“প্রতিটা খালের মধ্যে ২-৩ ফুট পলিথিনের স্তর পড়ে গেছে।“
Published : 11 Dec 2024, 04:41 PM
জলবদ্ধতা দূর করতে আগামী বর্ষার আগেই চট্টগ্রাম নগরীর খাল খনন ও পরিষ্কার করে, দুই পাড় হাঁটাচলার উপযোগী করা হবে বলে নগরীর মেয়র শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে নগরীর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে মহেশখালের পাড়ে সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কথা বলছিলেন মেয়র শাহাদাত।
তিনি বলেন, “সামনে বর্ষাকাল। বর্ষার আগে খালগুলো যাতে পরিষ্কার থাকে। খালগুলো যাতে একটু খনন করা হয় এবং ময়লাগুলো যেন অপসারণ করা হয়। কারণ খালের মধ্যে পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, ককশিট এবং নন-পেরিসেবল ওয়েস্টেজ যেগুলো খালে ফেলে দিচ্ছে সেগুলো জলাবদ্ধতার মূল কারণ।
“কারণ কর্ণফুলী নদীতেও যদি আমরা দেখি, সেখানে দেখব যে ৮-১০ মিটার পলিথিন হয়ে গেছে। এখানেও প্রতিটা খালের মধ্যে ২-৩ ফুট পলিথিনের স্তর পড়ে গেছে। এগুলো মিলিয়েই কিন্তু জলাবদ্ধতা হয়। এজন্য গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন রাখাই মূল কথা।”
মেয়র শাহাদাত বলেছেন, খালের দুই পাড়ে হাঁটার পথ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে সিটি করপোরেশনে।
তিনি বলেন, “মানুষ এখন এখানে হাঁটতে পারছে না। ওয়াকওয়ে করে দিলে তারা খালের পাড়ে হাঁটতে পারবে। খালও একটা বিনোদনের জায়গা হিসেবে করতে চাই।
“এটা হলে পরিচ্ছন্নতাও বাড়বে। মানুষও আসবে। অব্যবহৃত থাকলে, মানুষ অনেক কিছু ফেলতে থাকে। যখন আসার সুযোগ পাবে, তখন দেখতে পারবে খাল অপরিচ্ছন্ন কি না।“
খালে দুই পাড়ে হাঁটার পথ তৈরি হলেও কোনো ধরনের দোকানপাট করা হবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র শাহাদাত।
জলবাদ্ধতা নিসরনে চলমান মেগা প্রকল্প ও বর্ষা নিয়ে সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনা জানতে চাইলে শাহাদাত বলেন, “জলাবদ্ধতার প্রকল্প মূলত সিটি করপোরেশনের করার কথা ছিল। এটাই উচিত ছিল। কিন্তু আমরা আসলে দেখেছি, রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন ভাবে সিটি করপোরেশনকে বাইপাস করে সেটা সিডিএ করেছে।
“সিডিএ সেটা শুরু করেছে ২০১৬ সালে। সেটা শেষ হবে ২০২৬ সালে। যখন শেষ হবে তখন ফাইনালি আমরা বুঝতে পারব জনগণ কতটা সুফল পাচ্ছে।”
বাড়ই পাড়া খাল খনন নিয়ে শাহাদাত বলেন, “বাড়ই পাড়া খাল যদিও শুরু হয়েছিল ২০১২ সালে কিন্তু জমি অধিগ্রহণে কিছু সময় লেগেছিল। কিন্তু এত সময় লাগা উচিত ছিল না। আমি বলে দিয়েছি, দ্রুত আগাতে। কাজ প্রায় শেষের দিকে। আশাকরি দ্রুত শেষ করতে পারব।”
সিডিএ, ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের কাজের মধ্যে সমন্বয় নিয়ে শাহাদাত বলেন, “অনেক সময় আমরা খাল খনন করতে চাইলে সিডিএ বলে এটা তাদের এলাকা। বর্তমান সিডিএ চেয়ারম্যানের সাথে আমি মিলেমিশে কাজ করছি।
“কিন্তু মূলত দরকার হলো নগর সরকার। মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম থেকে বলেছেন। এ জায়গায় এড্রেস করতে না পারলে পরিকল্পিত উন্নয়ন সম্ভব না।”
নগরীর গত এক মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হার প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমেছে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান ও মাহমুদ শাফকাত আমিন, সহকারী প্রকৌশলী সজীব রেজা হক, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি ও মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী।