ব্যাটসম্যানদের দাপটের দিনে ৫ সেঞ্চুরি

ব্যতিক্রম দেখা গেছে রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2022, 02:02 PM
Updated : 8 Nov 2022, 02:02 PM

জাতীয় লিগের পঞ্চম রাউন্ডের প্রথম দিন দাপট দেখান বোলাররা। তবে দ্বিতীয় দিনে ঠিক উল্টো চিত্র। এবার বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুড়িয়ে সেঞ্চুরি করেছেন পাঁচ জন ব্যাটসম্যান। 

সিলেটের বিপক্ষে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ঢাকা বিভাগের আব্দুল মজিদ ও শুভাগত হোম চৌধুরী। ঢাকা মেট্রোর হয়ে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও শরিফউল্লাহ। রংপুরের পক্ষে এই স্বাদ পেয়েছেন নাঈম ইসলাম।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে প্রথম স্তরের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৪৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে ঢাকা। দ্বিতীয় দিন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তারা অল আউট হয়েছে ৪৫৭ রানে। প্রথম ইনিংসে তাদের ছিল ৩৭ রানের লিড। 

ম্যাচের প্রথম দিন ঢাকা গুটিয়ে গিয়েছিল ১১৩ রানে। জবাবে সিলেটের ইনিংস থামে স্রেফ ৭৬ রানে। শেষ দুই দিনে কঠিন অভিযানে নামতে হবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দলটিকে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ১১৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল ঢাকা। দারুণ খেলতে থাকা জয়রাজ শেখ আউট হন ৭৩ রান করে। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন তাইবুর পারভেজ ও রকিবুল হাসান। দুজন প্রথম ইনিংসেও শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন।

পঞ্চম উইকেটে ২৫৪ রানের জুটি গড়েন শুভাগত ও মজিদ। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ১৭তম সেঞ্চুরিতে ১৪৫ রান করেন শুভাগত। দ্বাদশ সেঞ্চুরি হাঁকানো মজিদের ব্যাট থেকে আসে ১৭৬ রান। 

সিলেটের পক্ষে ৪ উইকেট নেন মহিউদ্দিন তারেক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ঢাকা ১ম ইনিংস: ১১৩

সিলেট ১ম ইনিংস: ৭৬

ঢাকা ২য় ইনিংস: ১০৪.৩ ওভারে ৪৫৭ (আগের দিন ১১৩/১) (জয়রাজ ৭৩, মজিদ ১৭৬, রকিবুল ০, তাইবুর ০, শুভাগত ১৪৫, নাদিফ ৯, নাজমুল ১১, সুমন ১৩, শাকিল ৮, রিপন ১*; আবু জায়েদ ১৮-০-৭২-২, তারেক ২৭৩-১১৪-৪, নাবিল ৩৩-৫-১১০-১, এনামুল জুনিয়র ১৪-০-৯১-০, শাহানুর ১২.৩-১-৫৮-৩)

তানজিদের জবাবে নাঈম-শরিফউল্লাহ সেঞ্চুরি

কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে বড় লিড দাঁড় করাচ্ছে ঢাকা মেট্রো। দ্বিতীয় দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩৬৭ রান। 

এরই মধ্যে তারা এগিয়ে গেছে ১১৫ রানে। প্রথম ইনিংসে তানজিদ হাসান তামিমের সেঞ্চুরির পরও রাজশাহী ২৫২ রানের বেশি করতে পারেনি।

বিনা উইকেটে ১০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল মেট্রো। দ্বিতীয় দিনে ৮৬ ওভার খেলে ৩৫৭ রান যোগ করেছে তারা। 

ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করে ৯৩ বলে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন নাঈম শেখ। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় করেন ১১২ রান। 

পরে হতাশ করেন আইচ মোল্লা, শামসুর রহমান শুভ, জাহিদুজ্জামান খানরা। ষষ্ঠ উইকেটে ১৭৭ রানের জুটি গড়েন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও শরিফউল্লাহ। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১০০ রানেই আউট হন শরিফউল্লাহ। 

দিন শেষে ৭৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন আমিনুল। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ২৫২

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৮৯ ওভারে ৩৬৭/৭ (আগের দিন ১০/০) (নাঈম শেখ ১১২, রাকিন ৩, আইচ ২৩, শামসুর ৩৪, জাহিদুজ্জামান ১২, আমিনুল ৭৮*, শরিফউল্লাহ ১০০, আবু হায়দার ০, কাজী অনিক ০*; নাহিদ ১২-১-৭২-৪, সানজামুল ২৯-৫-১১৩-১, শফিকুল ১৪-১-৫১-১, ফরহাদ ১৭-৩-৪৯-১, পায়েল ১৪-১-৬২-০, সাব্বির ৩-০-১৬-০)

নাঈম ইসলামের সেঞ্চুরিতে রংপুরের বড় লিড

বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে প্রথম স্তরের ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে বড় লিড নিয়েছে রংপুর বিভাগ। অপরাজিত সেঞ্চুরিতে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান নাঈম ইসলাম। 

