মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ে দুর্ভাবনার কিছু দেখেন না ডমিঙ্গো

নেট সেশনে মঙ্গলবার অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2022, 02:32 PM
Updated : 6 Dec 2022, 02:32 PM

বাংলাদেশ দলের সাইডআর্ম থ্রোয়ার মোহাম্মদ রমজানের বল সজোরে ড্রাইভ খেলেই দৌড় শুরু করলেন মাহমুদউল্লাহ। মিরপুরের ইনডোর পেরিয়ে তার দৌড় থামল মূল মাঠের মাঝামাঝি পৌঁছে। চোখেমুখে তখন তার তৃপ্তির ছাপ। প্যাড-হেলমেট খুলে ঢুকে গেলেন ড্রেসিংরুমে। তার অভিব্যক্তিতে ফুটে উঠল, নেট অনুশীলনে যা ছিল তার চাওয়া, তা মিলেছে অনেকটাই।

মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরে মঙ্গলবার মাহমুদউল্লাহর নেট সেশনের শুরুটা এত স্বস্তির ছিল না। আর্ম থ্রোয়ারে রাসেল ডমিঙ্গোর ছোঁড়া লেগ স্টাম্পের ওপর করা বলগুলো ঠিকঠাক খেলতে পারছিলেন না অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। কাছে গিয়ে মাহমুদউল্লাহর সমস্যাটা কয়েকবার দেখিয়ে দেন প্রধান কোচ।

কোচের সেই পরামর্শ অনুযায়ী খেলা রপ্ত করতে কিছুটা সময় লেগে যায় মাহমুদউল্লাহর। লেগ স্টাম্পের ওপর হাফভলিতে ফ্লিক করলেও পাচ্ছিলেন না টাইমিং। বেশ কয়েকটি বল খেলার পর কোচের চাওয়া মিটিয়ে দুর্দান্ত টাইমিংয়ে খেলেন ফ্লিক শট। তাতে আত্মবিশ্বাসও পেয়ে যান। এরপর প্রায় প্রতিটি বলেই সাবলীল ছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাট।

দারুণ দুটি পুল শটের পর দেখার মতো কিছু ড্রাইভ খেলেন মিডল অর্ডারের অভিজ্ঞ সেনানি। তাতে হাসি ফোটে ডমিঙ্গোর মুখে।

সুনির্দিষ্ট এই অনুশীলনের কারণটা বুঝে নিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে লেগ স্টাম্প লাইনের বল ফ্লিক করতে গিয়েই যে উইকেট হারান মাহমুদউল্লাহ।

৩৫ বল খেলে এই ম্যাচে স্রেফ ১৪ রান করতে পারেন তিনি। তার ও মুশফিকের জুটির সময় গতি হারায় বাংলাদেশের ইনিংস। পরেও তার ওই আউটে দলের চাপ বেড়ে যায় আরও।

সেই আউট যেমন চোখে লেগেছে ডমিঙ্গোর, তেমনি চোখে পড়েছে তার খেলার ধরনও। দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে কোচের বিশ্লেষণে উঠে এলো মাহমুদউল্লাহর আগের ম্যাচর ব্যাটিং।

“স্রেফ বাউন্ডারি মারার ব্যাপার নয় এটি নয়, ব্যাপারটি হলো তাড়নার। আমার মনে হয়, (প্রথম ম্যাচে) তার তাড়না কমে গিয়েছিল, কারণ রান করার চেয়ে টিকে থাকায় তার মনোযোগ ছিল বেশি। এজন্যই লেগ স্টাম্পের ওপর ওই হাফ ভলি সে মিস করেছে। রানের খোঁজে থাকলে হয়তো ওই শটে সে চার মারত কিংবা দুই নিত।”

“(নেট সেশনে) তাই নিশ্চিত করছিলাম যে, স্রেফ উইকেট আঁকড়ে রাখার চেয়ে যেন আমরা ইতিবাচকতার রুটিনে ও ছন্দে ফিরতে পারি।”

একসময় যিনি ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা, সেই মাহমুদউল্লাহর স্ট্রাইক রেটের এ দৈন্য দশা চলছে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পর থেকেই। এই সময়ে ওয়ানডেতে ৮০৬ রান তার। ব্যাটিং গড় তার মোটামুটি ভালো (৪০.৩০) হলেও স্ট্রাইক রেট মোটে ৭৪.০৮। বলার অপেক্ষা রাখে না, দ্রুত রান তোলার কাজটা যথাযথভাবে করতে পারছেন না ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।

ডমিঙ্গো অবশ্য এখনই ভরসা হারাচ্ছেন না। মাহমুদউল্লাহকে একসময় বলা হতো বাংলাদেশের ‘ক্রাইসিস ম্যান।’ বিপদের সময়ও এখনও তার ওপরই বাজি ধরতে রাজি বাংলাদেশের প্রধান কোচ।

“জিম্বাবুয়েতে শেষ দুই ম্যাচে ৮০ ও ৩৯ রান করেছে মাহমুদউল্লাহ। এক ম্যাচ আগেও ৮০ রান করেছে। এই মুহূর্তে তাকে নিয়ে আমার কোনো দুর্ভাবনা নেই। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে সবার ক্ষেত্রেই এমন সময় আসে। তার ব্যাটিং ও সামর্থ্যের ওপর এখনও আমার পূর্ণ আস্থা আছে।”