বাবর শোনালেন আত্মবিশ্বাসী থাকার মন্ত্র, রিজওয়ান বললেন ইতিবাচক থাকার কথা।
Published : 13 Oct 2022, 04:26 PM
বাবর আজমের সঙ্গে একই যুব বিশ্বকাপে খেলেছেন লিটন দাস। মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে একই বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে তার। পাকিস্তানের এ দুই ওপেনার এখন বিশ্ব ক্রিকেটের বড় তারা। সেই পথে যাত্রা শুরু করেছেন লিটনও। বৃহস্পতিবার ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচ শেষে আড্ডায় দেখা গেলো তাদের।
খালি হাতেই নিউ জিল্যান্ড সফর শেষ করেছে বাংলাদেশ, জেতেনি চার ম্যাচের একটিও।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে ১৭৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করানোর পর জয়ের সম্ভাবনা জেগেছিল। কিন্তু বাবর ও রিজওয়ানের ফিফটিতে ম্যাচ জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। একই ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন লিটন।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০১২ সালে হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেন বাবর ও লিটন। দশ বছর পর এবার নিজ নিজ জাতীয় দলের হয়ে সেখানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামতে দেখা যাবে তাদের।
ব্যাটিংয়ে দুজনই নিজ নিজ দলের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম। বাবর এরই মধ্যে নিজেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানে পরিণত করেছেন। লিটনও বছর দুয়েক ধরে ব্যাট হাতে উড়ছেন।
বয়সেও কাছাকাছি বাবর ও লিটন। আজ ২৮তম জন্মদিন লিটনের। দুইদিন পর অর্থাৎ ১৫ অক্টোবর ২৮ বছর পূরণ হবে বাবরের। বয়সে প্রায় সমান হলেও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্সে লিটনের চেয়ে বেশ এগিয়েই গেছেন বাবর। সেখান থেকেই লিটনের শেখার প্রয়াস দেখা গেলো বৃহস্পতিবারের ম্যাচের পর।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগে ক্রাইস্টচার্চে শেষবারের মতো মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। লিটন ও সাকিব আল হাসানের ফিফটি ছাপিয়ে বাবর-রিজওয়ানই পান জয়ের স্বাদ। তবে ম্যাচ শেষে এ দুজনের কাছ থেকেই ব্যাটিংয়ের কিছু পরামর্শ শুনে নিয়েছেন লিটন।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আপলোড করা ভিডিওতে দেখা গেছে, আত্মবিশ্বাসী থাকতে লিটনকে বাইরের কথায় কান না দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বাবর।
“বাইরের কথা যত কম শুনবে, নিজের বিশ্বাস ততটা শক্ত থাকবে। কারণ, না চাইলেও নিজের মধ্যে একটা সন্দেহ-সংশয় চলেই আসে। ভালো খেলতে থাকলেও কেউ হয়তো কিছু একটা বলে দিলো, তখন নিজের মধ্যে ভাবনা চলে আসে সব ঠিক আছে তো!”
একইসময় রিজওয়ানের সঙ্গেও কথা বলেছেন লিটন। দুজনেরই আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে ২০১৫ সালে। ক্যারিয়ারের শুরুতে দুজনেরই ছিল ধারাবাহিকতার অভাব। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ২৫ ম্যাচে কোনো ফিফটি করতে পারেননি রিজওয়ান। কিন্তু পরের ৪৭ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ ফিফটির সঙ্গে একটি সেঞ্চুরি। ধারাবাহিকতার অনন্য নজির দেখিয়ে রিজওয়ান উঠে গেছেন র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে।
ক্যারিয়ারের শুরুতে জাতীয় দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন লিটন। তার ব্যাটিংয়ে ছিল না ধারাবাহিকতা। সেই লিটনই এখন জাতীয় দলের সবচেয়ে বড় ব্যাটিং নির্ভরতা। যেকোনো সংস্করণে দলের সবচেয়ে ছন্দে থাকা ব্যাটসম্যান তিনি। নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যানের সঙ্গে কথা বলেন লিটন।
“নতুন শুরু করাটা জরুরি। তাহলে (আগের) সবকিছু সেখানেই শেষ হয়ে যাবে। কখনও শূন্য হবে, ১০ রানে আউট হবে, সেঞ্চুরিও হবে। আমি একটা জিনিস বিশ্বাস করি, কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছু সম্ভব না। হ্যাঁ, নিজ নিজ দলে কেউ ব্যতিক্রম কিছু করলে তার ফলও আলাদা হতে পারে। আবার কেউ থাকে সাকিবের মতো শক্ত মানসিকতার।"
বৃহস্পতিবারের ম্যাচে ২২ রানের জীবন পেয়েছেন লিটন। সেখান থেকে করেছেন ৬৯ রান। পরে ব্যাট করতে নেমে রিজওয়ান জীবন পান ৩২ রানে। তিনি শেষ পর্যন্ত থামেন ৬৯ রান করে। এটিকে খেলার অংশ হিসেবেই মেনে নিয়ে ক্যাচ ওঠা বা ছোটা নিয়ে বাড়তি চিন্তার পক্ষে নন রিজওয়ান।
“তুমিও জানো, আমিও জানো এটি খেলার অংশ ক্যাচ ছুটবে, সেঞ্চুরি করবে, বড় খেলোয়াড় হয়ে যাবে। লিটন দাস বড় খেলোয়াড়... রিজওয়ানের ক্যাচ ছুটেছে, ম্যাচ জিতেছে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে গেছে। কিন্তু সেটি ক্যাচ হয়ে গেলে এসব কিছুই হতো না।”
“নিজেকে একটি জিনিসের জন্য প্রস্তুত করে ফেলো। ধরে নেবে, আমার জীবনে ১০টি ইনিংস এমন হবে যেখানে আমি আটকে যাবো। আবার ১০টি ইনিংস এমন হবে যেখানে ১২ বলে ২০ লাগলেও আমি করে ফেলবো। কিন্তু বড় খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে এমন হয় যে তারা সবসময় সুস্থির থাকে। যে কারণে ১০ ইনিংসের বদলে ৪টিতে ব্যর্থ হয়, বাকি ৬টিতে সফল হয়ে যায়।"