রাঁচি টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ১৩৪ রানে এগিয়ে আছে ইংলিশরা।
Published : 24 Feb 2024, 05:13 PM
এক ম্যাচ পর একাদশে ফেরা শোয়েব বাশিরকে দিয়ে টানা ৩১ ওভারের স্পেল করালেন বেন স্টোকস। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে চমৎকার বোলিং করে গেলেন তরুণ অফ স্পিনার। সঙ্গে টম হার্টলির বাঁহাতি স্পিনে দিনভর ভারতের ওপর আধিপত্য করল ইংল্যান্ড।
রাঁচি টেস্টের দ্বিতীয় দিন ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থেমেছে ৩৫৩ রানে। এরপর ব্যাটিংয়ে নামা ভারত ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রান নিয়ে শনিবার দিন শেষ করেছে। এখনও ১৩৪ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা।
বিশাখাপাত্নাম টেস্ট দিয়ে অভিষেকের পরের ম্যাচেই একাদশে জায়গা হারান ২০ বছর বয়সী বাশির। দলে ফিরে স্পিন সহায়ক উইকেটের সুবিধা দারুণভাবে কাজে লাগালেন তিনি। ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনই তার শিকার।
দিন শেষে বাশিরের বোলিং বিশ্লেষণ ৩২-৪-৮৪-৪। ভারতের মাটিতে সফরকারী ডানহাতি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে চার বা এর বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন তিনি। বাশির ম্যাচটি শুরু করেছিলেন ২০ বছর ১৩৩ দিন বয়সে। এক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয় ম্যাচের প্রথম দিন।
প্রতিপক্ষকে চেপে ধরতে বড় অবদান রাখেন হার্টলিও। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৯ ওভার করে এই স্পিনার নেন দুই উইকেট।
মূল কাজ বোলিংয়ে এখনও কিছু করতে না পারলেও ব্যাট হাতে দারুণ এক ইনিংস খেলেন রবিনসন। ৩১ রান নিয়ে দিন শুরু করে প্রথম বলেই চার মারেন মোহাম্মদ সিরাজকে। এরপর আকাশ দিপকে ওভারে তিন চারের পর রবীন্দ্র জাদেজাকে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিতে পা রাখেন তিনি ৮১ বলে।
আরেক প্রান্তে দেখেশুনে খেলতে থাকেন ১০৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা জো রুট। তাদের ব্যাটে ৭ উইকেটে ৩০২ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ডের রানও বাড়তে থাকে।
ফিফটির পর অবশ্য ইনিংস বেশিদূর টানতে পারেননি রবিনসন। ১ ছক্কা ও ৯ চারে ৫৮ রান করা এই ক্রিকেটারের বিদায়ে ভাঙে ১০২ রানের জুটি। এরপর টপাটপ বাকি দুই উইকেটও হারায় ইংল্যান্ড। দলটির শেষ তিন উইকেটই নেন জাদেজা।
২৭৪ বল খেলে ও ৩৬২ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে রুট অপরাজিত থাকেন ১২২ রানে। তার মাস্টারক্লাস ইনিংসটি গড়া ১০ চারে।
ভারতের ইনিংসে দ্বিতীয় ওভারেই ছোবল দেন অ্যান্ডারসন। তার দারুণ ডেলিভারিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন রোহিত শার্মা। দুই পেসার দিয়ে ৮ ওভার করানোর পর বাশিরকে আক্রমণে আনেন স্টোকস।
প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ইয়াশাসবি জয়সওয়াল ও শুবমান গিল। জমে যাওয়া ৮২ রানের এই জুটি নিজের নবম ওভারে ভাঙেন বাশির। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ৬ চারে ৩৮ রানে এলবিডব্লিউ হওয়া গিল।
থিতু হয়ে যাওয়া রাজাত পাতিদারও বাশিরের শিকার। ক্রিজে গিয়েই হার্টলিকে টানা দুই ছক্কায় প্রতিপক্ষকে পাল্টা চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেন জাদেজা। কিন্তু তাকেও টিকতে দেননি বাশির।
নিজের মতো খেলে যান আগের দুই টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা জয়সওয়াল। ভারতীয় ব্যাটিং সেনসেশন ৮৯ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। আভাস দেন আরেকটি বড় ইনিংস খেলার, কিন্তু বাশিরের নিচু হয়ে যাওয়া বলে হয়ে যান বোল্ড। শেষ হয় তার ১ ছক্কা ও ৮ চারে ১১৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস।
অনেকটা সময় উইকেটে কাটানো সারফারাজ খানকে বিদায় করেন হার্টলি। স্লিপে চমৎকার ক্যাচ নেন রুট। এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে এলবিডব্লিউ করেন হার্টলি।
১৭৭ রানে ৭ উইকেট হারানো ভারতকে অল্পতে থামিয়ে বড় লিডের স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। আশায় ছিল, এদিনই প্রতিপক্ষের ইনিংস গুটিয়ে দেওয়ার। কিন্তু তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান ধ্রুভ জুরেল ও কুলদিপ ইয়াদাভ।
দুইজনে প্রায় ১৮ ওভার খেলে ৪২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন। ৩০ রানে খেলছেন জুরেল, ১৭ রানে অপরাজিত কুলদিপ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১০৪.৫ ওভারে ৩৫৩ (আগের দিন ৩০২/৭) (রুট ১২২*, রবিনসন ৫৮, বাশির ০, অ্যান্ডারসন ০; সিরাজ ১৮-৩-৭৮-২, আকাশ ১৯-০-৮৩-৩, জাদেজা ৩২.৫-৭-৬৭-৪, অশ্বিন ২২-১-৮৩-১, কুলদিপ ১২-৪-২২-০, জয়সওয়াল ১-০-৬-০)
ভারত ১ম ইনিংস: ৭৩ ওভারে ২১৯/৭ (জয়সওয়াল ৭৩, রোহিত ২, গিল ৩৮, পাতিদার ১৭, জাদেজা ১২, সারফারাজ ১৪, জুরেল ৩০*, অশ্বিন ১, কুলদিপ ১৭*; অ্যান্ডারসন ১২-৪-৩৬-১, রবিনসন ৯-০-৩৯-০, বাশির ৩২-৪-৮৪-৪, হার্টলি ১৯-৫-৪৭-২, রুট ১-০-১-০)