মেয়র বলেন, কোনো কর্মকর্তা কর্মচারীকে কর্মস্থলে পাওয়া না গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজ না করলে চাকরি থাকবে না।
Published : 06 Nov 2024, 07:49 PM
সড়ক ঝাড়ু দেওয়াসহ পরিচ্ছন্ন বিভাগের কাজ রাতেই শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন।
বুধবার অস্থায়ী নগর ভবনে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, “দিনের বেলা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চললে ধুলোবালি উড়ে, ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে নাগরিকরা কষ্ট পায় এবং বাতাসে ওড়া ধুলা-বালি এলার্জি, ফুসফুসজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
“এজন্য জনস্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে সড়ক ঝাড়ু দেওয়াসহ পরিচ্ছন্নতা বিভাগের যে সমস্ত কাজ রাতে করা সম্ভব সেগুলো রাতেই করতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমি রোববার থেকে প্রতিদিন দুটি করে ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কার্যক্রম পরিদর্শন করব। কোনো কর্মকর্তা কর্মচারীকে কর্মস্থলে পাওয়া না গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজ না করলে চাকরি থাকবে না।
নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নাগরিকদের সচেতনতাও আশা করেন নতুন মেয়ার।
“বিশেষ করে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলে যথাস্থানে ময়লা ফেলতে হবে। বন্ধ করতে হবে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যবহার। নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রাথমিকভাবে আমরা নাগরিকদের সচেতন করব, পরবর্তীতে প্রয়োজনে জরিমানা করব।”
নগরীকে কীভাবে আরো পরিচ্ছন্ন রাখা যায় এবং মশা কমানো যায় সে ব্যাপারে মেয়র বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ইমাম হোসেন রানা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক অং সুই প্রু মারমা, সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি প্রমুখ।
ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল হবে
নগরীর সদরঘাটে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেমন মাতৃসদন হাসপাতালে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র শাহাদাত হোসেন।
বুধবার মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে মেয়র করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনারও ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “মেমন মাতৃসদন হাসপাতালে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট সেল গড়ে তোলা হবে। বিশেষজ্ঞসহ প্রয়োজনীয় লোকবল দিয়ে স্বল্প মূল্যে ডেঙ্গু রোগীদের রক্তপরীক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া হবে।
“এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট পরিদর্শন করব আমি। আমি আজ ইতিমধ্যে আলকরণে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি৷ পরিচ্ছন্ন বা স্বাস্থ্য বিভাগের কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে আমাকে জানাবেন, আমি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিব।”
তিনি বলেন, “মশা মারতে এখন যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলোও আমি যাচাই করব সেগুলো আসলে কাজ করছে কি না। প্রয়োজনে মশা নিয়ন্ত্রণে নতুন ওষুধ ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করব।”
মেমন হাসপাতালের বিষয়ে তিনি বলেন, “একসময় নারী ও নবজাতক শিশুদের সেবায় মেমন হাসপাতালের চট্টগ্রামে আলাদা সুনাম ছিল। এখানে এসে চিকিৎসক ও রোগীদের সাথে কথা বলে বুঝলাম হাসপাতালে যন্ত্রপাতির ঘাটতি আছে। এই যন্ত্রপাতিগুলো সংগ্রহ করে এবং প্রয়োজনীয় লোকবল দিয়ে মেমন হাসপাতালকে ঢেলে সাজানো হবে।
“বন্দরটিলা হাসপাতাল, মোস্তফা হাকিম হাসপাতালসহ করপোরেশনের বেশকিছু ভালো বড় হাসপাতাল রয়েছে এগুলো সংস্কার করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের হারানো ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা হবে।”
পেশায় চিকিৎসক শাহাদাত জানান, স্বাস্থ্য খাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বছরে প্রায় ২১ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, যা প্রতি মাসে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এই খাতের উন্নয়নের জন্য করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে সেবা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।