বিমান ছিনতাই তদন্তে কাউন্টার টেরোরিজম, খেলনা পিস্তল জব্দ

বিমান ছিনতায়ের ঘটনায় করা মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে; আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে খেলনা পিস্তলটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2019, 02:11 PM
Updated : 26 Feb 2019, 06:16 PM

রোববারের বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার সময় পলাশ আহমেদ কমান্ডো অভিযানে নিহত হওয়ার পর সোমবার তাকেসহ কয়েকজনকে আসামি করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় মামলা করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

মামলাটির তদন্তভার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট পেয়েছে বলে বলে মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান ইউনিটের উপ-কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ।

তিনি বলেন, “মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে ইতিমধ্যে পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়াকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। পাশাপাশি ঘটনার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।”

আলামত হিসেবে পলাশের সঙ্গে থাকা খেলনা পিস্তলটি জব্দ করা হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবার রহমান।

রোববার বিকালে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর পলাশ পিস্তল নিয়ে ক্রুদের জিম্মি করেন বলে জানানো হয়েছিল। সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে এই যুবক মারা যাওয়ার পর পিস্তলটি উদ্ধারের কথা জানান সেনা কর্মকর্তারা।

পরে পুলিশ কমিশনার মাহবুবার জানিয়েছিলেন, সেটি একটি খেলনা পিস্তল।

বেবিচকের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকারে করা মামলায় পলাশের হাতে অস্ত্র সদৃশ বস্তু থাকার কথা বলা হয়।

মামলা হওয়ার পর পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপর বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, বেবিচকের মামলায় পলাশ আহমেদের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামির তালিকায় রাখা হয়েছে।

এজাহারে পলাশের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “উক্ত আসামি তাহার সহযোগী অপরাপর অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহায়তায় উক্ত অপরাধ (বিমান ছিনতাই) সংঘটনের চেষ্টা করিয়াছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।”

অজ্ঞাতনামা এই আসামিদের ভূমিকার বিষয়ে এজাহারে আর কিছু বলা হয়নি।

এজাহারে আসামিদের অপরাধের বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, “পলাশ আহমেদ বিমানের পাইলট, কেবিন ক্রু ও যাত্রীদের অস্ত্র ও গোলাবারুদের হুমকি দিয়া জিম্মি করত আতঙ্ক সৃষ্টি করিয়া বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে।”

ওসি উৎপল বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৩ ও ৬ (১) ধারা এবং বিমান-নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইনের ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।

বিমান-নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইনের ১১ (২) ধারা অনুযায়ী কোনো বিমান উড্ডয়নে থাকাকালে বল প্রয়োগের মাধ্যমে বা ভীতি প্রদর্শন বা অন্য কোনো উপায়ে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দখলের চেষ্টা করলে তার শাস্তি কমপক্ষে ৫ বছর কারাদণ্ড, অনধিক ২০ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড।

আইনটির ১৩ (২) ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যদি বেআইনি ও ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বিমান উড্ডয়নে থাকাকালে সহিংস কাজ করেন, তাহলেও শাস্তি একই।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৩ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ৬ (১) ধারায়ও সর্বোচ্চ শাস্তি একই।

এই ঘটনা তদন্তে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।