ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল খুলনা বিভাগ। দারুণ এক সেঞ্চুরিতে সেটি এড়ালেন মইন খান। তবে পারলেন না দলের হার এড়াতে। বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে বড় জয়ই পেল খুলনা। তাদের মতো সিলেট বিভাগকেও বড় ব্যবধানে হারায় ঢাকা বিভাগ।
ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার সম্ভাবনা জাগান রাজশাহীর হয়ে খেলা মুশফিকুর রহিমও। কিন্তু ৩ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে। ১২ চারে ১৫৫ বলে ৯৭ রান করেন তিনি।
এবারের আসরে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে প্রথম দেখায় সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক। ২৪৬ বল ও ৩৫২ মিনিট স্থায়ী ইনিংসে ৬ চারে করেছিলেন ১১০ রান।
রাজশাহীর শহিদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে ১০ উইকেটে জিতেছে খুলনা। এবারের জাতীয় লিগে যা তাদের প্রথম জয়।
প্রথম ইনিংসে ৩১৫ রান করে বরিশালকে ১৪৫ রানে গুঁড়িয়ে দেয় খুলনা। প্রতিপক্ষকে পরে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠায় তারা। বরিশাল দ্বিতীয়ভাগে মইন ও সালমান হোসেনের নৈপুণ্যে ২৫৬ রান করে খুলনাকে ৮৯ রানের লক্ষ্য দেয়। অমিত মজুমদার ও হাসানুজ্জামানের ব্যাটে সহজেই এই রান তাড়া করে ফেলে খুলনা।
২ ছক্কা ও ৭ চারে ১২৩ বলে ১০২ রান করেন মইন। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে যা তার প্রথম সেঞ্চুরি। ৮ চারে ১৮৭ বলে ৭৭ রান করেন সালমান।
৩ উইকেটে ৪৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিন খেলতে নেমে দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে বরিশাল। ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন মইন ও সালমান। ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ১৭৫ রানের জুটি।
তিন ওভারের মধ্যে এই দুইজনের বিদায়ের পর আর বেশিদূর যেতে পারেনি বরিশাল।
খুলনার হয়ে ৩ উইকেট নেন আল-আমিন হোসেন। দুটি করে প্রাপ্তি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি, নাহিদুল ইসলাম ও জাওয়াদ রোয়েনের।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৭১ বলে ৫৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন হাসানুজ্জামান। ৫ চারে ৩৩ রানে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন অমিত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা ১ম ইনিংস: ৩১৫
বরিশাল ১ম ইনিংস: ১৪৫
বরিশাল ২য় ইনিংস: ৮০.২ ওভারে ২৫৬ (ফলো-অন) (আগের দিন ৪৬/৩) (সালমান ৭৭, আশরাফুল ১৩, সোহাগ ০, মইন ১০২, তানভির ১, রাব্বি ২, রুয়েল ০*; আলআমিন ১৪.২-৩-৬৪-৩, আশিকুর ১৪-১-৪০-০, মৃত্যুঞ্জয় ১১-০-৫১-২, টিপু ৩-২-১-০, নাহিদুল ২১-৪-৫৭-২, জাওয়াদ ১০-৩-১৭-২, ইমরুল ১-০-১-১)
খুলনা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৮৭) ২৮.২ ওভারে ৯০/০ (অমিত ৩৩*, হাসানুজ্জামান ৫৬*; তানভির ৯-৩-২৯-০, আশরাফুল ১০-২-৩০-০, মইন ৭.২-৩-২৩-০, ফজলে রাব্বি ২-০-৭-০)
ফল: খুলনা বিভাগ ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: নাহিদুল ইসলাম
ঢাকার বড় জয়
সিলেট একাডেমি মাঠে স্বাগতিকদের ৩৩৩ রানের হারিয়েছে ঢাকা। ৪৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়ে সিলেটকে তারা গুটিয়ে দিয়েছে ১৬১ রানে।
জাতীয় লিগে এবার পাঁচ ম্যাচের দুটি জিতেছে প্রথম স্তরের থাকা ঢাকা বিভাগ।
রান তাড়ায় সিলেটের হয়ে প্রথম চার ব্যাটসম্যানই যান দুই অঙ্কে। কিন্তু কেউই খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। ত্রিশ পার করতে পেরেছেন কেবল দুইজন। ১১ চারে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন তৌফিক খান।