দ্বিতীয় দিন শেষে রংপুরের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩৬৩ রান। তারা এগিয়ে গেছে ২৬৩ রানে। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল স্রেফ ১০০ রানে।

১ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন খেলতে নেমেছিল রংপুর। দ্বিতীয় ওভারেই আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিদায়ে উইকেটে যান নাঈম। সারা দিন আর তাকে আউট করতে পারেনি চট্টগ্রাম।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দিন শেষে ১৩১ রানে অপরাজিত রয়েছেন নাঈম। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এটি তার ২৯তম সেঞ্চুরি। এছাড়া নাসির হোসেন করেছেন ৪৮ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১০০

রংপুর ১ম ইনিংস: ১২৪ ওভারে ৩৬৩/৭ (আগের দিন ৫৭/১) (মামুন ৩৮, তানবীর ২৮, নাইম ১৩১*, নাসির ৪৮, আকবর ১১, আরিফুল ৩০, শুভ ২৫, রবিউল ২৮*; সাইফউদ্দিন ২০-৪-৫৪-২, মেহেদি ২৬-৭-৭৪-৩, সৈকত ১৩-২-৩১-০, মুরাদ ৩২-৫-৯৭-০, রনি ১২-৪-২২-০, মহিউল ২১-৬-৬৯-২)

ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কায় বরিশাল

ব্যাটসম্যানদের দাপটের দিনে ভিন্ন চিত্র কেবল রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে। খুলনার বোলারদের তোপে ফলো-অনে পড়েছে বরিশাল বিভাগ। ইনিংস পরাজয় এড়ানোর অভিযানে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে তারা।

দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচটিতে খুলনা প্রথম ইনিংসে করেছে ৩১৫ রান। জবাবে ১৪৫ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল। ১৭০ রানের লিড থাকায় তাদের ফলো-অন করায় খুলনা। 

দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান করেছে বরিশাল। ইনিংস পরাজয় এড়াতে ৭ উইকেটে আরও ১২৪ রান করতে হবে তাদের। 

৭ উইকেটে ২৬৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল খুলনা। ফিফটির সম্ভাবনা জাগিয়েও ৪৩ রানে আউট হন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। টিপু সুলতানের ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। পুরো ইনিংসে কেউই পঞ্চাশ করতে পারেননি।

বরিশালের পক্ষে ৪ উইকেট নেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। সোহাগ গাজীর শিকার ৩ উইকেট।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে খুলনার বোলারদের সামনে টিকতে পারেনি বরিশালের কোনো ব্যাটসম্যান। সর্বোচ্চ ২৩ রান আসে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান শামসুল ইসলাম অনিকের ব্যাট থেকে। 

৩টি করে উইকেট নেন আলআমিন হোসেন ও আশিকুর রহমান। 

দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮ ওভারের মধ্যেই প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছে বরিশাল। তৃতীয় দিন সালমান হোসেন ইমন ও মোহাম্মদ আশরাফুল ইনিংস পরাজয় এড়ানোর অভিযানে ব্যাটিং শুরু করবেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)

খুলনা ১ম ইনিংস: ১০২ ওভারে ৩১৫ (আগের দিন ২৬৪/৭) (মৃত্যুঞ্জয় ৪৩, টিপু ৪০, আশিকুর ৮*, আল আমিন ৪; রাব্বি ২৭-৩-৮৯-৪, রুয়েল ১৬-৩-৬০-০, সালমান ২-০-৯-০, তানভির ২০-৫-৫৩-২, সোহাগ ১৮-৫-৬০-৩, মইন ১৪-৩-২২-১, ইফতি ৫-১-১৩-০)

বরিশাল ১ম ইনিংস: ৪৭.২ ওভারে ১৪৫ (আবু সায়েম ১৬, ইফতি ১, ফজলে রাব্বি ৬, সালমান ০, আশরাফুল ৫, শামসুল ২৩, মইন ১৬, সোহাগ ৩১, রাব্বি ১৮, তানভির ১৫* রুয়েল ১; জিয়াউর ১২-৫-৩৫-১, আল আমিন ১০-২-২৮-৩, আশিকুর ১০-৪-১৭-৩, মৃত্যুঞ্জয় ৫-০-১৮-০, টিপু ৬-১-১৯-১, নাহিদুল ৪.৩-১-১৯-২)

বরিশাল ২য় ইনিংস:
১৮ ওভারে ৪৬/৩ (ফলো-অন) (আবু সায়েম ২৫, ইফতি ৪, ফজলে রাব্বি ২, সালমান ২*, আশরাফুল ০; আল আমিন ৪-৩-১-০, আশিকুর ৪-০-১২-০, মৃত্যুঞ্জয় ৫-০-২৮-২, টিপু ৩-২-১-০, নাহিদুল ২-১-৪-১)