উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে নন্দনকানন এলাকা থেকে শুরু হয়ে রথযাত্রা চলে নিউমার্কেট থেকে লালদীঘির মোড় ঘুরে আন্দরকিল্লা এলাকা পর্যন্ত।
Published : 07 Jul 2024, 08:34 PM
দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চট্টগ্রামেও বর্ণিল আয়োজনে শুরু হয়েছে রথযাত্রা উৎসব।
রোববার দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর তুলসী ধাম, প্রবর্তক ইসকন মন্দির, নন্দনকানন ইসকন মন্দিরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শোভাযাত্রায় ছোট-বড় মিলিয়ে পৃথক রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। এসব রথযাত্রা হাজারো ভক্তের অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠে।
বিকালে নগরীর নন্দনকানন তুলসীধাম থেকে কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে উৎসব শুরু হয়। তুলসীধামের মোহন্ত মহারাজ দেবদীপ মিত্র চৌধুরীর পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত এ রথযাত্রার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, পরমত সহিষ্ণুতা প্রদর্শনের পন্থা অবলম্বনে ধর্মের রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠান ইত্যাদির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সম্মান প্রদান ও এই ধারণাকে মর্যাদাসীন করার লক্ষ্যে মানবিকতায় উজ্জীবিত চেতনার নামই অসাম্প্রদায়িকতা।
এই জনপদে সবার শান্তিপূর্ণ বসবাস বাঙালির আবহমান সংস্কৃতির উৎকৃষ্ট পরিচায়ক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উদ্বোধক ভারতের সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, রথযাত্রা শুধু দেবতার নয়, ভক্তেরও। দেবতার প্রতি ভালোবাসার টান থেকেই ভক্তরা রথ টেনে এগিয়ে চলেন। শ্রীচৈতন্যের সময় থেকে বাঙালির সঙ্গে রথের যোগাযোগ আরও গাঢ় হয়েছে, যা পুষ্ট করেছে বাংলার সংস্কৃতিকে। রথ গতি ও এগিয়ে চলার প্রতীক।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ, সিএমপি কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটন, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, মহিলা কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে নন্দনকানন এলাকা থেকে শুরু হয়ে রথযাত্রা চলে নিউমার্কেট থেকে লালদীঘির মোড় ঘুরে আন্দরকিল্লা এলাকা পর্যন্ত।
দিনব্যাপী এ উৎসবের মধ্যে ছিল মহানামযজ্ঞ, মদনমোহন পূজা, জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলভদ্রের পূজা, গুরু পূজাসহ ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ।
এদিকে নগরীর প্রর্বতক ইসকন মন্দির থেকে বের করা হয় আলাদা রথযাত্রা। জগন্নাথ-সুভদ্রা ও বলভদ্রকে নিয়ে রথ চলে নগরীর প্রবর্তক মোড় থেকে মেহেদীবাগ, কাজীর দেউড়ি হয়ে আন্দরকিল্লা এলাকা পর্যন্ত।
ইসকনের এ রথযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভারচুয়ালি অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দিয়ে এবং তাদের সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলের মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে এবং আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছে। একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে জন্মলাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সেই চেতনাকে ধারণ করে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে।”
প্রবর্তক ইসকনের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। রথযাত্রার উদ্বোধন করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।
বিশেষ আলোচক ছিলেন পুণ্ডরীকধামের অধ্যক্ষ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. জিনোবোধি ভিক্ষু, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন তালুকদার প্রমুখ।
এছাড়া নন্দনকানন ইসকন মন্দির থেকেও রথযাত্রা বের করা হয়।