বৃহস্পতিবার দুপুর একটায় ছিল আয়োজন শুরুর নির্ধারিত সময়। লন্ডনের যানজটে এক অধিনায়কের আসতে দেরি। অনুষ্ঠান শুরুর ৫ মিনিট দেরির জন্যও ঘোষণা দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করা হলো। সুসজ্জিত মঞ্চে ১০ দলের খেলার ছোট্ট ভিডিও দিয়ে শুরু হলো আয়োজন। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে স্থানীয় বিভিন্ন ক্রিকেট একাডেমির বাছাই করা শিশুরা সুযোগ পেলেন মহাতারকার কাছ থেকে দেখা ও ছোঁয়ার সুযোগ। অধিনায়কদের মঞ্চের পথে এগিয়ে নিলেন তারাই।
এরপর পাকিস্তানের সরফরাজ আহমেদ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডার, আফগানিস্তানের গুলবদিন নাইব হয়ে বাংলাদেশের মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়কের পাশে বসলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। সবশেষে মঞ্চে এলেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মার্ক চাপম্যানের প্রথম প্রশ্নই আয়োজন জমিয়ে দিল। ‘হোল্ডার অস্ট্রেলিয়া’ নাকি ‘হোস্ট ইংল্যান্ড’, কে এগিয়ে এবার?
টানা ১০ ওয়ানডে হেরে বিশ্বকাপে যাচ্ছে পাকিস্তান। তবু দলকে নিয়ে দারুণ আশাবাদী সরফরাজ। ইংল্যান্ডে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল পাকিস্তান, শিরোপা জিতেছে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। পাকিস্তান অধিনায়ক মনে করিয়ে দিলেন, ইংল্যান্ডে তারা বরাবরই দুর্দান্ত।
গত বিশ্বকাপ থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে সাফল্যের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মাশরাফির কাছে সঞ্চালকের প্রশ্ন সেই সাফল্যের রহস্য নিয়ে। কিভাবে পারল বাংলাদেশ? অধিনায়ক বললেন দলে সিনিয়র ও জুনিয়রদের দারুণ সমন্বয়ের কথা। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ফাফ দু প্লেসির দিকে তাকিয়ে মাশরাফি বললেন, “আশা করি, ফাফের দলের বিপক্ষে শুরুটা ভালো করতে পারব আমরা।” পাশ থেকে ফাফের চকিত উত্তর, “আমি আশা করি তোমার আশা পূরণ হবে না!”
তবে ভারত অধিনায়কের ধারণা, শুধু রানের খেলাই হবে না এবার, “বিশ্বকাপের মতো আসরে চাপ একটি বড় ব্যাপার। দেখবেন, ২৫০-২৬০ রান করেও অনেক ম্যাচে জেতা যাবে। বিশেষ করে বিশ্বকাপের শেষের দিকে আমার মনে হয় না বড় রান বেশি হবে।”
সরফরাজের দিকেও প্রশ্ন গেল বেশি। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ জেতানো ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সরফরাজেরও ইচ্ছে? পাকিস্তান অধিনায়ক বললেন, কেবল বিশ্বকাপ জিততে পারলেই তিনি মহাখুশি।
১০ অধিনায়কই শোনালেন দল নিয়ে আশা আর চ্যালেঞ্জের কথা। মাশরাফির কণ্ঠে শোনা গেল প্রত্যয়, “আমাদের বিশ্বাস আছে যথেষ্ট। যদি শুরুটা ভালো করতে পারি, আমরা হারাতে পারি যে কোনো দলকে।”
সবশেষে সব অধিনায়কই আবার শোনালেন নিজেদের প্রত্যাশার কথা। সেই স্বপ্নের সুবাস নিয়েই শেষ হলো দারুণ আয়োজন। অপেক্ষা এখন মূল লড়াই শুরুর।