বিমান ছিনতাইয়ে গিয়ে যুবক নিহত

হাতে ‘আগ্নেয়াস্ত্র’ আর শরীরে ‘বোমা’ পেঁচিয়ে একটি উড়োজাহাজে উঠে জিম্মি করার চেষ্টা চালানোর পর কমান্ডো অভিযানে মারা পড়লেন এক যুবক।

লিটন হায়দার মিন্টু চৌধুরী, গোলাম মুজতবা ধ্রুববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2019, 01:46 PM
Updated : 25 Feb 2019, 02:10 PM

ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বেড়াজাল ডিঙিয়ে অস্ত্র নিয়ে রোববার বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী ফ্লাইটে উঠে পড়েছিলেন ওই যুবক।

তিনি পাইলটের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তার ‘পারিবারিক সমস্যা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলেন বলে বিমানযাত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তা ঘিরে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পর অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডোরা।

কমান্ডো অভিযান শুরুর ৮ মিনিটের মধ্যে সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থার বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজটি মুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান।

রাত ৮টার দিকে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেছিলেন, ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীকে জখম অবস্থায় আটক করা হয়েছে।

তার পৌনে ১ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে এসে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জানান, আহত ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম ‘মাহাদী’ এবং তার বয়স ২৬/২৭ বছর- শুধু এতটুকুই বলতে পেরেছেন অভিযানে থাকা সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা। তার আর কোনো পরিচয় তারা দিতে পারেননি, পারেনি তার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও কিছু জানাতে।

ওই যুবকের কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয় বলে মেজর জেনারেল এস এম মতিউর জানিয়েছেন। তার গায়ে বোমার মতো তার জড়ানো ছিল বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান।

পরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তার কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে এটা ফেইক, খেলনা পিস্তল।”

একই কথা বলেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও।

জিম্মিদশার মধ্যে উড়োজাহাজের ইমারজেন্সি গেইট দিয়ে বেরিয়ে আসেন বিমানযাত্রীরা

অভিযানের আগেই বিমানের ১৪৮ জন যাত্রীর সবাই নিরাপদে নেমে আসেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আগেই জানিয়েছিলেন।

ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী যুবক সাগর নামে একজন ক্রুকে জিম্মি করেছিলেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, পাইলটসহ ক্রুদের সবাই অক্ষত আছেন।

এই ঘটনায় সন্ধ্যা পৌনে ৬টার পর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অভিযান শেষে রাত ৮টা থেকে বিমান ওঠানামা স্বাভাবিক বলে বেবিচক চেয়ারম্যান জানান।

দুই ঘণ্টার জিম্মি সঙ্কট অবসানের পর রাত ১০টা ২ মিনিটে শাহ আমানতে প্রথম বিমান অবতরণ করে। 

কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এই যুবক কী করে আন্তর্জাতিক একটি ফ্লাইটে উঠে পড়েছিলেন, তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে বেবিচক চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে।

মাঝ আকাশে ‘গুলি’

বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি রোববার বিকালে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়। এটির চট্টগ্রামে যাত্রা বিরতি দিয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল।

উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পর মাঝ আকাশে ওই যুবক যাত্রীদের দিকে পিস্তল তাক করে গুলি করার হুমকি দেন বলে জানিয়েছেন ওসমান গণি (৩৫) নামে এক যাত্রী।

বিমানযাত্রী ওসমান গনি বলছেন, মাঝআকাশে গুলিবর্ষণ করেছিলেন অস্ত্রধারী ওই যুবক

ওমান থেকে ঢাকায় নামার পর বিমানের ওই ফ্লাইটে চট্টগ্রামে যাচ্ছিলেন কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার বাসিন্দা এই ব্যক্তি।

ওসমান গণি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই ব্যক্তি পিস্তল নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের বলে, কেউ উঠে দাঁড়ালে বা নড়াচড়া করলে গুলি করা হবে। এসময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ওই ব্যক্তি কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে।”

ঘটনা শুরুর পরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “যতটুকু জানা গেছে, একজন সন্দেহভাজন পাইলটের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিল।”

পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইজি আকমল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর একজন যাত্রী ককপিটে ঢুকে পাইলটকে পিস্তল ধরে বলেছে, আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলিয়ে দিতে হবে। পাইলট ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চট্টগ্রামে অবতরণ করান।”

সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে বিমানটি শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণের পর তা ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী; বন্ধ হয়ে যায় বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিমানটির ইমার্জেন্সি গেইট খুলে দেওয়া হয়। যাত্রীদের দল বেঁধে সেখান দিয়ে নেমে আসছেন।

