‘সাকিবের অনুরোধে ও দলকে সাহস দিতে’ টিম হোটেলে বিসিবি প্রধান

সাকিব আল হাসানের অনুরোধে টিম হোটেলে গেলেও অবশ্য তার দেখা পাননি বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2023, 05:20 PM
Updated : 2 March 2023, 05:20 PM

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে হারের পর বৃহস্পতিবার বিশ্রামে কাটিয়েছে বাংলাদেশ দল। ছিল না কোনো অনুশীলন। তবে সন্ধ্যার পর টিম হোটেলে যান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। পরে তিনি বলেন, হেরে যাওয়া দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস জোগাতে গিয়েছিলেন তিনি। একইসঙ্গে জানান তিনি সাকিব আল হাসানের অনুরোধের কথাও।

প্রথম ম্যাচের দুই দিন আগেও এক দফায় টিম হোটেলে গিয়েছিলেন নাজমুল। সাকিব তখন ব্যস্ত ছিলেন একটি পণ্যের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানে। সেদিন তাই এই অলরাউন্ডারের দেখা পাননি বিসিবি সভাপতি। সাকিবের অনুরোধে দ্বিতীয় ম্যাচের আগেও গেলেন বিসিবি প্রধান। কিন্তু একই কারণে এবারও দেখা হয়নি তাদের দুজনের।

দলের বাকিদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ শেষ করে রাত ৯টার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন নাজমুল। 

“আসলে আমি (দলকে) কোনো বার্তা দেইনি। এখানে আসার পেছনে কারণ ছিল একটাই। এর আগে প্রথম ম্যাচের আগে যেদিন এলাম, সেদিন সাকিবকে পাইনি। যে কারণে সাকিবের অনুরোধে আজকে আবার দ্বিতীয় দিনে এলাম। সাকিবসহ আবার... এসেছিলাম একটু ওদের দেখতে, একটু সাহস দিতে, কথা বলতে।” 

“কয়েকটা দল আছে যাদের সঙ্গে জেতাটা সহজ নয়। আমাদের ভালো খেলতে হবে। হারা-জেতাটা বড় নয়। একটু সাহসও দেওয়ার জন্য... এটাই বলেছি। আমার জানামতে, তারা (প্রথম ম্যাচে) পরিকল্পনা অনুযায়ীই সব কাজ করেছে। আমরা সুযোগও পেয়েছিলাম। সুযোগ সবসময় আসে না।”

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে একটি পণ্যের প্রচারমূলক অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন সাকিব। তাই তার সঙ্গে দেখা না করেই চলে যেতে হয় নাজমুলকে।  

“সাকিবের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। ও ফোন করে জানাল যে বাইরে আছে, আসতে একটু দেরি হবে। ও আমাকে বলেছিল, ‘আপনি ৯টার পরে আসেন।’ আমি ওকে বললাম, ‘দেখো, তুমি যখন একটা কাজে আছো, থাকো। আমার তেমন কিছু বলার নেই। আমি এমনি আসছি, ওদের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছি। তবে তোমার সঙ্গে রাতে টেলিফোনে কথা বলব।’ তো আমি রাতে ফোনে কথা বলব। কথা বলার আর কী আছে... একটু সাহস দেওয়া।”

সিরিজ শুরুর আগে থেকে যে প্রসঙ্গ নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশের ক্রিকেট, সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে আবার। কিছুদিন আগে ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের দ্বন্দ্বের কথা সরাসরিই বলেছিলেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ‘গ্রুপিং।’ পরে অবশ্য সেই কথা অস্বীকার করে তিনি দায় চাপান সংবাধমাধ্যমকে। সেই প্রসঙ্গে তিনি আবারও দায় চাপালেন সংবাদমাধ্যমকেই।

“আমি তো বলি নাই ওদের মধ্যে কোনো সমস্যা আছে। আমাকে বলেছে, এটা ‘কমন সিক্রেট অ্যান্ড ‘ওয়েল নোন’, যে ওদের মধ্যে যে ঝামেলা হচ্ছে, এটার ড্রেসিংরুমের অবস্থা খারাপ… আমি তো বলিনি, আপনারা বলছেন! আমি উত্তর দিয়েছি যে, এটা ওদের সাথে আমার কথা হয়েছে, খেলায় কোন প্রভাব পড়বে না। খেলায় প্রভাব না পড়লে আমার সমস্যা নেই। বাইরে কী হচ্ছে ওটা আমার দেখার বিষয় না।”

“এই প্রশ্নটা আমার নয়। এই কথাটা আমি তুলিনি। কিন্তু এমন একটা ভাব দেখানো হচ্ছে যে, আমি প্রশ্নটা তুলেছি। এখানে আমি আনিনি, আপনারাই প্রশ্ন করেন।”

বিসিবি সভাপতির মতে, তার কথা ভুল হলেও এখন এই প্রসঙ্গ এখানেই শেষ হওয়া উচিত।

“আমি দ্বিতীয় দিন যখন এখানে এলাম, শুধু সাকিব-তামিম ও কোচের সঙ্গে বসেছিলাম অনেকক্ষণ। তখনও তারা কথা বলেছে। তামিম একটা প্রশ্ন করেছিল যে, ও (সাকিব) কী মনে করে এবং সে জবাব। তো ফাইন… কালকে মাঠেও দেখেছি। কাজেই এটাকে এখানেই শেষ করে দেওয়া উচিত। খামোখা ঘোলাটে করে জোর করে ঝামেলা বাধানোর দরকার নেই।”

“আমি যদি একটা কথা বলেও থাকি, যে একটা কথা বলা আমার ঠিক হয়নি বা ভুল, যেটা ঠিক না…যে জিনিসটা খারাপ, এটা যদি ঠিক না হয়, তাহলে তা ভালো! তার মানে আমি ভুল হওয়াটাই তো ভাল। মানে আপনাদের এটাকেই খুশি হওয়ার কথা। আপনারা কি খুশি হতেন যে আসলেই গণ্ডগোল হতো!”

শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার দুপুর ১২টায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে ৩ উইকেটের জয়ে সিরিজে এগিয়ে ইংলিশরা।