তেলকাণ্ডে বরখাস্ত বায়েজিদের ওসি

চট্টগ্রামে তিন মাস আগে একটি বেসরকারি শোধনাগারের সাড়ে নয় হাজার লিটার তেল জব্দের ঘটনায় বায়েজিদ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও দুই এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2015, 07:18 AM
Updated : 16 Nov 2015, 11:27 AM

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) একেএম শহীদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ওসিকে বরখাস্তের এই আদেশ সোমবার চট্টগ্রামে পৌঁছেছে।

ওসি প্রদীপ কুমারকে বরখাস্তের আদেশে দুই এসআই সুজন বিশ্বাস ও একরামুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

তার পরিপ্রেক্ষিতে সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল সোমবার দুই এসআইকে বরখাস্ত করেন বলে অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) শহীদুর জানান।

গত ৪ অগাস্ট সন্ধ্যায় বেসরকারি তেল শোধনাগার সুপার রিফাইনারি থেকে মিরসরাই যাওয়ার পথে নগরীর বায়েজিদ থানার টেক্সটাইল গেইট এলাকায় সাড়ে নয় হাজার লিটার কেরোসিনসহ একটি লরি আটক করে পুলিশ। ওই লরির চালককে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, লরির তেল মিরসরাইয়ের রিদওয়ান টেড্রার্সে নেওয়ার কথা বলা হলেও ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা জেনেছেন, তারা ওই তেল কেনেনি।

এরপর সুপার রিফাইনারির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ দশ জনের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করেন এসআই সুজন। ওই মামলার তদন্ত করেন একই থানার এস আই একরামুল।

মামলা হওয়ার পর আন্দোলনে নেমে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগারগুলো থেকে তেল সরবরাহ বন্ধের হুমকি দেয় ‘ট্যাংক-লরি চালক-মালিক সংগ্রাম পরিষদ’। পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে হয়রানির অভিযোগ করেন সুপার রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আহমেদ।

ওই অভিযোগের পর পুলিশ সদর দপ্তর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আলমগীরকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে কমিটি বায়েজিদ থানার ওসি, মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।

এছাড়া ‘সঠিকভাবে তদারকি না করায়’ চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল, পাঁচলাইশ জোনের তখনকার সহকারী কমিশনার দীপক জ্যোতি খীসা, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শরিফুল ইসলাম ও উপ-কমিশনার পরিতোষ ঘোষের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

ওই সুপারিশের ভিত্তিতে কৈফিয়ত তলব করলে পুলিশ কমিশনারসহ চার কর্মকর্তা পুলিশ সদর দপ্তরে লিখিত জবাবও দেন।

এরপর তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই ওসি ও দুই এসআইয়ের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ এলো।