ওই সময় শাহ আমানত বিমানবন্দরে থাকা সংসদ সদস্য মইন উদ্দিন থান বাদল সময় টিভিকে বলেন, “পাইলট আমার সঙ্গে নেমে এসেছিল। সে বলেছে, তাকে পারসু করার চেষ্টা করেছে হাইজ্যাকার; বলছে সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়।”

তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, “সব যাত্রী নেমে গেছে। পাইলটও নেমে গেছে। এটা নিশ্চিত যে একজন সন্দেহভাজন বিমনটির ভেতরে এখনও অবস্থান করছে।”

অভিযানে অবসান সঙ্কটের

স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টার আগেই সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নোবাহিনী ও সোয়াট সদস্যরা অবস্থান নেয় বিমানবন্দরে। শুরু হয় জিম্মিদশা থেকে বিমানটিকে মুক্ত করার চেষ্টা।

আইএসপিআর’র পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কমান্ডোরা অভিযানে নেমেছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান নাঈম হাসান রাত ৮টায় ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করেছেন।

“উনার নির্দেশ মোতাবেক সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিমানবাহিনীর কমান্ডোরা অবস্থান নিয়েছে। সিনিয়র মোস্ট এয়ার কমান্ডার মফিদের নেতৃত্বে অভিযান হয়। নাম দেওয়া হয় কম্বিং অপারেশন। ৭টা ১৭ মিনিটে শুরু হয়, ৭টা ২৫ মিনিটে সাকসেসফুল হয়। সো কল হাইজ্যাকারকে আহত অবস্থায় বের করে আনা সম্ভব হয়েছে।”

তার আগে সাড়ে ৭টার পর শাহ আমানত বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সামনে এসে এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, সঙ্কটের অবসান ঘটেছে।

জিম্মি সংকট তৈরি শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবস্থান নেয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা

অভিযান শুরু আগে ওই যুবককে কথায় ব্যস্ত রেখেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “তার সাথে প্রথমেই কথা বলি, সে প্যাসেঞ্জারদের কোনো ক্ষতি করেনি। তার একটাই দাবি ছিল, সে প্রধানমন্ত্রী ও নিজের পরিবারের সাথে কথা বলতে চায়।

“কেবিন ক্রুদের জিম্মি করেছিল, তার সাথে কথোপকথন করে, তার কথা শুনব বলে, সবাইকে বের করে নিয়ে আসি। বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা ক্রেন দিয়ে তাদের নিয়ে আসে। তাকে কনটিনিউয়াসলি ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করেছিলাম, কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন অভিযান চালানোর সময়।”

“ওই ব্যক্তিকে অক্ষত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। বিমানের কোনো ক্ষতি হয়নি,” বলেন তিনি।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, কথিত হাইজ্যাকার তার ‘স্ত্রীর কোনো ইস্যু’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলেন বলে পাইলট তাদের জানিয়েছিলেন।

অভিযান শুরুর সময় শুধু ছিনতাইকারী যুবকই উড়োজাহাজে ছিলেন বলে জানান তিনি।

“সব ক্রুই আল্লার রহমতে বেরিয়ে আসতে পারে। শুধু একজন কেবিন ক্রু ছিল, যার নাম সাগর, সে বেরিয়ে আসতে পারেনি। পরে সেও বেরিয়ে আসে। শুধু সো কলড হাইজ্যাকার প্লেনেই ছিল।”

কমান্ডো অভিযান চলার মুহূর্ত

পৌনে ৯টার দিকে চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে মেজর জেনারেল মতিউর বলেন, এ কমান্ডো অভিযান চালান লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরুল, যিনি হলি আর্টিজানে কমান্ডো অভিযান চালিয়েছিলেন।

অভিযানের বর্ণনা দিয়ে মেজর জেনারেল মতিউর বলেন, “বিমানে একজন ছিনতাইকারী ছিল। সে একটাই দাবি করেছিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে এবং তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল।

“শুরুতে আমরা ছিনতাইকারীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। পরে সে আক্রমণাত্মক থাকায় স্বাভাবিক নিয়মে অভিযান চালানো হয়। এতে সে শুরুতে আহত হয়। পরে নিহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিমানের মধ্যে তার সাথে আমাদের অ্যাকশন হয়েছে, পরে সে বাইরে নিহত হয়েছে।”

মেজর জেনারেল মতিউর বলেন, “বিকেল ৫টা ৩৩ মিনিটে কন্ট্রোল রুম প্রথম ঘটনা জানতে পারে। ৫টা ৪১ মিনিটে বিমানটি চট্টগ্রামে অবতরণ করে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে কমান্ডো বাহিনী বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়।

“যে কোনো বিমান ছিনতাই হলে দুটো কাজ। ছিনতাইকারীর সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখা এবং অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া। দুটোই আমরা করছিলাম।”

“আট মিনিটে পুরো অভিযান শেষ হয়,” বলেন তিনি।

কে এই যুবক, চেয়েছিল কী?

