আগ্রাসী ব্যাটিং-বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের উড়িয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল ক্যারিবিয়ানরা।
Published : 28 Aug 2024, 10:55 AM
স্টাম্পের বাইরের বলটিকে কাভারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করলেন শেই হোপ। ম্যাচ ও সিরিজ শেষ হলো ছক্কায়। সিরিজজুড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে দাপট, তা মিশে থাকল সিরিজের শেষ বলটিতেও। ব্যাটে-বলে ক্যারিবিয়ানদের আগ্রাসী পারফরম্যান্সে পাত্তাই পেল না দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজের শেষ ম্যাচে বৃষ্টিবিঘ্নিত লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ত্রিনিদাদে মঙ্গলবার বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি শুরু হয় ঘণ্টখানেক দেরিতে। পরে পঞ্চম ওভারে আরেক দফা বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে আরও ৭০ মিনিট। ম্যাচ নেমে আসে ১৩ ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকা করতে পারে ১০৮ রান। ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধদিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ ওভারে ১১৬। জয়ের জন্য তাদের লাগে স্রেফ ৯.২ ওভার।
নিয়মিত অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল এ দিন ছিলেন বিশ্রামে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নেতৃত্ব দেন রোস্টন চেইস। আগেই সিরিজ জিতে যাওয়া দলটি পরিবর্তন আনে আরও দুটি। তবু জিততে সমস্যা হয়নি।
দুই দলের সবশেষ ১০ টি-টোয়েন্টির আটটিই জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই জয়ের একটি ছিল গত বিশ্বকাপে, রোমাঞ্চকর যে ম্যাচ হেরে ছিটকে পড়ে ক্যারিবিয়ানরা।
ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামের উইকেট ছিল একটু মন্থর। বল গ্রিপ করেছে উইকেটে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম তিন ওভারে রান আসে কেবল সাত।
চতুর্থ ওভারে রায়ান রিকলটনের চার ও ছক্কায় একটু বাড়ে রানের গতি। পরের ওভারে ছক্কা মারেন রিজা হেনড্রিকস। ওই ওভারেই নামে বৃষ্টি।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হতেই বিদায় নেন হেনড্রিকস। একটি ছক্কা মারলেও ৯ রান করতে ২০ বল খেলেন তিনি।
দুটি করেছক্কা ও চার মারলেও রিকলটনের ২৭ রান আসে ২৪ বলে। তিনে নেমে অধিনায়ক এইডেন মার্করাম করেন ১২ বলে ২১। দুজনকে একই ওভারে ফেরান রোমারিও শেফার্ড।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে সম্মানজনক রান এনে দেন মূলত ট্রিস্টান স্টাবস। সিরিজে তাদের সেরা ব্যাটসম্যান জ্বলে ওঠেন এ দিনও। পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় ১৫ বলে ৪০ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটসম্যান।
দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ তিন ওভারে তোলে ৪১ রান।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারে আলিক আথানেজকে হারায় ক্যারিবিয়ানরা। তবে তাদের ব্যাটিংয়ের ধরনের তাতে বদল আসেনি। নিকোলান পুরান ক্রিজে গিয়ে শুরু করেন প্রথম বলে ছক্কায়।
উইকেট ততক্ষণে একটু ভালো হয়ে উঠেছে। চার-ছক্কার ঝড় চলতে থাকে। চার ছক্কায় ১৩ বলে ৩৫ রান করে বিদায় নেন পুরান। চার ওভারের আগেই ৬০ রান ততক্ষণে হয়ে গেছে দলের।
পরের সময়টায় শেই হোপ ও শিমরন হেটমায়ার একই গতিতে এগিয়ে দ্রুতই শেষ করে দেন ম্যাচ। চার ছক্কায় ২৪ বলে ৪২ করে অপরাজিত থাকে হোপ। গত ডিসেম্বরের পর প্রথম খেলতে নেমে হেটমায়ার অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ৩১ করে।
কার্যকর বোলিংয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যান অব দা ম্যাচ হন শেফার্ড। ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে সিরিজের সেরা হোপ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩ ওভারে ১০৮/৪ (রিকলটন ২৭, হেনড্রিকস ৯, মার্করাম ২০, স্টাবস ৪০*, স্মিথ ৬*, মুল্ডার ১*; আকিল ৩-০-১১-১, ফোর্ড ৩-০-২৮-১, চেইস ২-১-১১-০, মোটি ২-০-২৩-০, শেফার্ড ২-০-১৪-২, ম্যাককয় ১-০-১৭-০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: (লক্ষ্য ১৩ ওভারে ১১৬) ৯.২ ওভারে ১১৬/২ (আথানেজ ১, হোপ ৪২*, পুরান ৩৫, হেটমায়ার ৩১**; ফোরটান ১-০-৮-১, উইলিয়ামস ২-০-২০-০, মাফাকা ২-০-৩৪-০, বার্টম্যান ২-০-৩২-১, ক্রুগার ২.২-০-২১-৩)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রোমারিও শেফার্ড।
ম্যান অব দা সিরিজ: শেই হোপ।