মেয়র রেজাউল জানান, এবার মেলা আয়োজনে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে।
Published : 07 Feb 2024, 03:21 PM
প্রথমবারের মত সিআরবিতে বইমেলা আয়োজনের প্রাক্কালে চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী এখানেই প্রতিবছর মেলা আয়োজনের আশাবাদের কথা বললেন।
শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া মেলা উপলক্ষে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এ কথা বলেন।
এর আগে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে বইমেলার আয়োজন হলেও এবার জেলা প্রশাসনের আপত্তির মুখে সেখানে মেলা হচ্ছে না।
জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় গত ডিসেম্বরে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে এবার বিজয় মেলাও হয়নি। প্রতি বছর এখানেই বিজয় মেলা হয়ে থাকে।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে বইমেলার স্থায়ী কোনো ভেন্যু হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে মেয়র রেজাউল বলেন, “খেলার মাঠে শুধু বইমেলা নয়, কোনো মেলা করতে দিবে না। তাহলে করব কোথায়? আছে লালদীঘির মাঠ। সেখানেও ছেলেরা খেলাধুলা করে। তাই বাধ্য হয়ে সিআরবিতে এসেছি। সিআরবি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান।”
“বইমেলা শুধু একটি মেলা নয়। এখানে লেখক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতি কর্মী, শিল্পী, পেশাজীবী, শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা হয়। নানা কারণে সিআরবিতে বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি, যদি প্রতিবছর সিআরবিতে করি তাহলে তা হবে আকর্ষণীয়।”
মেলার স্থায়ী জায়গার বিষয়ে মেয়র বলেন, “এই জায়গা যদি সিটি করপোরেশনের হত বলতে পারতাম, প্রতি বছর মেলা এখানে হবে। কিন্তু এটা রেলের জায়গা। তবে এটা বইমেলা৷ ভালো উদ্যোগ। আশা করি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর এখানে মেলা করতে দিবে।”
তিনি বলেন, “স্থায়ী মাঠ সিটি করপোরেশনের আছে। কিন্তু একটা দূরে। বাকলিয়াতে আমাদের স্টেডিয়াম আছে। এফআইডিসি মাঠে ১১ একর জমি আছে। কিন্তু দূরবর্তী হওয়ায় সেখানে অনেকে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
“সিআরবি এমন এলাকা যা বইমেলার উপযুক্ত। এখানে এলে লেখক ও পাঠকরা খোলামেলা প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরে বই দেখতে পারবেন, আড্ডা দিতে পারবেন। প্রকৃতির সান্নিধ্যে লেখকরা অনুপ্রাণিত হবেন। এটা এমন এলাকা যে, মেলার পরিধি বাড়লেও স্টলের ব্যাপ্তি ঘটাতে পারব বলে বিশ্বাস করি।”
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে মেয়র রেজাউল বলেন, “মেলার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। খোলা জায়গা প্রচুর রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য চারদিকে টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। সিসি ক্যামরা ও পুলিশ প্রহরা থাকবে। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব সিকিউরিটিসহ নিরাপত্তা বলয় থাকবে।”
এক প্রশ্নে মেয়র রেজাউল জানান, এবার মেলা আয়োজনে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে।
সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “মেলা থেকে সব মিলিয়ে আয় হবে বড়জোর ৫-৭ লাখ। খরচের দিকে আমরা তাকাই না। কারণ মেয়র মহোদয় বইমেলার বিষয়ে খুব আন্তরিক।”
চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলার আয়োজক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
প্রথমবারের মত সিআরবিতে আয়োজিত এই মেলার আয়তন ৪৩ হাজার বর্গফুট। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৯২টি প্রকাশনা সংস্থার ১৫৫টি স্টল থাকবে। এর মধ্যে ডাবল স্টল ৭৮টি ও সিঙ্গেল স্টল ৭৭টি।
নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চ, বঙ্গবন্ধু কর্নার, লেখক আড্ডাসহ নারী কর্নার ও সেলফি কর্নার থাকবে। জাতীয় জীবনে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য একুশে সম্মাননা স্মারক পদক ও সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হবে।
২ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। মেলায় প্রতিদিন বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, বইমেলার আহ্বায়ক ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সদস্যসচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নীপু, সাংস্কৃতি সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ, কবি কামরুল হাসান বাদল, সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি সাহাবউদ্দিন হাসান বাবু, সহ-সভাপতি প্রকাশক রেহানা চৌধুরী প্রমুখ।