মেলা চলবে প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা; আর ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
Published : 09 Feb 2024, 08:16 PM
চট্টগ্রাম নগরীর ‘ফুসফুস' খ্যাত সিআরবিতে প্রথমবারের বসল অমর একুশে বইমেলা; উদ্বোধনী দিনেই দেখা মিলল আশা জাগানিয়া লোক সমাগম।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিকালে মেলা উদ্বোধনের আগেই মানুষের আনাগোনা শুরু হয়ে। সন্ধ্যায় উদ্বোধনের সময় মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায় কয়েক হাজার দর্শনার্থী।
দুই দিন আগে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে সিআরবিতেই স্থায়ীভাবে মেলা আয়োজনের কথা বলেছিলেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সে কথাই পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
“মেলা আয়োজনের জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে বসেছিলাম। তখন অনেকে বলেছিলেন, লালদীঘি বা শিশুপার্ক, যেটা নতুন খালি হয়েছে সেখানে করতে। তখন আমি প্রস্তাব দিই, সিআরবি। অনেকে বলেছিল, এখানে মানুষ হবে না। আজ সমাবেশ দেখে কি মনে হয়? বইপ্রেমীরা যেখানে মেলা হয়, সেখানে যাবে।"
মেলার জন্য সিআরবি মাঠ বরাদ্দ দেওয়ায় রেলের মহাব্যবস্থাপককে ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র বলেন, “উনাকে ধন্যবাদ, বইমেলার জন্য বলা মাত্র উনি কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই অনুমোদন দিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষের পদচারণা প্রমাণ করে, বইমেলা সবার প্রাণের মেলা।"
রেজাউল বলেন, “এখানে নতুন প্রজন্ম আসবে, বই কিনতে কিনতে তারা পড়া আরম্ভ করবে। পড়তে পড়তে পাঠক হবে।
“এখানে প্রাকৃতিক পরিবেশে লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক সবাই আসবেন। সুন্দর পরিবেশে মেলা হবে।"
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান ও সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
এর আগে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে বইমেলার আয়োজন হলেও এবার জেলা প্রশাসনের আপত্তির মুখে সেখানে মেলা হচ্ছে না। খেলার মাঠে মেলা আয়োজন করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে প্রশাসনের।
জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় গত ডিসেম্বরে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে বিজয় মেলাও হয়নি। প্রতি বছর এখানেই বিজয় মেলার আয়োজন করা হত।
চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলার আয়োজক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। মেলা আয়োজনে সহযোগিতা করে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
প্রথমবারের মত সিআরবিতে আয়োজিত মেলার আয়তন ৪৩ হাজার বর্গফুট। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৯২টি প্রকাশনা সংস্থার ১৫৫টি স্টল আছে।
উন্মুক্ত সুপরিসর স্থানে মেলার আয়োজন পাঠক ও দর্শনার্থীদের নজর কাড়লেও প্রথমদিন সন্ধ্যায় সব প্রকাশনা সংস্থার স্টল গোছানো শেষ হয়নি।
অন্যধারা স্টলের বিক্রয় কর্মী সাইফুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আজ ঢাকা থেকে এসেছি, তাই এখনও স্টলের সব কাজ শেষ হয়নি। রাতের মধ্যে হয়ে যাবে।"
মেলায় আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, “সিআরবিতে মেলা হচ্ছে শুনে দেখতে এসেছি। এখানে মেলা জমবে। তবে ঢাকা থেকে আরো বেশি প্রকাশনা আসলে ভালো হত।"
ইতিহাসভিত্তিক সাময়িকী ও প্রকাশনা সংস্থা ‘ইতিহাসের খসড়া'র স্টলে দেখা গেল বই গোছানোর ব্যস্ততা।
ইতিহাসের খসড়া সম্পাদক মুহাম্মদ শামসুল হক বললেন, “স্টল আজ বুঝে পেয়েছি, তাই গোছাতে একটু সময় লাগছে। আয়োজন সার্বিকভাবে ভালোই হবে মনে হচ্ছে।"
মেলায় শিরিষ তলায় নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চ, সেলফি কর্নার, শিশু কর্নার ও আলোকসজ্জা নজর কেড়েছে।
২ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রতিদিন বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হবে।