মেয়র বলেন, “আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সাথে সভা করেছি। দখল হওয়া ফুটপাত উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি পে-পার্কিং চালুসহ বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
Published : 30 Jan 2024, 07:54 PM
নগরীর দখল হওয়া ফুটপাত উদ্ধারে ‘ব্যাপক অভিযান’ চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৬তম সাধারণ সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
সাধারণ সভায় মেয়র, কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে আলোচনা করেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র রেজাউল বলেন, “নগরীর ফুটপাত দখল জনগণের জন্য অসহনীয় হয়ে গেছে। মানুষ স্বস্তিতে হাঁটতে পারবে না, মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিতে পারবে না, তা হতে পারেনা।
“আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সাথে সভা করেছি। দখল হওয়া ফুটপাত উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি পে-পার্কিং চালুসহ বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
সভায় সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচনের কারণে আমাদের অভিযান পরিচালনা কার্যক্রম কিছুটা কম ছিল। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে অভিযান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।”
এসময় ফুটপাতে অভিযান বিষয়ে মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম বলেন, “জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাবাজারে অভিযান চালিয়ে ফুটপাত ও সড়ক উদ্ধার করেছিলাম। প্রায় দু’মাস উদ্ধার হওয়া স্থান উন্মুক্ত ছিল। তবে এরপর আবারো সে জায়গা বেদখল হয়ে গেছে।
“এজন্য আমরা জায়গা উদ্ধার করলে সংশ্লিষ্ট থানাগুলো যদি নিয়মিত মনিটরিং করে তাহলে নগরীর ফুটপাত ও সড়ক উন্মুক্ত রাখা সম্ভব। মেয়র মহোদয়ের নির্দেশ বাস্তবায়নে আগামী সপ্তাহে স্টেশন থেকে ফলমন্ডির রাস্তাটা আমরা উচ্ছেদ করব। প্রয়োজনে পুলিশ-আনসারসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা নিয়ে যেকোনো মূল্যে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করব।”
সভায় সিসিসির প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, “সিটি করপোরেশন ল’ এনফর্সমেন্ট এজেন্সি না। আমাদের কাজ রাস্তা, ফুটপাত, নালা বানানো। এগুলো যাতে বেদখল না হয় সেজন্য পুলিশের সহযোগিতা প্রয়োজন।
“নগরীর যানজট কমাতে আমরা আগ্রাবাদে পরীক্ষামূলকভাবে পে-পার্কিং চালু করছি। নগরীতে ৭৫ হাজার রিকশার লাইসেন্স আছে, আরো ২০ হাজার লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন আছে। কিন্তু রিকশা চলছে ৩ লক্ষাধিক। নগরীর মূল সড়কে রিকশা বন্ধেও উদ্যোগ নেয়া হবে।”
সভায় নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ বলেন, “হকার উচ্ছেদে সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বর্তমানে কিছু এলাকায় ফুটপাত পুরোপরি দখল হয়ে গেছে। একারণে অনেক মানুষকে ফুটপাতে জায়গা না পাওয়ায় রাস্তায় হাঁটতে হচ্ছে, যা দুর্ঘটনা ও জ্যাম বাড়াচ্ছে।
“পর্যাপ্ত জেব্রা ক্রসিং না থাকার কারণে পথচারীরা সমস্যায় ভুগছেন। পর্যাপ্ত জেব্রা ক্রসিং নির্মিত হলে যানজট ও দুর্ঘটনা কমবে। নগরীতে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে মোড়গুলোতে। আমরা যদি পরিকল্পনামাফিক মোড়গুলোকে গড়তে পারি তবে দীর্ঘমেয়াদে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত হবে “
সভায় সিডিএ’র বাস্তবায়নাধীন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প প্রসঙ্গে মেয়র রেজাউল বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে হচ্ছে। আমি প্রকল্পের এলাকাগুলোতে পরিদর্শন করে দেখেছি- চাক্তাই খাল, বিরজা খালসহ বিভিন্ন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাটি জমে আছে।
“এ মাটি উত্তোলন করা না হলে এ বছরও নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এজন্য বর্ষাকাল আসার আগেই নালা-খালের মাটি উত্তোলন করতে হবে।”
সভায় একাধিক কাউন্সিলর সিসিসির বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এর প্রেক্ষিতে প্রকৌশল বিভাগের উদ্দেশ্যে মেয়র রেজাউল বলেন, বর্ষার মৌসুমে ২ মাস কাজ করা যায় না। এজন্য শুষ্ক মৌসুমেই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত কাজে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি মোট ১৭ শতাংশ বলে জানান উপ-প্রকল্প পরিচালক জসিম উদ্দিন।
সভায় সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরসহ বিভাগীয় ও শাখা প্রধান এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।