ঢাকার হয়ে তিনটি করে শিকার ধরেন সুমন খান ও সালাউদ্দিন সাকিল। দুই উইকেট নেন রিপন মণ্ডল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ১ম ইনিংস: ১১৩
সিলেট ১ম ইনিংস: ৭৬
ঢাকা ২য় ইনিংস: ৪৫৭
সিলেট ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৯৫) ৫৩.৫ ওভারে ১৬১ (ইমতিয়াজ ১২, তৌফিক ৫৮, অমিত ১৫, জাকির ৩২, আলআমিন ১, গালিব ১৩, তারেক ২, শাহানুর ১২, এনামুল ৪, নাবিল ০*, আবু জায়েদ ০; সুমন ১৪-৪-৩১-৩, শাকিল ১৪.৫-৫২-৩, রিপন ৯-২-৩৩-২, নাজমুল ১১-৩-২৬-১, শুভাগত ৫-১-১৩-১)
ফল: ঢাকা বিভাগ ৩৩৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আব্দুল মজিদ
মুশফিকের ৯৭
শেষ দিনের রোমাঞ্চে রাজশাহী ও ঢাকা মেট্রোর মধ্যকার ম্যাচটি। কক্সবাজারের শেখ কালাম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৫৯ রান করেছে। তারা এগিয়ে ১৩৮ রানে।
প্রথম ইনিংসে ২৫২ রান করেছিল রাজশাহী। জবাবে ঢাকা মেট্রো ৩৭৩ রান করে লিড নেয় ১২১ রানের।
৭ উইকেটে ৩৬৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে মেট্রো। আর ৬ রান যোগ করতেই শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে ৩০ রানে ২ উইকেট হারায় রাজশাহী। তৃতীয় উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়েন জহুরুল ইসলাম ও সাব্বির রহমান। ২ চারে ৩৪ রান করে বিদায় নেন জহুরুল। সাব্বির আউট হন ৫ চারে ৪২ রান করে।
এরপর এক প্রান্ত ধরে রেখে দলকে টানেন মুশফিক। দিন শেষের তিন ওভার আগে আমিনুল ইসলামের বলে ক্যাচ আউট হয়ে যান তিনি ৯৭ রানে।
২০ রান করে অপরাজিত আছেন সানজামুল ইসলাম। উইকেটে তার সঙ্গী শফিকুল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ২৫২
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৯১.২ ওভারে ৩৭৩ (আগের দিন ৩৬৭/৭) (আমিনুল ৮০, কাজী অনিক ০, রাকিবুল ৪*, স্বাধীন ০; নাহিদ ১৩-১-৭৬-৫, সানজামুল ২৯-৫-১১৩-১, শফিকুল ১৫.২-১-৫৩-৩, ফরহাদ ১৭-৩-৪৯-১, পায়েল ১৪-১-৬২-০, সাব্বির ৩-০-১৬-০)
রাজশাহী ২য় ইনিংস: ৭৭ ওভারে ২৫৯/৭ (জহুরুল ৩৪, জুনায়েদ ১, তানজিদ ৯, সাব্বির ৪২, মুশফিক ৯৭, প্রীতম ৩১, ফরহাদ ১৩, সানজামুল ২০*, শফিকুল ০*; আবু হায়দার ১৬-২-৬০-২, শরিফউল্লাহ ২০-৪-৫২-১, রাকিবুল ২২-৩-৫১-১, কাজী অনিক ১০-০-৪৮-২, স্বাধীন ৬-১-৩৩-০, আমিনুল ৩-০-১১-০)
পিনাকের ১০৩, সৈকতের ৭৮
প্রথম ইনিংসে ঠিক ১০০ রানে গুটিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম বিভাগ ঘুরে দাঁড়িয়েছে দ্বিতীয়ভাগে। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে তৃতীয় দিন শেষ করেছে তারা ৪ উইকেটে ২২২ রান নিয়ে। ৩৬৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করা রংপুরের চেয়ে এখনও ৪১ রানে পিছিয়ে তারা।
দ্বিতীয় ইনিংসে চট্টগ্রামকে দারুণ শুরু এনে দেন পিনাক ঘোষ ও সৈকত আলি। উদ্বোধনী জুটিতে দুইজনে গড়েন ১৭৪ রানের জুটি। ২ ছক্কা ও ৮ চারে ৭৮ রান করা সৈকতের বিদায়ে ভাঙে তাদের প্রতিরোধ।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পঞ্চম সেঞ্চুরি করে আর বেশিক্ষণ টিকেননি পিনাকও। ১০ চারে ১০৩ রান করে আউট হন তিনি নাসির হোসেনের বলে। এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারের বলেই ফেরেন পারভেজ হোসেন। পরের ওভারেই বিদায় নেন শাহাদাত হোসেন দিপু।
চট্টগ্রামের সামনে এখন ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১০০
রংপুর ১ম ইনিংস: ৩৬৩/৭ (ডিক্লে.)
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৯৩ ওভারে ২২২/৪ (পিনাক ১০৩, সৈকত ৭৮, পারভেজ ২৩, দীপু ৯, মুরাদ ০*, ইরফান ৩*; রবিউল ১০-৩-৩৭-০, মুশফিক ১৭-১-৪৯-১, আরিফুল ৪-১-১১-০, মাহমুদুল ৮-২-১৩-০, হাশিম ১৬-৬-২৬-১, নাইম ৯-৪-৯-০, শুভ ৮-০-২৩-০, নাসির ১৯-৬-৩৭-২, মামুন ২-১-১২-০)