সুমন খন্দকার (২২) ও সাজ্জাদ নেওয়াজ খান (৩২) নামে ওই দুজনকে নগরীর পাঠানটুলী এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) আসিফ মহিউদ্দিন।
ডবলমুরিং থানায় আবু তালেব নামে চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এরা বিক্রয় ডটকমে বিভিন্ন ব্রান্ডের দামি মোবাইল সেট বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয়। সাধারণ লোকজন সেগুলোতে আকৃষ্ট হয়ে টাকা পরিশোধ করলে সে টাকা হাতিয়ে নেয় তারা।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) আবু বকর সিদ্দীক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এরা নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল ছিনতাইয়ের পর তা বিক্রি করে নিজেদের কাছে সিমটি রেখে দেন।
“পরে সে সিম দিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তির পরিচিতজনদের কাছে প্রতারণা করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। গ্রেপ্তারকৃত সুমন খন্দকারই মূলত অনলাইনে মোবাইল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে এই প্রতারণা করে।”
গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, ছিনতাই করা মোবাইল সেটগুলো বিক্রি করে দিয়ে সিমটি নিজেদের কাছে রেখে দেন। সেটা বন্ধ না করা পর্যন্ত পরিচিতদের কাছ থেকে ও ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা দাবি করে।
পুলিশ কর্মকর্তা আবু বকর বলেন, সুমন বিক্রয় ডটকমে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল সেটের বিজ্ঞাপন দেয়। সেগুলো দেখে কেউ যোগাযোগ করলে সে নিজেকে মোবাইল আমদানিকারক হিসেবে পরিচয় দেয়।
“সুমনকে গ্রেপ্তারের পর আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি সে ঢাকা, সিলেট, সাভার, নওগাঁসহ বিভিন্ন জায়গার মানুষ তার প্রতারণার শিকার হয়েছে।”
ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কয়েকমাস আগে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে আমি ৪০ হাজার টাকায় একটি স্যামসাং ব্রান্ডের মোবাইল কেনার আগ্রহ প্রকাশ করি। কয়েকদিন পর সে ওই সেটের প্যাকেটের ভেতরে করে পুরানো একটি সেট পাঠায়।
“অনেক টাকা পাঠানোর আগ পর্যন্ত তাদের সাথে সুমনের যোগাযোগ হয়। পরে সুমন ফোনের ইনকামিং কল বন্ধ করে দেয়, যেন তার সাথে আর যোগাযোগ করতে না পারে।
“এছাড়া চক্রটির সাথে সুমনের স্ত্রীও জড়িত। তিনি কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের নামে লোকজনের সাথে কথা বলে প্রতারণা করেন।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তারা জানতে পেরেছেন সিলেট ও বারিধারার দুই ব্যক্তি এই চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছেন, যারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।
এ চক্রের আরও কয়েকজন সদস্য জড়িত আছে উল্লেখ করে বকর বলেন, “তাদের ধরতে আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।”