অস্ত্র হাতে উঠে একাই ‍উড়োজাহাজ জিম্মি করার চেষ্টা চালিয়ে নিহত এই যুবকের কী পরিচয়, তার উদ্দেশ্য কী ছিল, তার কিছুই জানা যায়নি।

অভিযানের সময় ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল, তাতে পরিচয় বের করা গেছে কি না- সেই প্রশ্ন সাংবাদিকরা রেখেছিল অভিযান পরিচালনাকারীদের কাছে।

সেনা কর্মকর্তা মতিউর বলেন, “অল্প সময়ে তার সাথে যতটুকু কথোপকথন হল, সে শুধু একটা দাবি করে আসছিল সে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে এবং তার স্ত্রীর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল।

“তার সাথে আর কোনো কথা বলার সময় বা সুযোগ আমাদের ছিল না এবং আমরা যেহেতু দ্রুততর সময়ে অবসান ঘটাতে চেয়েছিলাম তাই আমাদের কমান্ডো অভিযান চালানো হয়।”

অভিযানের পর উড়োহাজাজটির সামনে যুবকের লাশ ঘিরে কমান্ডোরা

ওই যুবক বিদেশি বলে খবর ছড়ানোর বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান নাঈম হাসান বলেন, “সে বাংলায় কথা বলছিল। সো ফার আমি জানি বাংলাদেশি।”

মেজর জেনারেল মতিউর বলেন, “তাকে প্রাথমিকভাবে দেখে আমাদের পাইলট মনে করেছিল বিদেশি, কিন্তু সে একজন বাংলাদেশি।”

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিল- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তা জানা যায়নি। সে কোথায় ছিল, তার ফোন নম্বরও দিতে পারেনি। তার আগেই তো অন্যান্য কথা…  

“সে হয়ত তার স্ত্রীর সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনটা আমাদের দিত, তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা কত- তা জানা যায়নি। সে আমাদের কোনো ক্রু মেম্বারকে বলেছিল- তার নাম মাহাদী।”

যাত্রী হিসেবে তার তথ্য সংরক্ষিত থাকার কথা। সে বিষয়ে মেজর জেনারেল মতিউর বলেন, “তার ডিটেইল পাওয়া যাবে কাগজপত্র ব্যাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, দেখার জন্য সময় লাগবে। কী করে সে ভেতরে চলে আসল, তা দেখা হবে, এত দ্রুত হবে না।”

ছিনতাইকারীর কাছে শুধু একটি পিস্তল ছাড়া আর কিছু ছিল না বলে জানান তিনি।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, “সো ফার আমি জানি, তার কাছে একটা অস্ত্র ছিল। বলেছে গায়ে বোম্ব জড়ানো আছে, বা তার জড়ানো আছে। ওটা কী ছিল, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।”

ওই যুবকের আচরণ অসংলগ্ন ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “সে ইমব্যালেন্স ছিল।”

নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

নিরাপত্তা বাড়াতে নানা পদক্ষেপের মধ্যে বিমানবন্দর পেরিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থার উড়োজাহাজে কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এই যুবক উঠে পড়লেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

এই ঘটনার পর বিমানবন্দরে নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠেছে নতুন করে

নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ত্রুটি ছিল কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নে বেবিচক চেয়ারম্যান নাঈম হাসান বলেন, “আমাদের যে সিস্টেম আছে, এধরনের ব্যক্তির নিরাপত্তা বেষ্টনী অতিক্রম করা এপারেন্টলি সম্ভব না। তারপরও কী হয়েছিল, সেটা তদন্ত করে দেখব।

“সিসিটিভি আছে, সেখানে আমরা চেক করব। মেশিনের ভেতরে একটা একটা নেইল কাটার যদি ধরা পড়তে পারে, এগুলো ধরা পড়বে না কেন? মেশিনের ভেতরেও সিসি ক্যামেরা আছে, বাইরে সিসি ক্যামেরা আছে।”

তবে তদন্তের আগেই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না, বলেন তিনি।

এনিয়ে মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা কমিটি গঠন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।

রাতে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে।

মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর নির্দেশে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

[এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন আতিক ফয়সাল, কাজী নাফিয়া রহমান ও মিঠুন চৌধুরী]