উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের মনে রাখতে হবে, আগ্রাসন এবং বিভিন্ন ধরণের আক্রমণের থেকে কিন্তু আমরা মুক্ত নই।”
Published : 01 Feb 2025, 07:34 PM
যে কোনো দুর্বলতার সুযোগে ‘ফ্যাসিবাদ’ ফিরে আসার চেষ্টা করতে পারে মন্তব্য করে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
তিনি বলেছেন, “আমরা আশা করি, এ সংগ্রামে অংশ নেওয়া সমস্ত ছাত্রছাত্রী ও শহীদের কথা আপনারা লিখবেন। আমাদের প্রতিনিয়ত যেন এ কথা মনে থাকে, রক্তের উপরে দাঁড়িয়ে আমরা আজকের বাংলাদেশে আছি। যেন প্রতিনিয়ত মনে থাকে, যেই ঐক্য রচিত হয়েছিল ৫ অগাস্ট সে ঐক্য যেন কোন অবস্থাতেই কোনো শক্তি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা না করতে পারে।
“আমাদের মনে রাখতে হবে, আগ্রাসন এবং বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ থেকে কিন্তু আমরা মুক্ত নই।”
শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “এই বইমেলার ‘ন্যারেটিভ’ আলাদা হবে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটিয়ে জুলাইয়ের ৩৬ দিনে যে ছাত্র জনতা রক্ত দিয়ে বাংলাদেশ বদলে দিয়েছে। সেই বদলে যাওয়া ন্যারেটিভের উপর দাঁড়িয়ে আজকের এই বইমেলা।
“আজকের যে বাস্তবতা, বদলে যাওয়া বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম, একটা ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যে সফল সংগ্রাম, তার ওপর দাঁড়িয়ে আজকের বইমেলা।”
জনতার ঐক্য, ছাত্র সমাজের ঐক্য, গণমানুষের ঐক্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে– এমন আশাবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ যা আশা করে তা হচ্ছে, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। একুশ মানে মাথা নত না করা। আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি এবার যেন তা মনে রেখেই হয়।”
চট্টগ্রামের সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
এবার চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলায় ১৪০টি স্টল থাকছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থাগুলোর ৭৪টি এবং ঢাকার স্টল ৪৪টি।
মেলা মঞ্চে এবারও প্রতিদিনের সাংস্কৃতিক পর্বে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রবীন্দ্র-নজরুল ও লোক সংগীত, সাধারণ নৃত্য, লোক নৃত্য, আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা ও দেশের গানের আয়োজন হবে। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের জাগরণী গান ও দেশাত্মবোধক গানের আয়োজন থাকবে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা।
চট্টগ্রামের সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ২০১৯ সাল থেকে সিটি করপোরেশনের আয়োজনে জিমনেশিয়াম মাঠে বইমেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেন। তখন থেকেই মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ।
২০২৪ সালে সিআরবিতে অমর একুশে বইমেলা আয়োজন করা হয়। তার আগে অবশ্য জিমনেশিয়াম মাঠেই বইমেলা হত। সে হিসেবে আবার পুরনো ঠিকানায় ফিরেছে নগরের এ বইমেলা।