স্টোকস-ফোকসের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের বড় লিড

দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে এখনও ২৪১ রানে এগিয়ে বেন স্টোকসের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2022, 06:50 PM
Updated : 26 August 2022, 06:50 PM

ব্যাট হাতে সামনে থেকে পথ দেখালেন বেন স্টোকস। দারুণ এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। বিপদে পড়া দলকে কক্ষপথে ফেরাতে তাকে সঙ্গ দেওয়া বেন ফোকসও পেলেন তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া। তাদের ব্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আড়াইশ ছাড়ানো লিড পেল ইংলিশরা।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টের দ্বিতীয় দিন ৯ উইকেটে ৪১৫ রান করে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। লিড নেয় তারা ২৬৪ রানের।

শুক্রবার দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা কোনো উইকেট না হারিয়ে করে ২৩ রান। প্রথম ইনিংসে ১৫১ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটি স্বাগতিকদের চেয়ে এখনও ২৪১ রানে পিছিয়ে।

ইংল্যান্ডকে চারশ ছাড়ানো পুঁজি এনে দেওয়ার কারিগর স্টোকস ও ফোকস। ষষ্ঠ উইকেটে দুইজনে গড়েন ৩২৪ বল স্থায়ী ১৭৩ রানের জুটি। স্টোকস ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ১০৩ রান করেন। ৯ চারে ১১৩ রান করে ফোকস থেকে যান অপরাজিত।

ম্যানচেস্টারে এদিন আকাশ ছিল একদম পরিষ্কার। জ্বলজ্বল করছিল সূর্য। শুরুতে ব্যাটিং কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হলেও সময়ের সঙ্গে সহজ হয়ে যায়। উইকেট থেকে কিছুটা সহায়তা পান স্পিনাররা।

৩ উইকেটে ১১১ রান নিয়ে খেলতে নামা ইংল্যান্ড শিবিরে শুরুতেই ছোবল দেন পেসার আনরিক নরকিয়া। পরপর দুই ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো ও জ্যাক ক্রলিকে।

নরকিয়ার রিভার্স সুইংয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন ৭ চারে ৪৯ রান করা বেয়ারস্টো। ভাঙে ৯১ রানের জুটি। দৃঢ়তার সঙ্গে দলকে এগিয়ে নেওয়া ক্রলি ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। শেষ হয় ইংলিশ ওপেনারের ১০১ বল স্থায়ী ৩৮ রানের ইনিংস।

দ্রুত দুই উইকেট পড়ার পর ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ১৪৭/৫। চাপে পড়া দলের হাল ধরেন স্টোকস ও ফোকস। দুইজনে দেখেশুনে এগিয়ে নিতে থাকেন স্বাগতিকদের। দিনে প্রথমবার আক্রমণে এসে জুটি প্রায় ভেঙেই ফেলেছিলেন কেশভ মহারাজ।

তার প্রথম বলটিই আঘাত হানে ফোকসের প্যাডে। এলবিডব্লিউর আবেদনে আঙুলও তুলে দেন আম্পায়ার। ব্যাটসম্যান রিভিউ নিলে দেখা যায় বল পিচ করেছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। বেঁচে যান ২৮ রানে থাকা ফোকস।

লাঞ্চের পর মহারাজের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে অল্পের জন্য বোল্ড হননি স্টোকস। সাইমন হার্মারকে পরে ছক্কায় উড়িয়ে ফিফটিতে পা রাখেন তিনি ১০১ বলে।

কয়েক ওভার পর ফিরতে পারতেন ৭২ রানে থাকা স্টোকস। লুঙ্গি এনগিডির স্লোয়ার ইয়র্কারে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন তিনি। রিপ্লেতে দেখা যায় বল লেগেছিল ব্যাটে।

এরপর দ্রুত কিছু রান তুলে নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে যান ইংলিশদের অনেক জয়ের নায়ক স্টোকস। ৯২ রানে তাকে ফেরানোর কঠিন সুযোগ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এনগিডির বলে জোরের ওপর ব্যাট চালান স্টোকস। অনেকটা লাফিয়ে বল মুঠোয় জমাতে পারেননি এক্সট্রা কাভারে থাকা এইডেন মারক্রাম।

৯৮ রান নিয়ে চা বিরতিতে যাওয়া স্টোকস ফেরার পর দ্বিতীয় ওভারেই কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন, ১৫৮ বলে। ক্যারিয়ারে যা তার দ্বাদশ টেস্ট সেঞ্চুরি। ইংলিশদের নেতৃত্ব নেওয়ার পর প্রথম শতক।

সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি স্টোকস। কাগিসো রাবাদার লেংথ বল উড়িয়ে মেরে তুলে দেন আকাশে। সহজ ক্যাচ নিয়ে প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে বিদায় করেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ডিন এলগার।

১১৬ বলে ফিফটি করা ফোকস চালিয়ে যান লড়াই। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি ২০৬ বলে। ইংলিশ কিপার-ব্যাটসম্যানের এটি দ্বিতীয় টেস্ট শতক। ২০১৮ সালের নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার গলে খেলেছিলেন তিনি ১০৭ রানের ইনিংস।

জ্যাক লিচের বিদায়ের পরপরই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় ইংলিশরা।

শেষ বেলায় দুয়েকটি উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেলার যে পরিকল্পনা করেছিল ইংল্যান্ড, তা সফল হয়নি। দুই ওপেনার অধিনায়ক ডিন এলগার ও সারেল এরউইয়ার ব্যাটে নিরাপদেই বাকি সময় কাটিয়ে দেয় সফরকারীরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৫১

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১০৬.৪ ওভারে ৪১৫/৯ ডিক্লে. (আগের দিন ১১১/৩) (ক্রলি ৩৮, বেয়ারস্টো ৪৯, স্টোকস ১০৩, ফোকস ১১৩*, ব্রড ২১, রবিনসন ১৭, লিচ ১১; রাবাদা ২৩-২-১১০-২, এনগিডি ১৮-৩-৬১-১, নরকিয়া ২০-১-৮২-৩, মহারাজ ২২.৪-৪-৭৮-২, হার্মার ২৩-৪-৭৩-১)

দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৯ ওভারে ২৩/০ (এরউইয়া ১২*, এলগার ১১*; অ্যান্ডারসন ২-১-৫-০, রবিনসন ৪-০-১৫-০, লিচ ৩-১-৩-০)