মারধরে কিশোরের মৃত্যুকে আত্মহত্যা চালানোর চেষ্টা: মা ও মামা গ্রেপ্তার

ছেলের মা ও মামার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই কিশোরের বাবা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2022, 02:25 PM
Updated : 10 August 2022, 02:25 PM

ক্রোধের বশে মারধরের এক পর্যায়ে মায়ের ধাক্কায় আঘাত পেয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। এই অপমৃত্যুর ঘটনা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই ছেলের মা ও মামার বিরুদ্ধে। তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবর শাহ থানার বিশ্ব কলোনী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোরের নাম মো. হাছান (১৪)।

মঙ্গলবার হাছানের মা কুলসুম বেগম (৩৮) ও মো. ফারুক ইসলাম (২৪)-কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পারিবারিক কলহের কারণে বাবা-মা আলাদা থাকায় হাছান তার মার সঙ্গে বিশ্ব কলোনির আল হেরা মসজিদ গলির ‘জে’ ব্লকের একটি বাসায় থাকত। তার মামা ফারুক থাকতেন ‘আই’ ব্লকের একটি বাসায়।

আকবর শাহ থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “ছেলের টাকা চুরির অভিযোগ পেয়ে কুলসুম ছেলেকে মারধর করে। এক পর্যায়ে মা-ছেলের ধাক্কাধাক্কিতে হাছান পড়ে গিয়ে লোহার খাটের ‘অ্যাংকেলে’ মাথার পেছনে আঘাত পায়।

“হাছান নিস্তেজ হয়ে পড়ায় কুলসুম কাছাকাছি বাসায় থাকা ছোট ভাই ফারুককে নিজের বাসায় ডেকে আনেন। আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার জন্য ভাই-বোন মিলে ঘরের দরজার ভেন্টিলেটরের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হাছানকে ঝুলিয়ে দেন।”

রাতে হাছান আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার চালানো হয়। স্থানীয় এক চিকিৎসককেও ডেকে আনা হয়। ওই চিকিৎসক হাছানকে মৃত ঘোষণা করার পর স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়।

ওসি ওয়ালী উদ্দিন বলেন, “মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশের বিষয়টি সন্দেহ হয়, জিজ্ঞাসাবাদের এক পার্যায়ে কুলসুম ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশকে জানান। কুলসুম ও তার ভাই ফারুককে তখন আটক করা হয়।”

এ ঘটনায় হাছানের বাবা বেলাল হোসেন বাদী হয়ে কুলসুম ও ফারুককে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার কুলসুম আদালতে ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে জবানবন্দি দেন।

কুলসুম ও তার ভাই ফারুক কারাগারে আছে বলে জানান ওসি।

বেলালের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক কলহের কারণে তারা স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকায় তিনি স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ দিতেন। তার সন্তান হাছান আগে বাসে হেলপারের চাকরি করতেন। বিভিন্ন সময়ে না বলে সে ঘরের বিভিন্ন জনের পকেট থেকে টাকা নিয়ে নিত। সে কারণে কুলসুম ছেলেকে হাটহাজারী এলাকায় তার শ্বশুরের দোকানে দৈনিক ১৫০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে চাকরিতে পাঠায়।

হাছান গত রোববার তার আরেক মামা নুরুন্নবী সোহেলের মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টাকা নিলে তার মা তা ধরে ফেলে। এনিয়ে সোমবার রাতে ছেলে হাছানকে মারধরের সময় তার মৃত্যু হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।