভবনে নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়। তার অদূরে রাবেয়া রহমান গলিতে আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প আছে, যেটি জামালখান ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন ও মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

রাত ১০টার পর রাবেয়া রহমান গলির ওই নির্বাচনী কার্যালয়টিতে হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ শৈবাল দাশ সুমনের।

এরপর জামালখান ও নন্দনকানন এলাকা থেকে ছাত্রলীগ কর্মী ও কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারীরা সেখানে ছুটে যান।

– চট্টগ্রাম নগরীর রাবেয়া রহমান গলিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন ও মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলার পর ছেঁড়া পোস্টার ও ভাঙা চেয়ার পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এক পর্যায়ে তারা নাসিমন ভবনের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে নাসিমন ভবনের সামনে মূল সড়কে বসে পড়েন।

এ সময় সেখানে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নাসিমন ভবন প্রাঙ্গণে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে তাদের পাল্টাপাল্টি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। তখন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

রাত ১১টার দিকে সেখানে অতিরিক্ত র‌্যাব-পুলিশের সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় কমপক্ষে চারকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি আওয়ামী লীগের।

– চট্টগ্রাম নগরীর রাবেয়া রহমান গলিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন ও মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলার পর ছেঁড়া পোস্টার ও ভাঙা চেয়ার পড়ে থাকতে দেখা যায়।

জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরীর এখানে একটি ক্যাম্প আছে। রাত ১০টার দিকে সন্ত্রাসীরা বিমান অফিস (এলাকা) থেকে এসে এখানে সরাসরি হামলা করে। এখানে আমাদের ১০-১৫ জন কর্মী ছিল। ওদের উপর অতর্কিত হামলা করেছে এবং ককটেল বিস্ফোরণ করেছে।

“যখন এখানে পাশে বিয়ে হচ্ছে সেখান থেকে লোকজন আসে তখন তারা মনে করেছে আমাদের কর্মী, পরে পালিয়ে যায়। আমাদের চারজন এখন আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে আছে। এখনও বিএনপি অফিস থেকে ইট-পাটকেল মারা হচ্ছে। ওখানে অস্ত্রসহ অনেকে অবস্থান করছে।”

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নাসিমন ভবনে অবস্থানকালে রাবেয়া রহমান গলির নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়।

নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুরের পর কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের অনুসারী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করলে নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবন এলাকায় র‌্যাব ও পুলিশের অবস্থান।

ঘটনার বিষয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রলীগের ছেলেরা এসে স্লোগান দিয়ে ককটেল নিক্ষেপ করে এবং ইট ছোঁড়ে। এতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থাকা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ি ভেঙেছে।

“তাদের নির্বাচনী ক্যাম্পে আমাদের কেউ যায়নি। নাসিমন ভবন আমাদের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়। তাই এখানে আমাদের ১০-১৫ জন নেতাকর্মী ছিল। ঘটনা শোনার পর আমি কার্যালয়ে যাই।”

নগরীর কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাবেয়া রহমান গলির নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাংচুরের ঘটনাকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। সেখানে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে।”

নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুরের পর কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের অনুসারী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করলে নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবন এলাকায় র‌্যাব ও পুলিশের অবস্থান।

নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ১০টার পর রাবেয়া রহমান গলির ওখানে কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থীর ক্যাম্পে হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন।

“এরপর উভয় পক্ষে ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ হয় বলে জেনেছি। এসে ককটেলের অংশ বিশেষ পেয়েছি। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।”

এর আগে বুধবার বিকেলে নগরীর বলিরহাটে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের পক্ষে ছাত্রলীগের প্রচারণার সময় যুবদলের মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ইট-পাটকেল ছোঁড়াছুড়িতে নাসিমন ভবন প্রাঙ্গণে থাকা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়িটি ভাঙে।

গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে ভোটের মাঠে উত্তাপ ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যকার বিরোধ থেকে।

প্রথম সপ্তাহের পর থেকে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় গাড়ি বহরে হামলা ও প্রচারণার কাজে ব্যবহৃত অটোরিকশা ভাংচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার মতো অভিযোগও আসতে থাকে।

সবশেষ বুধবার একই দিনে দুই দফায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।