টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে দীর্ঘ ওভার এই তিন পেসারের।
Published : 31 Oct 2022, 04:11 PM
প্রথম স্পেলের দুই ওভার খারাপ হয়নি মার্ক অ্যাডায়ারের। কিন্তু নিজের তৃতীয় ওভারটি করতে এসে আয়ারল্যান্ডের এই পেসার যেন খেই হারিয়ে ফেললেন। করতে থাকলেন একের পর এক ওয়াইড। এতে ১১ বলের ওভার দেখল এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
ব্রিজবেনে সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে এই দীর্ঘ ওভার করেন অ্যাডায়ার। পাঁচ ওয়াইড, তিন চার ও এক ছক্কার ওভার থেকে আসে ২৬ রান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আসরে মুস্তাফিজুর রহমানেরও হয়েছিল এমন বিব্রতকর অভিজ্ঞতা। ওমানের বিপক্ষে প্রাথমিক পর্বের ম্যাচে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে পাঁচ ওয়াইড দিয়ে ১১ বলের ওভার করেন বাঁহাতি এই পেসার। মাঝে একটি ছক্কা হজম করে ওভারে মোট রান দেন ১২।
মুস্তাফিজ ও অ্যাডায়ার ছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১১ বলের ওভার করার তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার সোহাইল তানভিরের। ২০০৯ সালের আসরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ১১ বল করেন তিনি। সেদিন ‘নো’ বল দিয়ে ওভার শুরু করেন তানভির।
পরে আরও একটি নো বল ও তিনটি ওয়াইডের সঙ্গে তিন চার হজম করে ১৮ রান খরচ করেন তানভির। একই স্পেলে পরের ওভারে এক ‘নো’ বল ও দুই ওয়াইডে ৯ বলের ওভার করেন তিনি। এই ওভারে আসে ১১ রান। মোট ২০ বল করে দুই ওভার শেষ করেন এ বাঁহাতি পেসার।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য এর চেয়েও দীর্ঘ ওভার আছে তিনটি। ২০১৯ সালে মালদ্বীপের বিপক্ষে ১৪ বলের ওভার করেন ভুটানের থিনলি জামৎসো। এছাড়া ২০২১ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার সিসান্দা মাগালা ও একই মাসে নামিবিয়ার বিপক্ষে ১২ বলের ওভার করেন উগান্ডার কসমাস কিয়োতা।
গ্যাবায় এদিন পাওয়ার প্লেতে ২ ওভার করে ১৭ রান দেন অ্যাডায়ার। পরে তাকে আক্রমণে আনা হয় পঞ্চদশ ওভারে। ছন্দ হারিয়ে ওভারটি যে শেষই করতে পারছিলেন না তিনি।
ওভারের প্রথম বলে তাকে চার মারেন মার্কাস স্টয়নিস। পরের বলটি ওয়াইড করেন অ্যাডায়ার। বৈধ দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারিতে দারুণ ফিল্ডিংয়ে ক্যাচের সম্ভাবনা জাগান ব্যারি ম্যাককার্থি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেঁচে যান স্টয়নিস।
পরের বলে চার মারেন অস্ট্রেলিয়ান এই অলরাউন্ডার। এরপর আসে সিঙ্গেল। টানা তিনটি ওয়াইড দেওয়ার পর বৈধ বলটিতে চার হজম করেন অ্যাডায়ার। এরপর আবারও ওয়াইড। ওভারের শেষ বলে এই পেসার দেন ফুলটস, স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে ৩৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন অ্যারন ফিঞ্চ।
নিজের কোটার শেষ ওভারটিও ভালো করতে পারেননি অ্যাডায়ার। তিন চারে রান দেন ১৭। তার শেষ দুই ওভার থেকে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৪৩ রান।
৪ ওভারে উইকেটশূন্য থেকে অ্যাডায়ার রান দেন ৫৯। টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের হয়ে যৌথভাবে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দলটির হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬৯ রান দেওয়ার বিব্রতকর রেকর্ড ম্যাককার্থির। ৫৯ রান দেওয়ার অভিজ্ঞতাও আছে এই পেসারের।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরও অনেক লম্বা ওভারের নজির আছে বেশ কিছু। ‘বল বাই বল’ তথ্য রাখা শুরুর পর থেকে দীর্ঘতম ওভারটি মোহাম্মদ সামির। সেটি ছিল এশিয়া কাপের ম্যাচে।
২০০৪ এশিয়া কাপে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ টি ওয়াইড ও ৪টি নো বল করেছিলেন সামি। সঙ্গে বৈধ ৬ বল মিলিয়ে ১৭ বলে শেষ হয় ওভার! রান আসে ২২টি।
ওয়াইড ছাড়াই ১৫ বলের একটি ওভার দেখেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। যেটি করেছিলেন সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলারদের একজন কার্টলি অ্যামব্রোস!
১৯৯৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থ টেস্টে এক ওভারে ৯টি ‘নো’ বল করেছিলেন তিনি। ওভারটি ছিল ১৫ বলের। তবে ওই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান এই বোলিং গ্রেটই।