লম্বা সময় ধরে টেস্টে নিজেকে সেরা রূপে মেলে ধরতে পারছিলেন না বিরাট কোহলি। টুকটাক রান পেলেও বড় ইনিংস ধরা দিচ্ছিল না তার ব্যাটে। শতকের স্বাদ তো ভুলতে বসেছিলেন এই তারকা ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দীর্ঘ সেই সেঞ্চুরি খরা কাটিয়ে এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন কোহলি। বললেন, দলের জন্য বড় রান করতে না পারা ভোগাচ্ছিল তাকে।
ড্র হওয়া আহমেদাবাদ টেস্টে ব্যাটিং মাস্টারক্লাস মেলে ধরেন কোহলি। একমাত্র ইনিংসে করেন ১৮৬ রান। তার ৩৬৪ বল ও ৫১৭ মিনিট স্থায়ী ইনিংসটিতে ছিল ১৫টি চার।
এই ইনিংসের আগে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে টেস্টে সেঞ্চুরি করতে পারছিলেন না কোহলি। এই সংস্করণে তার আগের শতকটি ছিল ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর, বাংলাদেশের বিপক্ষে কলকাতায়। ৪১ ইনিংস পর ২৮তম তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পান তিনি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই সেঞ্চুরির পর তিন সংস্করণ মিলিয়েই সেঞ্চুরি করতে যেন ভুলে গিয়েছিলেন কোহলি। তার সেই দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হয় গত সেপ্টেম্বরে, এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে। এই সংস্করণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যা তার প্রথম শতক।
গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে চট্টগ্রামে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে কাটান ওয়ানডের সেঞ্চুরি খরা। কিন্তু টেস্টে সুসময়ের দেখা পাচ্ছিলেন না কোনোভাবেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম তিন টেস্টে তো ফিফটিই করতে পারেননি তিনি।
অবশেষে নিজেকে খুঁজে পান কোহলি আহমেদাবাদে, সিরিজের শেষ টেস্টে। বড় ইনিংস খেলতে কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন, ম্যাচের পর বিসিসিআই টিভিতে কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে আলাপচারিতায় সেটা তুলে ধরেন তিনি।
“ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন অঙ্কের ছোঁয়া পেতে মরিয়া ভাব বাড়তেই পারে, আর আমি নিজেই সেটাকে কিছুটা বাড়তে দিয়েছি। ৪০-৪৫ রানে খুশি হওয়ার মতো মানুষ আমি নই, যখন আমি জানি ১৫০ রান করে দলকে সাহায্য করতে পারি। এটাই আমাকে কিছুদিন ধরে পোড়াচ্ছিল।”
“দলের জন্য বড় ইনিংস খেলতে না পারা আমাকে বিরক্ত করত। কারণ দলের প্রয়োজনে আমি বিভিন্ন কন্ডিশন ও পরিস্থিতিতে পারফর্ম করতাম এবং এজন্য সবসময় গর্ববোধ করি। এটা মাইলফলকের বিষয় নয়। সেঞ্চুরি এমন কিছু, যা দলের জন্য যতক্ষণ সম্ভব ব্যাটিং করা ও যতটা সম্ভব রান করার আমার যে লক্ষ্য থাকে সে পথচলায় হয়ে যায়।”
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলবে ভারত। আগামী ৭ জুন দা ওভালে শুরু হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি। সবকিছু ঠিক থাকলে ওই লড়াইয়ে নিশ্চিতভাবেই খেলবেন কোহলি। আর এমন একটি ম্যাচের আগে রানে ফিরতে পেরে স্বস্তি পাচ্ছেন তিনি।
“সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি দলের জন্য ভালো পারফর্ম করতে পারা অনেক তৃপ্তির। এখন আমি নির্ভার থেকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলতে যাব।”