দারিদ্র্য ও শত্রু বিনাশের বাসনা কুমারী পূজায়

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে ‘কালসন্দর্ভা’ নামে পূজিত হলো কুমারী রূপী দেবী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2020, 07:39 AM
Updated : 24 Oct 2020, 07:39 AM

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পাথরঘাটায় হরচন্দ্র মুন্সেফ লেনের ওই মন্দির প্রাঙ্গনে শ্যামল দাস মোহন্ত মহারাজের পৌরহিত্যে এই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

হিন্দু শাস্ত্রমতে, শারদীয় দুর্গা পূজার অষ্টমীর দিনে সাধারণত এক থেকে ষোল বছর বয়সী যে কোনো বর্নের ও গোত্রের কুমারীকে পূজা করা হয়।

শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে কুমারী পূজার ব্যবস্থাপনায় থাকা বলরাম দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিবারের মত এবারও আমরা কুমারী পূজার আয়োজন করেছি। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এবার ভক্ত সমাগম নিরুৎসাহিত করা হয়। যারাই এসেছেন সবাই মাস্ক পড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজায় অংশ নিয়েছেন।”

হিন্দু ধর্মীয় মতে, বয়স ভেদে কুমারীর নাম ভিন্ন হয়। এবার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নয় বছর বয়সী শ্রেয়া বিশ্বাস পূজিত হন ‘কালসন্দর্ভা’ নামে। শাস্ত্রমতে এই নামে কুমারী পূজিতা হলে দারিদ্র্য ও শত্রু বিনাশ হয়।

দুর্গাপূগজার মহাঅষ্টমীর দিন শনিবার অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা।  

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রেয়া বিশ্বাস তাথৈ নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড় এলাকার শ্যাম কুমার বিশ্বাস ও তনিমা বিশ্বাস টিনার মেয়ে।

কুমারী পূজার সময় ভক্তদের উদ্দেশে শ্যামল দাস মোহন্ত মহারাজ বলেন, “কুমারী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রতীক। দুর্গার আরেক নাম কুমারী। নারীর যথাযথ মর্যাদা অধিষ্ঠিত করতে কুমারী পূজা করা হয়। মাটির প্রতীমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তব রূপ কুমারী পূজা।

“কুমারী সমগ্র জগতের বাক্য ও বিদ্যাস্বরূপ। তিনি এক হাতে অভয় ও অন্য হাতে বর প্রদান করেন। কুমারীতে পবিত্রতা, সৃজনী, পালনী ও কল্যাণী শক্তি সূক্ষরূপে বিরাজিতা।”

কুমারী পূজায় পূজারী হিসেবে ছিলেন পণ্ডিত শম্ভু ভট্টাচার্য্য ও তন্ত্রধারে ছিলেন দেবব্রত নাথ জুয়েল। 

এর পাশাপাশি নগরীর প্রায় সবগুলো মণ্ডপে দুপুরের মধ্যে অষ্টমী পূজার অঞ্জলি দিয়েছেন ভক্তরা।

দুইদিন টানা বৃষ্টির পর শনিবার সকাল থেকে বন্দর নগরীতে বৃষ্টির তীব্রতা কমেছে। তাই নগরীর পূজা মণ্ডপগুলোতে আগের দিনের চেয়ে ভক্তদের ভিড় ছিল বেশি।

অষ্টমীর অঞ্জলীতে নগরীর জে এম সেন হলে শুক্রবারের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পূজার্থী ভিড় করেন। তবে নির্ধারিত স্থানে মাস্ক পড়ে বসেই পুষ্পাঞ্জলী দিতে হয়েছে। মণ্ডপ ঘিরে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত।