ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের ব্যয় সাশ্রয়ী নকশা প্রস্তাব

বন্দর নগরীর সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পরিকল্পনা চলছে, তার ব্যয়সাশ্রয়ী একটি নকশা প্রস্তাব করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2016, 03:23 PM
Updated : 23 March 2016, 03:23 PM

এতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ২১৭ কিলোমিটারের পুরো পথের পরিবর্তে বাজার এলাকা, জংশন ও গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে এক্সপ্রেসওয়ে বা দ্বিতল সড়ক হবে, যার দৈর্ঘ্য হবে মোট ১৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার।

সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিশির কান্তি রাউত বলেন, “এতে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৬ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা লাগবে। অন্যদিকে পুরো সড়কজুড়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হলে ব্যয় পড়বে ৬৭ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।”

বুধবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রস্তাবিত এলাইনমেন্ট এবং নকশা সম্পর্কিত’ এক মতবিনিময় সভায় এই নকশা প্রস্তাব করেন এই প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক শিশির।

তিনি বলেন, ব্যয় সাশ্রয়ী এই এলাইম্যান্টে ৬৪টি আন্ডারপাস, সাতটি ইন্টারচেঞ্জ অপশন এবং ১০ লেইনের ডিজিটাল টোল প্লাজা থাকবে।

সভায় মোট তিনটি এলাইনমেন্ট ও নকশা প্রস্তাব করা হলেও বিশেষজ্ঞরা অ্যাট গ্রেড (ভূমি সংলগ্ন) ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সমন্বয়ে প্রস্তাবিত নকশাটির ১ নম্বর এলাইনমেন্টটির পক্ষে মত দেন।

প্রস্তাবিত দ্বিতীয় নকশায় ভূমি সংলগ্ন ১৯৪ কিলোমিটার ও এলিভেটেড ১৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের এবং তৃতীয় নকশায় ২২৬ দশমিক চার কিলোমিটার ভূমি সংলগ্ন সড়ক ও ১৩ দশমিক ছয় কিলোমিটার এলিভেটেড সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম বর্তমান মহাসড়কের পাশেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে জানিয়ে শিশির বলেন, পুরো এক্সপ্রেসওয়েজুড়ে সীমানা বেড়া থাকবে। ফলে সড়কটি অযান্ত্রিক যানবাহনমুক্ত থাকবে।

“এ এলাইমেন্টে (নকশা-১) দুর্ঘটনা ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। প্রতি ঘণ্টায় গাড়ি ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। ফলে সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পৌছানো যাবে।”

পুরো মহাসড়ক ‘ইন্টেজিল্যান্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের’ মধ্যে থাকবে বলে নজরদারি করা যাবে, বলেন তিনি।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ চট্টগ্রামের সাথে হয়। তাই চট্টগ্রামের সাথে দেশের অন্যান্য জায়গার দ্রুত যোগাযোগ অর্থনীতিতেও গতি আনবে।

এক্সপ্রেসওয়ের নকশা

পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় কক্সবাজার জেলাকে এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত করা যায় কি না, সেটা ভেবে দেখতে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান তিনি।  

পর্যাপ্ত আন্ডারপাস, ওভারপাস রেখে যাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে অনুরোধ জানান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।

যাতে বেশি পরিমাণ ভূমি অধিগ্রহণ করতে না হয়, সে বিষয়ে মনোযোগী হতেও অনুরোধ জানান তিনি।

মতবিনিময় সভায় ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের পিপিপি ডিজাইন প্রজেক্টের টিম লিডার গেভিন স্ট্রাড, প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলমও ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন সওজর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র ধর।

ঢাকা-চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত হবে। যাত্রাবাড়ী প্রান্তে আট লেইনের সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।