পাকিস্তান-ইংল্যান্ড
মুলতান টেস্টে শাফিক ও মাসুদের পর সেঞ্চুরি করেছেন সালমান আলি আঘা।
Published : 08 Oct 2024, 08:04 PM
আবদুল্লাহ শাফিক ও শান মাসুদের পর ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন সালমান আলি আঘা। দুই সতীর্থের মতো তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেলেন তিনিও। সঙ্গে সাউদ শাকিলের আশি ছোঁয়া ইনিংসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রানের পাহাড় গড়ল পাকিস্তান। জ্যাক ক্রলির ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে জবাবটা ভালোই দিচ্ছে ইংলিশরা।
মুলতান টেস্টে মঙ্গলবার ৫৫৬ রানে থামে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস। অধিনায়ক অলি পোপকে হারিয়ে ৯৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ইংল্যান্ড। ৪৬০ রানে পিছিয়ে আছে তারা।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১১ চারে ৬৪ বলে ৬৪ রান করে অপরাজিত আছেন চোট কাটিয়ে দলে ফেরা ক্রলি। ২ চারে ৩২ রানে খেলছেন তারকা ব্যাটসম্যান জো রুট।
তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিতে ১০৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন সালমান। ১১৯ বলের ইনিংসে ৩ ছক্কার সঙ্গে ১০ চার মারেন তিনি। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি পাননি সাউদ শাকিল। ৮ চারে ৮২ রান করে ফেরেন তিনি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এনিয়ে চতুর্থবার একই ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেন পাকিস্তানের তিন ব্যাটসম্যান। এর আগে এমন কিছু দেখা গিয়েছিল ১৯৭১ সালে বার্মিংহ্যামে, ১৯৮৭ সালে ওভালে ও ২০২২ সালে রাওয়ালপিণ্ডিতে।
মুলতানের উইকেট থেকে এদিনও তেমন সহায়তা পাননি বোলাররা। ব্যাটিং স্বর্গে ৪ উইকেটে ৩২৮ রান নিয়ে খেলতে নামা পাকিস্তান প্রথম ঘণ্টায় হারায়নি কোনো উইকেট। ‘নাইটওয়াচম্যান’ নাসিম শাহকে নিয়ে দলের রান বাড়ান শাকিল।
৩ ছক্কা ও ১ চারে ৩৩ রান করা নাসিমকে ফিরিয়ে টেস্টে প্রথম উইকেটের স্বাদ নেন অভিষিক্ত ব্রাইডন কার্স। ভাঙে ৬৪ রানের জুটি। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে রানের খাতা খুলতে দেননি জ্যাক লিচ।
দ্রুত পাকিস্তানের আরেকটি উইকেট নেওয়ার সুযোগ পায় ইংল্যান্ড। কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে পারেনি তারা। লিচের বলে লং-অফে সালমানের ক্যাচ দুই দফার চেষ্টায় মুঠোয় জমান ক্রিস ওকস। প্রথম দফায় বল ধরে বাউন্ডারির বাইরে চলে যান তিনি। আবার ভেতরে ঢুকে ক্যাচ ধরার আগ মুহূর্তে বাউন্ডারির বাইরে তার পা সামান্য লেগে থাকায় ছক্কা দেন আম্পায়ার।
পরের বলেই লিচকে আরেকটি ছক্কায় ওড়ান সালমান। জমে ওঠে শাকিলের সঙ্গে তার জুটি। তাদের ব্যাটে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ যুগলবন্দি পায় পাকিস্তান। শোয়েব বাশিরের স্পিনে সেঞ্চুরির পথে থাকা শাকিল স্লিপে ধরা পড়লে ভাঙে ৫৭ রানের জুটি।
আমের জামাল দ্রুত বিদায় নেওয়ার পর সালমানকে দারুণ সঙ্গে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। সাবধানী ব্যাটিংয়ে এক প্রান্ত আগলে রাখেন এই পেসার। আরেক প্রান্তে দ্রুত রান তুলতে থাকেন সালমান। তাদের ৮৫ রানের জুটিতে অগ্রণী ছিলেন আট নম্বরে নামা এই ব্যাটসম্যান।
৭১ বলে ফিফটি করা সালমানের সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে বল লাগে আর কেবল ৩৭টি। গত বছরের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেছিলেন তিনি। এরপর তিন ফিফটির পর পেলেন আরেকটি শতকের দেখা।
সালমান সেঞ্চুরি ছোঁয়ার এক বল পরই আফ্রিদিকে বোল্ড করে দেন লিচ। ১ ছক্কা ও ২ চারে ৪৯ বলে ২৬ রান করেন আফ্রিদি। আবরারকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দেন রুট।
ফিল্ডিংয়ের সময় বেন ডাকেট আঙুলে চোট পাওয়ায় টেস্টে প্রথমবারের মতো ওপেন করতে নামেন পোপ। কিন্তু শূন্য রানের তেতো স্বাদ পেতে হয় তাকে। নাসিম শাহর বলে মিডউইকেটে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে ফেরান জামাল।
শুরুর ওই ধাক্কা সফরকারীরা সামাল দেয় ক্রলি ও রুটের ব্যাটে। দলে ফেরা ক্রলি পাল্টা আক্রমণে দ্রুত বাড়াতে থাকেন রান। আরেক প্রান্তে নিজের মতো খেলে যান রুট।
৫৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ক্রলি। রুটের সঙ্গে ৯২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৪৯ ওভারে ৫৫৬ (আগের দিন ৩২৮/৪) (শাকিল ৮২, নাসিম ৩৩, রিজওয়ান ০, সালমান ১০৪*, জামাল ৭, আফ্রিদি ২৬, আবরার ৩; ওকস ২৩-৫-৬৯-১, অ্যাটকিনসন ২৫-৫-৯৯-২, কার্স ২২-৩-৭৪-২, বাশির ৩২-৩-১২৪-১, লিচ ৪০-৫-১৬০-৩, রুট ৭-০-২৫-১)
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২০ ওভারে ৯৬/১ (ক্রলি ৬৪*, পোপ ০, রুট ৩২*; আফ্রিদি ৬-১-২৪-০, নাসিম ৭-০-২৯-১, আবরার ৪-০-৩১-০, জামাল ৩-০-১২-০)